বাংলাদেশের রিজার্ভের দেড়গুণ মুনাফা সুইজ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের!
সুইজারল্যান্ডের সরকারকে মোটা অঙ্কের অর্থ দিচ্ছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইজ ন্যাশনাল ব্যাংক। ব্যাংকটি গেলো বছরে ৫৪ বিলিয়ন সুইস ফ্র্যাঁ (৫৫.২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) মুনাফার আশা দেখছে। যেটি দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ৮ শতাংশের সমান। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক বিবৃতিতে এ আশার কথা জানিয়েছে।
গেলো এক বছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকটির এই মুনাফা বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান রিজার্ভের দেড়গুণেরও বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউরোর বিপরীতে দেশটির মুদ্রা সুইস ফ্র্যাঁ দুর্বল হওয়া, বৈদেশিক মুদ্রার বন্ডের মূল্য বৃদ্ধি ও পুঁজিবাজারে শেয়ারের শক্ত অবস্থান সামগ্রিকভাবে মুনাফায় এই ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
ব্যাংকটির এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৫ সালে ২৩ বিলিয়ন ফ্র্যাঁ লোকসান হয়েছে। ২০১৬ সালে সেই খরা কাটিয়ে এক লাফে মুনাফা উঠে প্রায় ২৪ বিলিয়ন ফ্র্যাঁতে। ২০১৭ সালে তা দ্বিগুণ হয়ে ৫৪ বিলিয়ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। যা হবে ১১০ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ মুনাফা।
ব্লুমবার্গের খবরে বলা হয়, গেলো বছরে ইউরোর বিপরীতে ফ্র্যাঁর মূল্যপতন হয়েছে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ। দুই দশকে যা বাৎসরিক হিসাবে মুদ্রাটির সর্বোচ্চ পতন। এই পতনই কেন্দ্রীয় ব্যাংকটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের মূল্য বাড়াতে সহায়তা করেছে।
দ্য সুইজ ন্যাশনাল ব্যাংকের তথ্য মতে, ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটির মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭৪৪ বিলিয়ন ফ্র্যাঁতে।
জুরিখে অবস্থিত ইউবিএস গ্রুপ এজির অর্থনীতিবিদ অ্যালেসান্দ্রোঁ বি জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই সাফল্য আগামীতে দেশটির মুদ্রানীতি সহজ করতে সহায়তা করবে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকটি। গত এক বছরে দেখা যায়, কোম্পানিটির শেয়ারের দর দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। মঙ্গলবার মুনাফা বাড়ার খবরের দিনই বেড়েছে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের খবরে বলা হয়, সদ্য শেষ হওয়া বছরে সুইজ ন্যাশনাল ব্যাংকের মুনাফা মাইক্রোসফট, বার্কশায়ার হ্যাথওয়ে, জেপি মরগ্যান ও অ্যাপলের মুনাফাকেও ছাড়িয়ে যাবে।
কিন্তু কিভাবে? যেখানে অ্যাপল দাবি করছে ২০১৭ সালে তাদের মুনাফা দাঁড়াবে সাড়ে ৫৭ কোটি ডলার।
সংবাদ মাধ্যমটি বলছে, অ্যাপলের শেয়ারের বড় একটি অংশের মালিক সুইজ কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে অ্যাপলের শেয়ারের দরবৃদ্ধিতে অর্জিত মুনাফাও ব্যাংকটির মুনাফায় যোগ হবে। এতে করে সুইজ ন্যাশনাল ব্যাংকের মুনাফা যখন প্রায় ৫৫ কোটি ডলারে পৌঁছবে, তখন অ্যাপলের মুনাফা দাঁড়াবে ৪৮ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলারে।
ব্যাংকটির হিসাব মতে, বৈদেশিক সম্পদ থেকেই শুধু আসবে ৪৯ বিলিয়ন ফ্র্যাঁ। বাকি অর্থ আসবে ব্যাংকের কাছে জমা থাকা স্বর্ণ ও অন্যান্য থেকে।
এসআর
আরও পড়ুন
মন্তব্য করুন