জাপানের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে অটোমোবাইল কারখানা স্থাপনের আহ্বান
জাপানের শিল্প উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। বিশেষ করে দেশটির ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে অটোমোবাইল এবং হালকা প্রকৌশল কারখানা স্থাপন করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেট্রো) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে এই আহ্বান জানান এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
জেট্রো’র প্রতিনিধি দলকে বাংলাদেশে বাজার সম্ভাবনার তথ্য জানিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ জাপানকে ভালোবাসে। তাদের কাছে জাপানি পণ্যের চাহিদাও অনেক। এ জন্য রাস্তায় বের হলেই দেখা যায় জাপানি নানা ব্র্যান্ডের গাড়ি। বাংলাদেশে ব্যবসার বিশাল সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে জাপান এগিয়ে আসতে পারে। এ ক্ষেত্রে দেশে জাপানি গাড়ির ব্যাপক চাহিদার কথা মাথায় রেখে কারখানা স্থাপন করা যেতে পারে। এর ফলে উভয় দেশই সমানভাবে লাভবান হবে।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার একটি কোম্পানি বাংলাদেশে কারখানা চালু করেছে। জাপানের অটোমোবাইল কোম্পানিগুলোও এখানে গাড়ি সংযোজন-উৎপাদন শুরু করতে পারে। এখানে তারা যত দ্রুত কারখানা স্থাপন করবে, ব্যবসা সম্প্রসারণে তাদের জন্য ততই সুবিধা হবে।
বাংলাদেশের গতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চিত্র তুলে ধরে মো. জসিম উদ্দিন বলেন, আমরা এখন ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির পথে অগ্রসর হচ্ছি। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের স্বার্থে নীতিগত এবং কাঠামোগত রূপান্তরের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ সহজীকরণের জন্য বেসরকারি খাতের সমন্বয়ে সরকারের সংস্থাগুলোও কাজ করছে।
এফবিসিসিআই’র ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ বিজনেস সামিটের বিষেয়েও জেট্রো’র প্রতিনিধি দলকে অবহিত করেন এফবিসিসিআই সভাপতি। সামিটে জাপানের ব্যবসায়ীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ কামনা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বেসরকারি খাত জাপানের সাথে ব্যবসা ও বাণিজ্য সম্প্রসারণে আগ্রহী। স্থানীয় উদ্যোক্তারা পরিবেশবান্ধব শিল্প স্থাপনে জোর দিয়েছে।
টেকসই শিল্পায়ন নিশ্চিতে উভয় দেশের মধ্যে প্রযুক্তির আদান-প্রদান জরুরি বলে মন্তব্য করেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
এ সময় প্রতিষ্ঠার ৫০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এফবিসিসিআইকে শুভেচ্ছা জানান জেট্রোর প্রেসিডেন্ট কাজুশিগে নবুতানি। আগামী মার্চে হতে যাওয়া বাংলাদেশে বিজনেস সামিটের সাফল্য কামনা করেন তিনি।
বৈঠকে কাজুশিগে নবুতানি বলেন, এফবিসিসিআইয়ের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ বিজনেস সামিট আয়োজন করা হচ্ছে জেনে আমরা আনন্দিত। ব্যবসা ও বাণিজ্য বিষয়ে বিশাল এই আয়োজনকে আমরা স্বাগত জানাই। পারস্পরিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের বিষয়টিকে জাপান গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে। এর মাধ্যমে উভয় দেশেরই লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
সরকারের ব্যবসাবান্ধব নীতি কৌশলের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য সম্পর্ক আরও বেগবান হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন জেট্রোর প্রেসিডেন্ট।
বৈঠকে এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী, মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, উপদেষ্টা এবং সাবেক পরিচালক আবদুল হক, জেট্রোর এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মায়ুমি মুরায়ামা, ডিরেক্টর জেনারেল সাতোসি কুবোতাসহ প্রতিনিধি দলের অন্যান্য সদস্যরা।
মন্তব্য করুন