মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা এখনও বড় চ্যালেঞ্জ। নানা প্রতিবন্ধকতায় বিপর্যস্ত শিক্ষাখাত। এই অবস্থা উত্তরণে সমন্বিত পদক্ষেপ জরুরি বলে মনে করেন বিশিষ্টজনেরা।
শুক্রবার (২৬ আগস্ট) বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে (ইইউবি) ‘উচ্চশিক্ষার ব্যয় ও বৈষম্য, বিপর্যস্ত মধ্যবিত্ত’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন বিশেষজ্ঞরা।
অনুষ্ঠানে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মকবুল আহমেদ খান বলেন, শিক্ষা সবার মৌলিক অধিকার। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে জাতিকে সুশিক্ষিত করার বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি সাধ্যমত কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ করে অসহায় ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য স্বল্প খরচে উচ্চশিক্ষা বিস্তারে কাজ করছে এই প্রতিষ্ঠান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের একজন হয়ে এই রাষ্ট্রের কল্যাণে নিজেকে নিবেদিত করতে চাই। অর্থের জন্য যাতে কারও পড়ালেখা থেমে না যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. ইউনুসুর রহমান বলেন, শিক্ষার মানোন্নয়নে সার্বিক মডেল কী হবে সেটি সবার আগে নিশ্চিত করতে হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য এদেশে বেকারদের বেশিরভাগই উচ্চশিক্ষিত। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সবার জন্য উচ্চশিক্ষা জরুরি কিনা সেটিও ভাবতে হবে।
সাবেক এই সচিবের মতে, মানসম্মত শিক্ষা সবার কাছে পৌঁছে দেয়াই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ইকোনমিক এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, আগামী দিনে উচ্চশিক্ষায় নেতৃত্বে থাকবে দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এজন্য এই খাতে বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধান করা দরকার।
এদিকে, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে বারবার অহেতুক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ মাজেদুল হক। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মানা হয়নি। শিক্ষাসহ বিভিন্ন খাতে বৈষম্য আছে উল্লেখ করে চন্ডিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রভাষক বলেন, সবার সমন্বিত উদ্যোগে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।
অন্যদিকে, উপাচার্য অধ্যাপক ইঞ্জিনিয়ার দাদ জানান, বেসরকারি খাতে সর্বনিম্ন খরচে উচ্চশিক্ষার দ্বার খুলে দিয়েছে ইইউবি।
বৈঠকে অংশ নিয়ে বাংলা ট্রিবিউনের হেড অব নিউজ মাসুদ কামাল বলেন, শিক্ষা ব্যবসার মাধ্যম হতে পারে না। এটি হবে দেশের স্বার্থে বড় বিনিয়োগ।
ইইউবির অধ্যাপক ড. ফারজানা আলম বলেন, উচ্চশিক্ষার সঙ্গে টাকার নয় বরং মেধার সম্পর্ক থাকা উচিত। দিন দিন নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে শিক্ষার মতো মৌলিক চাহিদা যেন বিলাসী পণ্যে রূপ না নেয় সে বিষয়ে নীতি-নির্ধারকদের দৃষ্টি দেয়ার ওপর জোর দেন তিনি।
এ ছাড়া আশুলিয়ার গাজিরচট এ এম উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. মোজাফফর হোসেন তার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে নানা চ্যালেঞ্জে ঝরে পড়ছে অনেক শিক্ষার্থী। বিশেষ করে কোভিড ও পরবর্তী নানা বাস্তবতায় এই সংকট ঘনীভূত হয়েছে।