জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে এক পুলিশ সদস্যকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে আটকে রেখে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (১৯ মে) আক্কেলপুর পৌরশহরের শ্রীকৃষ্টপুর মহল্লার মৃত সেকেন্দার আলীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, পুলিশের ওই কনস্টেবলের নাম আশিক হোসেন। ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে তাকে আটকে রাখেন শ্রীকৃষ্টপুর মহল্লার বাসিন্দা সোহেল রানা ও স্থানীয় লোকজন।
এ বিষয়ে স্থানীয়রা জানান, সপ্তাহখানেক আগে জমিজমা নিয়ে একটি অভিযোগের তদন্ত করতে থানার এক এসআইয়ের সঙ্গে কনস্টেবল আশিক হোসেন শ্রীকৃষ্টপুর মহল্লায় এসেছিলেন। তখন সোহেল রানার কাছে এক হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন আশিক। দুদিন পর রাতের বেলায় স্থানীয় একটি সড়কে কনস্টেবল আশিক সোহেল রানার পকেট তল্লাশি করে ইয়াবা পান বলে দাবি করেন। তখন তাকে ছেড়ে দেওয়ার শর্তে ২০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন ওই কনস্টেবল। সোহেল রানা পরদিন সকালে ঘুষের টাকা দেবেন বলে কথা দিয়ে সেখান থেকে চলে আসেন। পরদিন শুক্রবার সকালে কনস্টেবল আশিক ঘুষের টাকা নিতে সোহেলের বাড়িতে এলে তাকে না পেয়েই চলে যান।
স্থানীয়রা আরও জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আশিক হোসেন শ্রীকৃষ্টপুর মহল্লায় সোহেল রানার বাড়িতে গিয়ে ফের ঘুষের ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। সোহেল রানা কনস্টেবলের হাতে পাঁচ হাজার টাকা দেন। এ সময় সোহলের স্ত্রী মুঠোফোনে গোপনে ভিডিও ধারণ করেন। টের পেয়ে টাকা ফেরত দিয়ে দ্রুত পালানোর চেষ্টা করেন আশিক। তখন সোহেল রানা কনস্টেবল আশিককে তার বাড়িতে আটকে রেখে ৯৯৯-এ কল করেন।
ভুক্তভোগী সোহেল রানা ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘জমিজমা সংক্রান্ত একটি অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে এসে কনস্টেবল আশিক হোসেন আমার কাছে টাকা দাবি করেন। সেই টাকা না দেওয়ায় পরে আমাকে রাস্তার মধ্যে পকেটে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে দেন তিনি। পরে ২০ হাজার টাকা দেওয়ার চুক্তিতে তিনি আমাকে ছেড়ে দেন। ওই টাকা নিতে আসলে এ ঘটনাটি ঘটে। পরে ৯৯৯-এ ফোন দিলে পুলিশ এসে আমার স্ত্রীর ধারণ করা ভিডিও ডিলিট করে তাকে নিয়ে যায়।’
অভিযুক্ত আশিক হোসেন বলেন, ‘গত কয়েক দিন আগে আমার মা মারা যান। তারপর থেকে মানসিক বিষণ্নতায় ভুগছি। আমি ওই এলাকায় মাদকের খোঁজ নিতে গেলে তারা কৌশলে আমাকে ডেকে নিয়ে ফাঁসিয়ে দেন। আমি কোনো টাকা-পয়সা লেনদেন করিনি।’
পৌর কাউন্সিলর ফেরদৌস সরদার বলেন, ‘সোহেল রানার বাড়িতে সাদা পোশাকে একজন কনস্টেবলকে আটকে রাখার ঘটনাটি পুলিশের মাধ্যমে জানতে পেরে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে থানা পুলিশের সঙ্গে ওই কনস্টেবলকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।’
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মাসুদ রানা শনিবার রাতে বলেন, ‘ওই ঘটনায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একটি লিখিত প্রতিবেদন দিয়েছি। এ বিষয়ে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’