যেখানে দেশের শহরে আকাশ ছোঁয়া উড়াল সেতু আর ইট-পাথরের কাঠামোতে ঢেকে যাচ্ছে সব রাস্তা, সেখানে সোমেশ্বরী নদীর বুকে তৈরি হলো কাঠের সেতু। দীর্ঘদিন ধরে একটা সেতুর অভাবে নদীর এপার-ওপারের মানুষগুলো বয়ে বেড়াচ্ছিলেন অসহনীয় দুর্ভোগ। সে দুর্ভোগ অবসানে বানানো হয়েছে ২শ মিটার দীর্ঘ কাঠের সেতু।
রোববার দুপুরে অনাড়ম্বর এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সেতুটির দ্বার খুলে দেওয়া হয়। সেতুর ওপর দিয়ে এখন রিকশা, মোটরসাইকেল এমনকি চলবে ছোট গাড়িও। এতে বাড়বে ব্যবসা-বাণিজ্য, নিরাপদে স্কুলে যেতে পারবে শিক্ষার্থীরা।
নেত্রকোনার দুর্গাপুরের শিবগঞ্জ আর পৌরশহর দুর্গাপুর—এই দুই এলাকার মাঝে সোমেশ্বরী নদী যেন এক অদৃশ্য দেওয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। দিনের পর দিন মানুষজন ঝুঁকি নিয়ে নৌকা পারাপার করছিলেন। বৃষ্টি-বাদলে সেই দুর্ভোগ আরও বেড়ে যেত। স্কুলপড়ুয়া বাচ্চাদের জন্য নদী পেরোনো যেন একটা যুদ্ধ ছিল।
একাধিকবার দাবি জানানো হলেও এগিয়ে আসেনি বিগত সরকারের কোন জনপ্রতিনিধি কিংবা স্থানীয় প্রশাসন। এই বাস্তবতায় এগিয়ে আসেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তাঁর অর্থায়নেই তৈরি হয় এই কাঠের সেতু। এলাকাবাসীর মতে, এটা কোনো ছোট কাজ নয়। রিকশা, ভ্যান, মোটরসাইকেল—সবকিছুই পারাপারের উপযোগী করে গড়া এই সেতু এক কথায় দুর্গাপুরের মানুষের জন্য এক নতুন আশার আলো।
সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। তবে অনেকে বলছেন, কাঠের সেতুটা আপাতত সমস্যার সমাধান করলেও ভবিষ্যতে আরও টেকসই একটি সেতুর প্রয়োজন হবে। কিন্তু তার পরও এই সেতু যেন মানুষের হৃদয়ে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। এই সেতু দুর্গাপুরের মানুষের জীবনযাত্রায় নিয়ে আসবে আমূল পরিবর্তন, এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।
আরটিভি/এফআই