• ঢাকা রোববার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
logo
নোয়াখালীর ইউপি চেয়ারম্যান চট্রগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার
টিকটক বানানোর কথা বলে কিশোরকে হাত-পা বেঁধে পানিতে ফেলে হত্যা
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় টিকটক বানানোর কথা বলে এক কিশোরকে মুখে কস্টেপ পেঁচিয়ে হাত-পা বেঁধে দীঘির পানিতে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুই কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।   সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার কবিরহাট পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বঙ্গের দিঘী থেকে নিহত কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত ইয়াসিন আরাফাত (১৫) উপজেলার ঘোষবাগ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তমপুর লামছি গ্রামের ছোবু ভূঁঞা বাড়ির মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের ছেলে।  জানা যায়, গত ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুরের দিকে ইয়াসিনকে মুখে কসটেপ পেঁচিয়ে, হাত-পা বেঁধে উপজেলার কবিরহাট পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বঙ্গের দীঘিতে ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয়।     আটককৃত কিশোররা হলেন- উপজেলার ঘোষবাগ ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডের উত্তমপুর লামছি গ্রামের মহিন উদ্দিনের ছেলে আমির হোসেন জিহাদ (১৫) ও কবিরহাট পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর অজি উল্যার ছেলে ইব্রাহীম খলিল আকিল (১৭)।   স্থানীয়রা জানান, আরাফাতকে কিছু ছেলের সঙ্গে চলাফেরা করতে বারণ করে তার চাচাতো ভাই আমির হোসেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আরাফাত তাকে মারধর করে। পরে আমির আরফাতকে হত্যার কৌশল খুঁজতে থাকে। পরবর্তীতে আরেক বন্ধু আকিলের সঙ্গে আমির পরামর্শ করে আরাফাতকে গত বৃহস্পতিবার সকালের দিকে টিকটিক বানানোর কথা বলে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর উপজেলার কবিরহাট পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড বঙ্গের দিঘীর পাড়ে নিয়ে টিকটক বানানোর কথা বলে কৌশলে তার মুখে কসটেপ পেঁচিয়ে, হাত-পা বেঁধে দীঘির পানিতে ফেলে দিয়ে হত্যা করে চলে যায়।   এ বিষয়ে নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোর্তাহীন বিল্লাহ বলেন, নিখোঁজের তিনদিন পর এ ঘটনায় নিহত কিশোরের মা শাহানারা আক্তার কবিরহাট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডির আলোকে ঘটনার ১১ দিন পর পুলিশ অভিযুক্ত ২ কিশোরদের আটক করে। একপর্যায়ে তাদের তথ্যের ভিত্তিতে মরদেহ উদ্ধার এবং হত্যার রহস্য উদঘাটন করে। আরটিভি/এমকে 
সিঁধ কেটে স্বর্ণালংকার চুরি, বৃদ্ধার পা বাঁধা মরদেহ মিলল পুকুরে
কবিরহাটে সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা
কবিরহাটে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার পেল ৩৫০০ পরিবার
নোয়াখালীতে পুকুরে ডুবে ২ ভাইয়ের মৃত্যু
স্ত্রীর মৃত্যুর এক ঘণ্টা পর চলে গেলেন স্বামীও
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় স্ত্রীর মৃত্যুর এক ঘণ্টার পর স্বামীর মৃত্যু হয়েছে।  বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।  এর আগে, মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতে মারা যান শামসুর নাহার (৪৯)। এর এক ঘণ্টা পর মারা যান স্বামী আমিন উল্যাহ (৬২)।   মৃত আমিন উল্যাহ উপজেলার ৫নং চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের ৬নম্বর ওয়ার্ডের উপদ্দি লামছি গ্রামের মিন্নত আলী বেপারী বাড়ির মৃত মকবুল আহমদের ছেলে। তিনি চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের ৬নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) জসিম উদ্দিন মাস্টার বলেন, গ্রাম পুলিশ আমিনের স্ত্রী শামসুর নাহার দীর্ঘদিন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরপর চিকিৎসক শামসুর নাহারকে বাড়িতে পাঠালে মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে নিজ বাড়িতে তার ‍মৃত্যু হয়।  এর কিছুক্ষণ পর স্ত্রীর শোকে স্ট্রোক করেন স্বামী আমিন উল্যাহ। পরে রাত ১১টার দিকে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক ছিলেন।
