• ঢাকা শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১
logo
ছাত্র-জনতার তোপের মুখে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার 
জয়পুরহাটে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা থেকে খালাস পেলেন তারেক রহমান
জয়পুরহাটে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় খালাস পেয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।  বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) জয়পুরহাট চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শ্যাম সুন্দর রায় এ আদেশ দেন।  মামলা সূত্রে জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে লন্ডনে একটি সেমিনারে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একই বছরে ১৭ ডিসেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর ২০১৫ সালের ২৮ মে  জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক রেজা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে জয়পুরহাট সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার দীর্ঘ শুনানি শেষে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বিচারক তাকে অব্যাহতি দিয়ে মামলা খারিজ করে দেন। জয়পুরহাট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর শাহানুর রহমান শাহিন বলেন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে যে মামলা করেছিলেন ছাত্রলীগ নেতা তার কোনো ভিত্তি ছিল না। আদালতের ওপর বিগত স্বৈরাচার সরকার হস্তক্ষেপের কারণে এ মিথ্যা মামলার ন্যায় বিচার থেকে আমাদের বঞ্চিত করা হয়েছিল। আজ আদালত মামলাটি পর্যালোচনা করে এবং যার উপর ভিত্তি করে মামলাটি করা হয়েছিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। এজন্য বিজ্ঞ আদালত মিথ্যা মামলা থেকে খালাস দিয়েছেন। এ ব্যাপারে বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চন্দন বলেন, তারেক রহমানকে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে ধ্বংস করতে চেয়েছিল আওয়ামী লীগ। ছাত্র জনতার বিপ্লবের পর অর্জিত দ্বিতীয় স্বাধীনতায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই জয়পুরহাটে করা মিথ্যা মামলায় সম্পূর্ণ খালাস পেয়েছেন তারেক রহমান। এ দিকে রায় ঘোষণার পর আদালত চত্বরে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা আনন্দ মিছিল করেন। আরটিভি/এএএ/এআর 
পাঁচবিবি সীমান্তে পড়েছিল বৃদ্ধের মরদেহ
মায়ের স্বপ্ন পূরণে হাতির পিঠে চড়ে রাজকীয় বিয়ে
‘একটু সুখের বাজারে’ ১০০ টাকায় ব্যাগভর্তি বাজার
জুতার ভেতর মিলল ৫ স্বর্ণের বার
জয়পুরহাটে ছিনতাই হওয়া অটোরিকশা উদ্ধার, আটক ৩
জয়পুরহাটে ছিনতাই হওয়া ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উদ্ধারসহ ছিনতাই চক্রের ৩ সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ।  বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে নিজ সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান জয়পুরহাট পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব। তিনি জানান, অটোরিকশাটির চালক আব্দুর রাজ্জাক গত ৩ ডিসেম্বর রাতে জয়পুরহাট শহরের বাটারমোড়ে অবস্থান করছিলেন। এ সময় ছিনতাই চক্রের সদস্যরা ক্ষেতলাল উপজেলার মৌসুমি বাজারে যাওয়ার কথা বলে যাত্রী সেজে অটোরিকশাটিতে উঠেন। পথে তারা ফাঁসি তলা কুঠিপাড়া এলাকায় অটোরিকশাটির চালক আব্দুর রাজ্জাকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মারধর করে হাত-পা বেঁধে ফেলে রেখে অটোরিকশাটি নিয়ে পালিয়ে যান। পুলিশ সুপার আরও জানান, এ ঘটনায় অটোরিকশার মালিক বাদী হয়ে থানায় মামলা করলে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ছিনতাই হওয়া অটোরিকশসহ ছিনতাই চক্রের ৩ সদস্যকে আটক করা হয়।  আটক ছিনতাই চক্রের সদস্যরা জয়পুরহাট জেলাসহ পার্শ্ববর্তী নওগাঁ, বগুড়া ও দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় সংঘবদ্ধ হয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ছিনতাই করতো বলেও জানান পুলিশ সুপার।  আরটিভি/এএএ 
