সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সাবেক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তার সহধর্মিণী অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হককে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে দাবি করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে বৈঠকে এ দাবি তোলে শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সিলেট সার্কিট হাউজে এ বৈঠক হয়।
প্রতিনিধিদলের সদস্য শাহরিয়ার আবেদীন বলেন, শিক্ষার্থীদের অন্য দাবির সঙ্গে এ দাবি করা হয়।
তিনি জানায়, বৈঠকে শাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের অপসারণের ব্যাখ্যা তুলে ধরবেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া অন্যান্য দাবি পূরণের নিশ্চয়তা চান তারা।
শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দলের মধ্যে রয়েছেন- মুহাইমিনুল বাশার রাজ, ইয়াসির সরকার, নাফিসা আনজুম, সাব্বির আহমেদ, আশিক হোসাইন মারুফ, সাবরিনা শাহরিন রশীদ, সুদীপ্ত ভাস্কর, শাহরিয়ার আবেদীন, আমেনা বেগম, মীর রানা ও জাহিদুল ইসলাম অপূর্ব।
এদিকে শাবিতে অবস্থান নিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের দীর্ঘ ২৮ দিন পর আলোচনায় বসছে আন্দোলনকারীরা।
এর আগে শুক্রবার সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে বিমানে সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি। এ সময় সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সংশ্লিষ্টরা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। দুপুর ১২টায় সিলেট সার্কিট হাউস মিলনায়তনে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।
গত বছরের ২৫ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক হল খুলে দেওয়া হয়। প্রায় ১৯ মাস পর ওই দিন থেকে হলে ফিরতে শুরু করেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা। ফেরার পর হলে তারা বিভিন্ন সংস্কার দেখতে পান। পাশাপাশি বেশ কিছু নতুন নিয়মনীতি ও সমস্যার সম্মুখীন হন বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের আবাসিক ছাত্রীরা।
এসব কারণে গত ১৩ জানুয়ারি থেকে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।
এরপর ১৬ জানুয়ারি বিকেলে তিন দফা দাবি আদায়ে উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সময় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ ৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে।
পরে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনায় উপাচার্যকে দায়ী করে তার পদত্যাগ দাবি করে এত দিন আমরণ অনশনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার (২৬ জানুয়ারি) টানা সাত দিনের অনশন ভাঙলেও উপাচার্যের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।