দাঁত ব্রাশ করতে গিয়ে পানিতে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় পুকুরে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (২৭ মার্চ) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের রামেশ্বপুর গ্রামের ছরআলী মাঝি বাড়িতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া শিশুরা হলেন বিবি ফাতেমা বেগম (৭) ও তার ছোট ভাই আবিদ হোসেন (৪)। তারা একই গ্রামের ছরআলী মাঝি বাড়ির আব্দুল হাইয়ের সন্তান।   এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন চাপরাশিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন টিটু।   স্থানীয়রা জানান, দুই ভাই-বোন সকাল ৮টার দিকে ঘরের পাশে পুকুরে দাঁত ব্রাশ করতে যায়। এ সময় হাত-মুখ ধোয়ার সময় একজন পুকুরে পড়ে গেলে অন্যজন তাকে উদ্ধার করতে পানিতে নামে। পরে দুজনই পানিতে ডুবে যায়। একপর্যায়ে পরিবারের সদস্যরা দুজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, হাত-মুখ ধোয়ার সময় পানিতে পড়ে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। পরে তাদের মরদেহ পরিবারের লোকজন নিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা নেওয়া হবে।
শারীরিক আকৃতি দমাতে পারেনি ৩ ফুট ১০ ইঞ্চির সোনিয়াকে
কিছু দুঃখ মানুষকে হতাশায় তলিয়ে দেয়। শারীরিক বাধা এমনি এক কষ্ট। আবার এমন প্রতিবন্ধকতাই কারও জীবনে শক্তি হয়ে অনুপ্রেরণা দেয়। এমনি এক শিক্ষার্থী নোয়াখালীর কবিরহাট সরকারি কলেজের জান্নাতুল ফেরদাউস সোনিয়া। পড়ছেন দ্বাদশ শ্রেণির দ্বিতীয় বর্ষের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে। সোনিয়া দেখতে শিশুর মত হলেও তার বয়স (২১)। লম্বায় তিন ফুট ১০ ইঞ্চি। বয়স বাড়লেও তার শারীরিক গঠন বাড়েনি। শরীরের গঠন শিশুদের মতো দেখায়।  তিন বোন এক ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় সোনিয়া। ছোটবেলা থেকেই সে পড়াশোনায় বেশ আগ্রহী ছিল। ২০১৬ সালের ঘটনা। ছোট বোন জান্নাতুল নাঈমের সাথে স্থানীয় রাজুরগাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তখন পঞ্চম শ্রেণি ছাত্রী সোনিয়া। যখন ছোট বোনের শারীরিক গঠন বাড়তে থাকে, তখনই তার শারীরিক অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে। এরপর শিক্ষাঙ্গন থেকে শুরু করে রাস্তাঘাটে তাকে পড়তে হতো কটু কথার বেড়াজালে। রাস্তাঘাটে হয়রানির বিরুদ্ধে তার লড়াই ছিল ব্যতিক্রমী। সে মানুষের কোনো উপহাস বা টিপ্পনী কখনোই কানে লাগাননি। কোনো কটু কথা তাকে দমাতে পারেনি। সোনিয়া নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের সগির ফাইক গ্রামের জমিদার বাড়ির নুরুল হকের মেয়ে।      এভাবে বাড়ির পাশের প্রাথমিকের গন্ডি শেষ করে ২০২২ সালে স্থানীয় মিয়ার হাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৩.৫৬ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। এরপর কলেজে ভর্তি হতে বাধা হয়ে দাঁড়ান মা রহিমা খাতুন। একাধারে তিন দিন কান্নার পর মেয়ের প্রবল ইচ্ছার কাছে হার মানেন মা। দিনমজুর বাবার একান্ত সহযোগিতায় কলেজে ভর্তি হন সোনিয়া। এখন বাড়ি থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে কলেজে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছেন। স্বপ্ন দেখেন প্রতিবন্ধকতাকে ছিন্ন করে একজন ব্যাংকার হয়ে পরিবারের পাশে দাঁড়াবেন। কিন্ত দিনমজুর বাবা পরপর দু’বার হার্ট অ্যাটাক করে অসুস্থ হয়ে পড়ায় সোনিয়ার উচ্চ শিক্ষা অর্জনের স্বপ্ন ভেস্তে যেতে বসেছে।   জান্নাতুল ফেরদাউস সোনিয়া বলেন, আমার বাবা একজন দিনমজুর, পরিবারে ছিল আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য। বাবা পরপর দু’বার স্ট্রোক করার কারণে পরিবারে অভাব অনটন দেখা দেয়। এতে আমার পড়ালেখার খচর এখন বহন করা পরিবারের পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমার স্বপ্ন পড়ালেখা শেষ করে একজন ব্যাংকার হওয়া। আমি চাই সরকার ও সমাজের বিত্তবান মানুষ আমার পাশে দাঁড়াক।   মা রহিমা খাতুন বলেন, আমার বড় কোনো ছেলে নেই। আমার মেয়ে যেন তার পড়ালেখা আরেকটু চালিয়ে যেতে পারে। সরকার ও বিত্তবান মানুষের সহযোগিতায় আমার মেয়ে যেন তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারে। এমনটাই প্রত্যাশা করেন তিনি।     