জয়পুরহাটে হত্যা মামলায় ৮ জনের যাবজ্জীবন 
জয়পুরহাটে কামাল হত্যা মামলায় ৮ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।  মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক নুরুল ইসলাম এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- জয়পুরহাটের সদরের তেঘর রেলগেট এলাকার মৃত তছির উদ্দীনের ছেলে সুজাউল ওরফে সেজাউল, মুজিবনগর এলাকার মৃত ময়নুদ্দিনের ছেলে রুবেল, পলি কাদোয়ার খোরশেদ আলমের ছেলে লম্বা বাবু, পূর্ব দেবীপুরের মৃত জোব্বার মন্ডলের ছেলে জিয়া, দেওয়ানপাড়ার হাসানের ছেলে মিজানুর রহমান ওরফে পিচ্চি জুয়েল, গৌরীপাড়ার শাহজাহান আলী মিস্ত্রীর ছেলে ফরিদুল ইসলাম কানা সবুজ, ওবাইদুল ইসলামের ছেলে রানা আহম্মেদ ও ইসলাম নগরের জালাল উদ্দিনের ছেলে মিঠুন। এদের মধ্যে সেজাউল, জিয়া, পিচ্চি জুয়েল ও কানা সবুজ পলাতক রয়েছেন। মামলার বিবরণে জানা গেছে, জয়পুরহাট সদর উপজেলার পূর্ব দেবীপুর গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে কামালের সাথে সেজাউলের এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জেরে আসামিরা তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ২০১৫ সালের ৩ অক্টোবর রাতে কামালকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তেঘর এলাকায় একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে কামালকে কুপিয়ে হত্যা করে আসামিরা। পরের দিন সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায় পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা করলে দীর্ঘ শুনানির পর আদালত আজ এ রায় দেন। আরটিভি/এমকে/এস
চলন্ত ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে যুবকের পা বিচ্ছিন্ন
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে পঞ্চগড়গামী ‘একতা এক্সপ্রেস’ ট্রেনে কাটা পড়ে সোহাগ সর্দার (২৭) নামে এক যুবকের বাঁ পা বিচ্ছিন্ন হয়েছে। একই সঙ্গে তার ডান হাতের আঙ্গুল কাটা পড়েছে।  বুধবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পাঁচবিবি রেলস্টেশন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সোহাগ মিয়া পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার কালামপুর গ্রামের জিয়াউর রহমানের ছেলে। তিনি পাঁচ বিবি হেলাল উদ্দিনের ইট ভাটায় শ্রমিকের কাজ করার জন্য ট্রেনে আসছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেস ট্রেন সাড়ে ৬টার দিকে পাঁচবিবি স্টেশনে যাত্রা বিরতি দেয়। সোহাগ সর্দার ও তার সঙ্গে থাকা মামাতো এক ভাইসহ আরও দুইজন ওই ট্রেনে এসেছিল। ট্রেনে যাত্রী বেশি ছিল। ট্রেন স্টেশনে বিরতি দিয়ে যাত্রা করার পর ট্রেন থেকে নিচে নামার পর দেখেন তার ব্যাগ ট্রেনের বগির ভিতরে। এ সময় দৌড়ে ট্রেনে উঠার পরই ট্রেনটি স্টেশন ছেড়ে যেতে লাগলে চলন্ত ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে সোহাগ মিয়া পিছলে নিচে পড়ে যান। এ সময় তার সঙ্গে থাকা মামাতো ভাইসহ আরও একজন তার পড়নের কাপড় ধরে টানতে থাকে। ততক্ষণে ট্রেনের ধাক্কায় তার মাথায় আঘাত লাগলে রেল লাইনের ওপর বাম পা ও এক হাতের আঙুল কেটে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। খবর পেয়ে পাঁচবিবি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। জয়পুরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডা. আবু মুনছুর মো. আব্দুল্লাহ বলেন, ওই ব্যক্তির ডান হাতের সবকটি আঙ্গুল ও বাঁ পা বিচ্ছিন্ন হয়েছে। তাকে অর্থোপেডিক চিকিৎসক দেখবেন।
জয়পুরহাটে জব ফেয়ারের মাধ্যমে প্রবাসী কর্মী নির্বাচন
