আওয়ামী লীগ পালিয়ে গেলেও ওদের ভূত-প্রেতাত্মারা এখনও পালায়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, হাসিনার মন্ত্রী-টন্ত্রীরা কোথায়? ওরা আজ পালিয়েছে। আমরা কি পালিয়েছি? বেগম জিয়া কি পালিয়েছেন? ওরা পালিয়েছে। তাদেরকে পালিয়ে চলে যেতে হয়েছে। কেন? আমাদের ছাত্র সমাজের আন্দোলনের মুখে তারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। আওয়ামী লীগ পালিয়ে চলে গেছে, কিন্তু ওদের ভূত-প্রেতাত্মারা এখনও পালায়নি। তারা আবারও চেষ্টা করবে। কী করে তারা ফিরে আসতে পারবে সেই চেষ্টা তারা আবার করবে। আমরা ১৫ থেকে ১৬ বছর ধরে অত্যাচারিত হয়েছি। আমাদের প্রায় ৭০০ মানুষকে গুম করে দিয়েছে। লাকসামের পারভেজ, হিরুকে গুম করে দিয়েছে। হাসিনা সরকার ঢাকায় প্রায় ৭০০ লোককে গুলি করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের কয়েক হাজার লোককে গুলি করে হত্যা করেছে আওয়ামী লীগ। এমনকি এই আন্দোলনে তারা রাস্তার মধ্যে আমাদের ছেলে-মেয়েদের পাখির মতো গুলি করে হত্যা করেছে। এদের হাত থেকে আমরা এখন মুক্ত হলেও এই যে স্বাধীনতা তা সুসংহত করতে হবে। এটাকে এখন জোরদার করতে হবে। ছাত্র-জনতার যে ঐক্য তৈরি হয়েছে, সেই ঐক্যকে আরও শক্ত করে ধরতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা এখানে কোনো নির্বাচনের ক্যাম্পেইন করতে আসি নাই। আমরা এসেছি আমাদের অনেক ভাইবোন বন্যায় কষ্ট পেয়েছেন, দুর্গত হয়েছেন, তাদের পাশে দাঁড়াবার জন্য। বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা এখানে এসেছি। আজকে আমরা কোনো নির্বাচনের কথা বলব না, আমরা বাংলাদেশের কথা বলতে চাই। যে ফ্যাসিবাদ ফিরে গেছে তারা যাতে আবার ফিরে আসতে না পারে। সেজন্য আমাদেরকে বর্তমানে যে সরকার আছে, তাদেরকে সহযোগিতা করতে হবে। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই স্বাধীনতাকে সুসংহত করতে হবে। আজকে ওরা চলে গেছে বলে আমরা একেবারে স্থানীয় হয়ে গেছি, যা কিছু করতে পারি, না। যা খুশি তা করতে গেলে আমাদের এই স্বাধীনতা থাকবে না। ওরা আবার ফিরে আসবে। আবার আমাদের ওপর জুলুম নির্যাতন শুরু করবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই মুহূর্তে আমরা যেটা চিন্তা করব সেটা হচ্ছে আমরা এই সরকারকে সহযোগিতা করব। আমাদের পুলিশ বাহিনীকে সহযোগিতা করব। প্রশাসনকে সহযোগিতা করব। ঐক্য দৃঢ় রেখে একসঙ্গে কাজ করব। আমরা ৩১ দফা দিয়েছিলাম সংস্কার করার জন্য। এখন যে রাষ্ট্র ব্যবস্থা আছে এভাবে রাষ্ট্র চলতে পারে না। এজন্য আমাদের অর্থনীতিকে ঢেলে সাজাতে হবে। বিচার বিভাগকে ঢেলে সাজাতে হবে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের পুলিশ প্রশাসনকে সাজাতে হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, বিএনপির কুমিল্লা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, বিএনপির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম প্রমুখ।