বসন্ত উৎসবে শতকোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা ব্যবসায়ীদের
ঋতুরাজ বসন্ত ও ভালোবাসা দিবসকে রাঙাতে কতই না আয়োজন। যার মূল অনুষঙ্গ রঙ-বেরঙের ফুল। সব আবেদন, অনুরাগ, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশের বড় মাধ্যম ফুল। আসছে বিশেষ দুইটি দিবস। যার পরতে পরতে স্থান পাবে ফুলের বিস্তার। দিবসগুলোর মূল অনুষঙ্গ ফুল নিয়ে ব্যস্ততার যেনো শেষ নেয় ফুল বিক্রেতাদের। এ দুইদিনে দেশে ফুল বিক্রি হবে শত কোটি টাকা। এমনটাই আশা করছেন ফুল ব্যবসায়ী কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি বাবুল প্রসাদ।
তিনি বলেন, প্রতি বছরের মতো এ বছরও আমরা পহেলা ফাল্গুন আর ভালোবাসা দিবসে প্রচুর ফুল বিক্রি করার প্রস্তুতি নিয়েছি। আজ ( সোমবার) শাহবাগে প্রায় চার থেকে পাঁচ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে। আগামীকাল সকাল ও পরশুদিন এ চাহিদা আরো বাড়বে। এ বছর কম-বেশি ১শ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হওয়ার আশা করছি।
প্রসাদ বলেন, এ বছর শীতের প্রকোপ বেশি হওয়ায় চাষীরা চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল,অনেকের ফুলগাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু শীত কমে যাওয়ায় তেমন বড় সমস্যা হয়নি। যেভাবে ক্রেতারা আসছে তাতে আশা করি আমাদের লক্ষ্যে আমরা পৌঁছাতে পারবো।
ফুলের দাম বসন্ত ও ভালোবাসা দিবসের দিন বেড়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সারা বছরের চাহিদার পাশাপাশি বিশেষ দিনগুলোতে বেশ চাহিদা থাকে ফুলের। এ সময় ব্যবসায়ীরা বাড়তি আয়ের প্রত্যাশা করে। পাশাপাশি যাতায়াত ও শ্রমিকদের মজুরি ভাতা বেড়ে যায় ফলে ফুলের দাম বেড়ে যায়।
এদিকে রাজধানীর ফুলের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্যস্ততায় কথা বলার জো নেই বিক্রেতাদের। থরে থরে সাজানো হয়েছে ফুল। দেখেই চোখ জুড়িয়ে যায়। পাইকার আর ফুল চাষীদের সঙ্গে অর্ডার নিয়ে ব্যস্ত তারা। ফুল দরকার ফুল। উজ্জল রঙের তাজা ফুল। ক্রেতাদের মন রাঙাতে ফুলের বাইরে নানা আকার ও রঙের ঝুড়ি, সোলা, র্যাপিং কাগজ, সিরামিক বাটি, পাতা সংরক্ষণ করে রাখছেন তারা।
দিবসগুলোকে ঘিরে এরই মধ্যে রাজধানীর শাহবাগ, ফার্মগেট, গাবতলী, গুলশান, বাড্ডা, মালিবাগ, কমলাপুর, যাত্রাবাড়ী ও ধানমণ্ডিসহ ২০টি পয়েন্টে ফুল বিক্রির প্রস্তুতি নিয়েছেন খুচরা বিক্রেতারা। তবে শাহবাগ ও কাঁটাবনেই মূলত ফুলপ্রেমীরা বেশি ভিড় করেন।
বসন্তে মেয়েরা ফুলের রিং মাথায় পরে ঘুরে বেড়ায়। তাই দোকানগুলোতে কয়েক প্রকার ফুলের রিং তৈরি হচ্ছে। দোকানগুলোতে মালাও তৈরি করতে দেখা গেছে। মূলত অনেকে গহনা হিসেবে ফুলকে বেছে নেয়। কানে দুল, গলায় মালা, মাথায় প্রিন্সেস ব্যান্ড বা হাতে মালা পেঁচিয়ে নেয় তারা। চুলের একপাশে ক্লিপ দিয়ে তাজা ফুলও গুঁজে।
শাহবাগের ফুল ব্যবসায়ী জাহিদ আনোয়ার বলেন, ফুলের ব্যবসা সাধারণত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার হয়ে থাকে। তবে বিশেষ দিবস ২১ ফেব্রুয়ারি, ২৬ মার্চ, ১৬ ডিসেম্বর, নববর্ষে বেশি বিক্রি হয়। ওই দিনগুলোতে বেশি বিক্রি হলেও ভালোবাসা ও বসন্ত দিবসে এ ব্যবসায় লাভ অধিক।
ফুলের দাম নিয়ে শাহবাগের কনিকা পুষ্পালয়ের মালিক কামাল হোসেন বলেন, লিলি ১৫০ টাকা, থাই-চায়না ও ইন্ডিয়ান গোলাপ ৬০ থেকে ১০০ টাকা। দেশি গোলাপ ২০ টাকা, অর্কিড ৬০ টাকা, কিসিমসিমা মিম ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, জারবেরা ২৫ টাকা, গেলোডিয়াস ২৫ টাকা, ক্যালনডুলা ১০ টাকা, জিপসি ৩০ টাকা, গাঁদা ফুলের মালা ৪০ টাকা, জুঁই বেলী মালা ৩০ টাকা দামে বিক্রি করছি। এছাড়াও কানডিশন, লিমু, রজনী গন্ধ্যা, চেরিগেণ্ডা, ওয়েসস্টার, দেশি- বিদেশি নানান ফুল আমরা বিক্রি করছি। কিন্তু অন্যান্য সময় এসব ফুল আরো অনেক কম দামে বিক্রি হয়।
আরও পড়ুন:
এমসি / এমকে
মন্তব্য করুন