জয়পুরহাটে সরকারিভাবে বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক অবহিতকরণ কর্মশালা ও জব ফেয়ার অনুষ্ঠিত হয়েছে।  বুধবার (২০ নভেম্বর) সকালে জয়পুরহাট কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এই কর্মশালা এবং জব ফেয়ারের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ ওভারসিজ এম্পলমেন্ট এন্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়াসেল) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সরকারিভাবে বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক কর্মশালায় জেলা প্রশাসক আফরোজা আকতার চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বোয়েসেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী। এসময় বোয়েসেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. শওকত আলী বলেন, বোয়াসেল নৈতিক নিরাপদ ও সাশ্রয়ী অভিবাসন নিশ্চিত করে। অন্যথায় অতিরিক্ত টাকা দিয়ে দালালের খপ্পরে পড়ে কেউ আমরা প্রবাসে যাব না। এতে আর্থিক এবং জীবনের ঝুঁকি থাকে।  কর্মশালায় ফেন্সি, বুলিসহ জেলার তিন শতাধিক বিদেশ গমনে ইচ্ছুক নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।  আরটিভি/এএএ   
জয়পুরহাটে এক ঘণ্টার পুলিশ সুপার শিক্ষার্থী রোজা
এক ঘণ্টার পুলিশ সুপার হলেন জয়পুরহাট মহাবিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আমিনা ইসলাম রোজা।   সোমরার (১৮ নভেম্বর) বেলা ১১টায় জয়পুরহাটের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহাবের কাছ থেকে তিনি ১ ঘণ্টার জন্য দায়িত্ব বুঝে নেন।  প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের ‘গার্লস টেকওভার’ কর্মসূচির আওতায় ‘ইয়েস বাংলাদেশের সহযোগিতায়’ ন্যাশনাল চিলড্রেন টাস্কফোর্সের (এনসিটিএফ) এর নারী নেতৃত্ব উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচির আওতায় এ দায়িত্ব প্রদান করা হয়। দায়িত্ব প্রদানকালে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহাব বলেন, আজকের শিশু আগামির প্রশাসক। একদিন এ শিশুরাই বড় চেয়ারে বসবে। তাদের বর্তমানের চিন্তা চেতনাগুলো ভবিষ্যতে কর্মজীবনে বাস্তবায়ন করবে। দায়িত্ব পেয়ে প্রতীকী এসপি রোজা জানান, ‘জয়পুরহাটে সড়কে যানজট, চাঁদাবাজি, কোচিং বানিজ্য, সাইবার ক্রাইমসহ নানা অপরাধ দমনে প্রস্তাবনা দেন। পুলিশ সুপার এসব বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন।’ শিক্ষার্থী রোজা আরও বলেন, নারীদের নিয়েই আমাদের সমাজকে এগিয়ে নিতে হবে। নারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। একঘন্টার দায়িত্ব শেষে রোজার হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন পুলিশ সুপার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইয়েস বাংলাদেশ এর ডিস্ট্রিক্ট ভলান্টিয়ার সালেহুর রহমান সজিব, শান্তনা পারভীন, জয়পুরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহেদ আল মামুনসহ অন্যান্যরা। আরটিভি/এমকে
নবান্ন উৎসবে কালাইয়ে মাছের মেলা
অগ্রহায়ণ মাস শুরুর সঙ্গে-সঙ্গে গ্রাম বাংলার পরিবেশে ফসল তোলার ধুম পড়ে যায়। নতুন ধান ঘরে তোলে কৃষকরা। শুরু হয় নবান্ন। কৃষিমুখী মানুষগুলোর মাঝে বইতে থাকে উৎসবের হাওয়া। যান্ত্রিক সময়ে এসব খুব একটা দেখা যায় না। তবু এখনও বহু গ্রামে টিকে আছে নবান্নের রীতি। এমনই ধারাবাহিকতা দেখা মিলে জয়পুরহাটের কালাই পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের পাঁচশিরা বাজারে নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে বসেছে মাছের মেলা।  সেখানে সুন্দর করে সাজানো কাতলা, রুই, মৃগেল, চিতল, ব্ল‍্যাককার্প, গ্রাসকার্প, কার্ফু, কালবাউশ, ব্রিগেড, সিলভার কার্পসহ হরেক রকমের মাছ। সেখানে ভোর থেকে বসেছে সারি সারি মাছের দোকান। চলছে হাঁকডাক ও দরদাম। ৫ কেজি থেকে শুরু করে ১৮ কেজি ওজনের বড় মাছ। মাছের আকার অনুযায়ী প্রতি কেজি মাছ ৩০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।  