‘বাজেটের অর্থের সংকুলান করাই বড় চ্যালেঞ্জ’
আসন্ন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে অর্থের সংকুলান করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান।
সোমবার (১৫ মে) সন্ধ্যা ৭টায় রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক হোটেল সোনারগাঁওয়ে আরটিভির ‘বাজেটে প্রত্যাশা, ২০২৩-২৪’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
সিপিডি’র ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে যে ধারাবাহিক উন্নয়ন হয়েছে। আমরা এলডিসি থেকে উত্তরণ হয়েছি। এর ফলে আমাদের প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষা বেড়েছে। এর আলোকে আমি যদি ২০২৩-২৪ এর বাজেটের কথা চিন্তা করি, তাহলে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আমরা বলছি, আমাদের বাজেটের আকার বড় হয়েছে। কিন্তু জিডিপির মাত্রায় যদি আমরা দেখি, এটি কিন্তু এখনও... আমাদের রেভিনিউ যদি হয় ৯ শতাংশ জিডিপির, এটির সঙ্গে যদি ঘাটতি আমি যোগ করি আরও ৫-৬ শতাংশ। অর্থাৎ এটা ১৪-১৫ শতাংশের বেশি না। দক্ষিণ এশিয়ায় সরকারের যেই ব্যয়, সে অনুযায়ী জিডিপির অংশ হিসেবে আমাদের এটা সবচেয়ে কম। সুতরাং প্রথম যেই সমস্যাটা আমাদের বাজেট প্রণেতাদের মুখোমুখি হতে হয় সেটা হলো আমাদের আরও অর্থের প্রয়োজন। অর্থের সংকুলান করাটাই এখন একটা বড় চ্যালেঞ্জ।
তিনি বলেন, আমাদের এই ১৪-১৫ শতাংশকে ২০ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। আমাদের সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় আমাদের রেভিনিউ টার্গেট ছিল ২০২০ সালে ১৪ শতাংশ। সেখানে আজকে এটা ৯ শতাংশেরও কম। তাহলে যারা বাজেট প্রণয়ন করবেন তাদের যে টাকার প্রয়োজন, সেটার জন্য তো অনেক ঋণ করতে হবে। সুতরাং এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আমি দেখছি। আমাদের যে অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ এবং সেখানে আমাদের যে বিনিয়োগ, সেটা বাজেটে রাখতে হবে। দ্বিতীয়ত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনাটা আমাদের রাখতে হবে। কারণ, এটি আমাদের সক্ষমতাকে হ্রাস করছে। বাজেটে আমাদের মূল লক্ষ্য হতে হবে, কীভাবে আমরা মূল্যস্ফীতিকে বাগে নিয়ে আসতে পারব। আমাদের চেষ্টা করতে হবে, কীভাবে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে আবার আমরা ফিরিয়ে আনতে পারি।
অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া, এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ড. মো. মাসুদুর রহমান, সিপিডির ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাহবুবুল আলম, বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান, বিটিএমএ’র সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ব্যারিস্টার সামির সাত্তার, বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মো. হাতেম, এমসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি কামরান টি রহমান, বাংলাদেশ-ভারত বিজনেস কাউন্সিলের সভাপতি মানতাসা আহমেদ, বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ।
এ ছাড়া চট্টগ্রাম ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন চট্টগ্রাম চেম্বারের সহসভাপতি সৈয়দ মো. তানভীর, চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বারের সহসভাপতি আবিদা মোস্তফা। একই সঙ্গে ব্রেজ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুল হাসান, রাজশাহী চেম্বারের সভাপতি মাসুদুর রহমান রিংকু, রংপুর চেম্বারের সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটু, বরিশাল চেম্বারের সভাপতি সাঈদুর রহমান রিন্টু, সিলেট চেম্বারের সভাপতি তাহমিন আহমদ এবং যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি সাঈদুর রহমান রেনু অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন। অনুষ্ঠানে আলোচকরা বাজেট নিয়ে তাদের নিজেদের অভিজ্ঞতা, মতামত ও পরামর্শ তুলে ধরেন।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে দর্শকসারিতে বসা বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা, উদ্যোক্তা, সরকারি কর্মকর্তা, অর্থনীতিবিদ, গবেষক, সাংবাদিক প্রতিনিধিসহ সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ আলোচকদের নানান প্রশ্ন করেন এবং নিজেদের মতামত দেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দীন। টেলিভিশনের পাশাপাশি অনুষ্ঠানটি একযোগে আরটিভির ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেল সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। অনুষ্ঠানটি প্রযোজনা করেছেন মো. বেলায়েত হোসেন।
মন্তব্য করুন