মামা জাকির হোসাইন বলেন, সোনিয়া আমার বড় বোনের মেয়ে। সে ছোটবেলা থেকে অনেক কষ্ট করে এ পর্যন্ত এসেছে। আর্থিক সংকটে পড়ে তার লেখা পড়া এ পর্যন্ত এসে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।    নোয়াখালীর কবিরহাট সরকারি কলেজের প্রভাষক মোহাম্মদ নূরুল হক মিলন বলেন, সোনিয়া আমাদের একজন নিয়মিত ছাত্রী। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও সে পড়াশোনা করে আসছে। এটা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। সকল ছাত্রছাত্রীদের জন্য এটা অনুকরণীয় বিষয়।   কবিরহাট সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বলেন, এ অবস্থায় সোনিয়ার যে উদ্যম, তা কলেজের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে। তার উচ্চ শিক্ষার সুবিধার জন্য যদি সম্ভব হয় আমি আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকেও সর্বাত্মক সাহায্য করার চেষ্টা করব। একই সঙ্গে আমি আহ্বান জানাই সমাজের হৃদয়বান, বিত্তবান মানুষ যেন তার পাশে দাঁড়ায়।       
নোয়াখালীতে রোহিঙ্গা তরুণ আটক
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলা থেকে এক রোহিঙ্গা তরুণকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয়রা।  আটক ফয়েজুল ইসলাম (২২) কক্সবাজার উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে।  সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরের দিকে উপজেলার বাটইয়া ইউনিয়নের ভূঞারহাট বাজার থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে তাকে কবিরহাট থানায় হস্তান্তর করা হয়।  পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোহিঙ্গা তরুণ ফয়েজুল কক্সবাজারের উখিয়া থেকে প্রথমে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে আসেন। পরবর্তী সময়ে কবিরহাট উপজেলার ভূঞারহাট বাজারে আসেন। স্থানীয় লোকজন তাকে বাজারে ঘোরাফেরা করতে দেখে সন্দেহ হলে আটক করে। তাৎক্ষণিক সোমবার দুপুরের দিকে খবর পেয়ে পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।    কবিরহাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী তোবারক হোসেন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে আটক তরুণ নিজেকে রোহিঙ্গা শরণার্থী বলে স্বীকার করেন। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। রোহিঙ্গা তরুণকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে।  
প্রতিবেশীর বিষে প্রাণ গেল ৯ হাঁসের 
নোয়াখালীর কবিরহাটে পূর্বশত্রুতার জের ধরে ধান খেতে কীটনাশক বিষ প্রয়োগ করে ৯টি হাঁস মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ভুক্তভোগী নারী এ ঘটনায় কবিরহাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।  এর আগে, বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার ধানশালিক ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে চর গুল্লাখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।    ভুক্তভোগী রোওশন আরার লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা ধানশালিক ইউনিয়নের লামছি প্রসাদ গ্রামের মো. মাহবুল (৬৫), আবদুল হক (৩৫), আবুল বাসার (৩০)। তারা তার পাশের বাড়ির প্রতিবেশী। ওই নারী ছোট পরিসরে কিছু হাঁস, মুরগি পালন করে নিজের জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু ব্যক্তিগত ক্রোধের কারণে প্রতিবেশীরা তাকে না জানিয়ে তাদের ধানের জমিতে বিষাক্ত কীটনাশক প্রয়োগ করেন। বৃহস্পতিবার সকালে ৯টি হাঁস তাদের জমিতে পানি খাওয়ার জন্য গেলে আকস্মিক বিষক্রিয়ায় সঙ্গে সঙ্গে ৫টি হাঁস মারা যায়। আরও ৪টি হাঁস মারা যাওয়ার উপক্রম হলে জবাই করে দেন ওই গৃহবধূ।  কবিরহাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনির হোসেন বলেন, ভুক্তভোগী নারী মৃত ৯টি হাঁস থানায় নিয়ে আসেন। ওসি সাহেব হাঁসগুলো দেখে মাটিতে পুঁতে ফেলার জন্য নির্দেশ দেন। তাৎক্ষণিক একটি লিখিত অভিযোগ নেওয়া হয়েছে। অভিযোগের আলোকে তদন্ত করে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  
আত্মগোপনে গিয়ে অপহরণ নাটক, অতঃপর...