প্রতি বছরের ন্যায় এবারও রোববার (১৭ নভেম্বর) কালাই পৌরসভার পাঁচশিরা বাজারে নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে বসেছে মাছের মেলা। নবান্ন উৎসবে প্রতি বছর এখানে মাছের মেলা বসে। উপজেলার একটি পৌরসভা ও পাঁচটি ইউনিয়নের প্রায় ৯০-১০০টি গ্রামের মানুষ মেলায় অংশ নেন। উৎসবে প্রতি বাড়িতে মেয়ে জামাইসহ স্বজনদের আগে থেকে নিমন্ত্রণ করা হয়। দূর-দূরান্ত থেকেও লোকজন আসেন মেলায় মাছ কিনতে। এই মাছের মেলায় ক্রেতারা ব্যাপক উৎসাহের সঙ্গে কিনছেন কাতলা, রুই, মৃগেল, চিতল, ব্ল‍্যাককার্প, গ্রাসকার্প, কার্ফু, কালবাউশ, ব্রিগেড, সিলভার কার্পসহ হরেক রকমের মাছ। আবার এইসব মাছ দেখতে এসেছেন অনেকেই। তবে এই মাছের মেলায় শুধুই মাছ কেনার বিষয় নয়, আছে একধরনের জামাই-মেয়েদের কেনার প্রতিযোগিতা। কোন জামাই কত বড় মাছ কিনলেন, সেটাই আসল বিষয়। প্রতিযোগিতায় নীরব অংশগ্রহণ করে শ্বশুরেরা।  এ অগ্রহায়ণ মাসে নবান্ন উৎসব উপলক্ষে বসেছে উপজেলার পাঁচশিরা বাজারে প্রায় অর্ধ-বর্ষের এই মাছের মেলা। এ দিনটিকে ঘিরে এখানে দিনব্যাপী চলে মাছ কেনা ও বিক্রি করার উৎসব। অর্ধশতাধিক দোকানে এসব মাছের পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। ক্রেতারা মাছের দাম হাঁকাচ্ছেন, কিনছেন, আবার কেউ কেউ সেলফি তুলতেও ব্যস্ত। শুধু সেলফি তুলেই শেষ নয়। মাছ মেলার ছবি দিয়ে কেউ কেউ আবার ঝড় তুলছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও। এই মাছের পাশাপাশি বিভিন্ন পণ্যের পসরা বসেছিল এই মেলায়। ক্রেতারা খালিহাতে ফিরছেন না কেউ। সবাই সামর্থ্য অনুযায়ী মাছ কিনে খুশিমনে বাড়ি ফিরছেন। মেলা উপলক্ষে আশপাশের গ্রাম-মহল্লায় বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। এই দিনটির জন্য অপেক্ষায় থাকেন কালাই উপজেলাবাসি। মেলায় ঘুরতে আসা মোছা. পারভিন আক্তার বলেন, আমার বিয়ের পর থেকেই আমি প্রতিবছর এই মেলা দেখতে আসি। এ মেলার জন্য আমরা আত্মীয়-স্বজনদের দাওয়াত করি। আমাদের বাড়ির জন্য এবার ১২ কেজি ওজনের কাতলা মাছ কিনেছি। কালাই উপজেলার মাত্রাই গ্রামের বাসিন্দা মো. আতিকুর রহমান জানান, এই নবান্নের মেলা আমাদের কাছে ঈদের চেয়েও বেশি আনন্দের। বাড়িতে মেয়ে জামাই, ভাগ্নি জামাইকে দাওয়াত করা হয়েছে। এই মাছের মেলা কেন্দ্র করে তারা বাড়িতে এসেছে।  কালাই উপজেলার আকন্দপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. এনামুল আকন্দ বলেন, প্রায় অর্ধ-বর্ষের ঐতিহ্যবাহী মেলাটি যেমন মাছের জন্য বিখ্যাত, তেমনি এই এলাকায় ধান-আলুতেও ভরপুর থাকে। এ কারণে আশপাশের লোকজন মেলায় ছুটে আসে। এই মেলায় মাছ বিক্রেতা আব্দুল লতিফ বলেন, মাছের মেলাতে বড় পুকুর, দিঘি ও নদী থেকে নানান জাতের বড় বড় মাছ সংগ্রহ করা হয়েছে।  আরেক জন মাছ বিক্রেতা মো. রনি বলেন, আমি প্রতিবছরই এ মেলায় মাছ বিক্রি জন্য আসি। বর্তমান সবজিনিসের দাম বৃদ্ধি,তবে মাছের বাজারে তুলনায় মাছের দাম বেশি হলেও সবাই আনন্দের সঙ্গে মাছ কিনছেন। এবার মাছ নিয়ে বিপাকে পড়তে হবেনা। প্রত্যেক বিক্রেতা অন্তত ১০ থেকে ১৫ মণ করে মাছ বিক্রি করেন। তাছাড়া লাভও মোটামুটি হবে। অপর মাছ বিক্রেতা মাছ ব্যবসায়ী জহুরুল, এনামুল হক, আলমগীর হোসেন জানান, মাছের মেলায় প্রচুর লোক সমাগম হলেও বিক্রি সেই তুলনায় কম। তারপরও যেটুকু হয়েছে, সব খরচ বাদে তাতে লাভ ভালোই থাকবে। অন্য বছরের তুলনায় এবার ক্রেতা বেশি। তাই মাছও বিক্রি হচ্ছে বেশি। দামও ছিল স্বাভাবিক।  কালাই উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তৌহিদা মোহতামিম বলেন, প্রতি বছর এই মেলাকে ঘিরে এলাকায় উৎসব বিরাজ করে। আজও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। এ মেলায় এবার ৪০-৫০টি স্টলের মাধ্যমে দিন শেষে এখানকার ব্যবসায়ীরা অন্তত কোটি টাকার মাছ কেনাবেচা করবেন। মেলায় কেউ যেন বিষযুক্ত মাছ বিক্রি করতে না পারে সেদিকে আমাদের কঠোর নজরদারি রয়েছে।  আরটিভি/এএএ