পাবনার সুজানগরে বাবা-মা ও ছেলে একইসঙ্গে এবারে এইচএসসি পাস করেছেন। বাবা বিএম ফারুক হোসেন জিপিএ-৪.৭১, মা মোছা. জাকিয়া সুলতানা জিপিএ-৪.২৫ এবং ছেলে বিএম হুজ্জাতুল ইসলাম ফাহিম জিপিএ- ৪.১৭ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) এইচএসসির ফল প্রকাশের পর এমন সাফল্যে পরিবার-পরিজনসহ এলাকাবাসীর প্রশংসায় ভাসছেন বাবা-মা ও ছেলে।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে সাতবাড়ীয়া ডিগ্রি কলেজের বিএম শাখা থেকে বাবা ও মা এবং ছেলে উইলস্ লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ (ইংলিশ ভার্সন) থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।
বাবা-মার সঙ্গে এইচ এসএসসি (সমমান) পরীক্ষায় পাশ করে উচ্ছ্বসিত ছেলে বিএম হুজ্জাতুল ইসলাম ফাহিম। তিনি জানান, একই বছর আমার সঙ্গে এইচএসসি পাস করায় সত্যিই অনেক খুশি।
মা জাকিয়া সুলতানা বলেন, আমার খুব ইচ্ছা ছিল এইচএসসি পাস করার, কিন্তুি মা-বাবার সংসারে সেই ইচ্ছা পূরণ হয়নি। পরে আমি আমার স্বামী ও ছেলের পরামর্শে এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আমি এবং আমার স্বামী সুজানগর উপজেলার সাতবাড়ীয়া ডিগ্রি কলেজের বিএম শাখায় ভর্তি হই। এইচএসসি (সমমান) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে পাস করেছি, তাই আমি আনন্দিত।
বাবা বিএম ফারুক হোসেন বলেন, অল্প বয়সে ২০০২ সালে আমার বিয়ে হয়। এরপর সংসারের হাল ধরার কারণে ব্যবসা করায় তখন আর লেখাপড়া হয়ে ওঠেনি। আমার ২ ছেলে ও এক মেয়ে। স্ত্রী ও আমি একই সঙ্গে কলেজে ভর্তি হই। এবং একসঙ্গে স্ত্রী ও বড় ছেলের সঙ্গে একই বছর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে পাস করে আমি অনেক খুশি।
তিনি আরও বলেন, সমাজে চলতে অনেক সময় শিক্ষাগত যোগ্যতার জন্য বিড়ম্বনায় পড়তে হতো। সত্যি কথা বলতে লেখাপড়ার কোনো বিকল্প নেই। পাস করার ফলে আমাদের মর্যাদা আরও বৃদ্ধি পাবে। আমি এবং আমার স্ত্রী উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করতে পড়ালেখা চালিয়ে যাব।
সুজানগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ বলেন, একই সঙ্গে বাবা-মা ও ছেলে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ায় আমাদের সামনে তারা একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাদের এমন কৃতিত্বকে সবার সম্মান করা উচিত। এবং তাদের দেখে অন্যরাও উচ্চশিক্ষায় অগ্রসর হবেন বলে প্রত্যাশা করি।
আরটিভি/এএএ