আত্মগোপনে গিয়ে অপহরণের নাটক সাজিয়ে প্রতারণার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে নোয়াখালী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।  গ্রেপ্তারকৃত কথিত ভিকটিমের নাম শেরআলী (৩২)। সে জেলার কবিরহাট উপজেলার নলুয়া গ্রামের সামছুদ্দিনের ছেলে।   সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে নোয়াখালী গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে, গতকাল রোববার রাত ৯টার দিকে কক্সবাজার পৌর বাস টার্মিনালের মারছা বাস কাউন্টারের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।     খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অপহরণের নাটক সাজিয়ে ভিকটিম নিজেই আত্মগোপনে ছিলেন। এরপর ভিকটিম তার চাচাকে দিয়ে অপহরণ মামলা দায়ের করান। পুলিশ জানায়, জেলার হাতিয়া বাজার এলাকার মোবারকের (৩২) সঙ্গে শেরআলী চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকায় একই সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালাতেন। সেই সুবাদে শেরআলীর সঙ্গে ওস্তাদ সাগরিদ সম্পর্ক গড়ে ওঠে মোবারকের। ২০২২ সালের ২২ জুলাই মোবারক মোটরসাইকেল ক্রয় করতে শেরআলীকে নিয়ে চট্টগ্রাম কাপ্তাই রাস্তার মাথাধীন মৌলভীবাজার মোটরসাইকেল শোরুমে যান। মোবারক লুঙ্গি পরে যায় এবং কথিত ভিকটিম শেরআলী প্যান্ট পরে যাওয়ায় সে মোবারককে মোটরসাইকেল কেনার টাকা তার নিকট রাখার জন্য বললে মোবারক মোটরসাইকেল কেনার এক লাখ ২০ হাজার টাকা ও ১টি অ্যান্ড্রয়েট মোবাইল সেট শেরআলীর কাছে রাখতে দেন। পুলিশ আরও জানায়, মোবারক মোটরসাইকেল শোরুমে ঢুকে মোটরসাইকেল দরদাম করে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার জন্য ছবি ও ভোটার আইডি কার্ড প্রিন্ট করার জন্য অন্য দোকানে গেলে এ সুযোগে শেরআলী মোবারকের টাকা ও মোবাইল সেট নিয়ে পালিয়ে নিজ এলাকায় চলে আসেন। ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর মোবারক ও তার বন্ধু ইউসুফ নলুয়া জনতা বাজারে এসে উক্ত বিষয়ে স্থানীয় লোকজনকে জানালে সেখানে সালিশ বৈঠক হয়। সালিশে বিষয়টি অমীমাংসিত থাকায় স্থানীয় লোকজন বিষয়টি সমাধানের জন্য হাতিয়ার হরণী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আক্তার হোসেনের শরণাপন্ন হয়। একই দিন মোবারক ও শেরআলী হরণী ইউনিয়নের বয়ারচর বাজারে যায়। সেখানে মোবারক শেরআলীকে দোতলা বিল্ডিংঘরে রেখে চেয়ারম্যানকে আনতে গেলে ভিকটিম কৌশলে পালিয়ে যান। ভুক্তভোগীরা জানান, পরবর্তীতে তার চাচা দেলোয়ার হোসেন বিটু শেরআলী ও তার ছেলে মারুফ অপহরণ হয়েছে বলে দাবি করেন। তার সঙ্গে জায়গা-জমি নিয়ে পূর্ব বিরোধ থাকা শামছুল হক মাঝিসহ ওই এলাকার আরও ৯ জনের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ১২ জুলাই আদালতে অপহরণ মামলা দায়ের করেন তার চাচা। আদালতের নির্দেশে কবিরহাট থানায় উক্ত বিষয়ে নিয়মিত মামলা রুজু হয়। মামলাটি রুজু হওয়ার পর কবিরহাট থানা পুলিশ তদন্ত করে। পরবর্তীতে মামলার তদন্তভার ডিবি নোয়াখালীতে ন্যস্ত হয়।  জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, কথিত ভিকটিম শেরআলী পেশায় একজন ড্রাইভার। সে খুবই চতুর ও ধূর্ত প্রকৃতির। সে ঘনঘন মোবাইল সিম পরিবর্তন করায় তার সঠিক অবস্থান নির্ণয় করা কঠিন হয়ে পড়ছিল। তার মোবাইল নাম্বারের কললিস্ট পর্যালোচনায় দেখা যায়, সে কক্সবাজার, বান্দরবান, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জসহ একেক সময় একেক স্থানে অবস্থান করেছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কথিত ভিকটিম শেরআলীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিজ্ঞ আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে।