ঢাকারোববার, ০৮ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

হাবিপ্রবির টিএসসিতে নেই নারীবান্ধব শৌচাগার, বিপাকে ছাত্রীরা

হাবিপ্রবি প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

বুধবার, ২৪ জানুয়ারি ২০২৪ , ১১:০৯ পিএম


loading/img
ছবি : আরটিভি

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে নারীদের জন্য আলাদা শৌচাগার নেই। ফলে একই শৌচাগার ব্যবহার করতে হয় ছাত্র-ছাত্রীকে। এতে প্রতিনিয়ত বিব্রত অবস্থায় পড়তে হয় তাদের। বিশেষ করে ছাত্রীদের পিরিয়ডকালীন সময় পড়তে হয় চরম বিড়ম্বনায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্টাফদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

ছাত্রীদের অভিযোগ, এ ব্যাপারে প্রশাসনকে জানানো হলেও তেমন কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি কর্তৃপক্ষকে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, এ সমস্যা সমাধানে দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে মাত্র একটি শৌচাগার রয়েছে। এতেও টয়লেটের সংখ্যা অপ্রতুল। মাত্র তিনটি টয়লেট রয়েছে। আবার এতে ছাত্র ছাত্রীদের জন্য নেই আলাদা টয়লেট। ফলে প্রতিনিয়ত ব্রিবত অবস্থায় পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদেরকে। এ ছাড়া শৌচাগারের ভেতরে টয়লেটগুলোতে লাইট থাকলেও অধিকাংশ সময় নষ্ট থাকে। ফলে অন্ধকারেই শৌচকর্ম সারতে হচ্ছে তাদের। শৌচাগারে সাবান ও টিস্যুর ব্যবস্থা নেই। এমনকি টিস্যু ফেলার পর্যাপ্ত ঝুড়িও রাখা হয়নি। মাঝেমধ্যে পরিষ্কার করা হলেও সর্বশেষ কবে পরিষ্কার হয়েছে তা জানে না কেউ। প্রতিনিয়ত দুর্গন্ধ আসে শৌচাগার থেকে। 

বিজ্ঞাপন

শুধু ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন একাডেমিক ভবন ঘুরেও এমন চিত্র দেখা গেছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ভবনগুলোতেও দেখা যায় বেসিনে ট্যাপ আছে কিন্তু পানি আসে না, আবার কোনোটিতে ট্যাপই নেই। কোনটির পানির ট্যাপ ভেঙে অনবরত পানি পড়ে শৌচাগারের মেঝে স্যাঁতসেঁতে হয়ে আছে। বেশির ভাগ বেসিনের ওপরেই আয়না উধাও হয়ে গেছে, আবার পুরোটা থাকলেও তার ওপর রং পড়ে চেহারা দেখা যায় না। প্রায় অধিকাংশ শৌচাগারের ফ্লাশ অচল। কোনটির ফ্লাশে ধুলো-বালুর আবরণ পড়ে আছে। 

অনেকগুলো শৌচাগারে বদনা পাওয়া যায়নি, তাছাড়া অনেক শৌচাগারের দরজায় কোনোটাতে ছিটকিনি নেই।অনেক শৌচাগারের লাইট নেই, থাকলেও সেগুলো জ্বলে না।

বিজ্ঞাপন

যেসব শিক্ষকের কক্ষে এটাচড্ ওয়াশরুম নেই, তাদেরকেও বিষয়টি নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। নারী শিক্ষকেরাও এমন ভোগান্তির কথা জানিয়েছেন। 

বিজ্ঞাপন

বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসটির শৌচাগার নারীবান্ধব নয় এমন অভিযোগ তুলে ছাত্রীরা বলেন, টিএসসিতে নারীবান্ধব টয়লেটের ব্যবস্থা না থাকায় পিরিয়ড চলাকালে অনেকে টয়লেটে যাওয়া থেকে বিরত থাকেন। বাধ্য হয়ে দীর্ঘক্ষণ পরে থাকতে হয় একই স্যানিটারি প্যাড। এতে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে তাদের। অথবা দূরে অন্য ভবনে যেতে হয় তাদেরকে।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের অনুষ্ঠান হয়ে থাকে টিএসসি প্রাঙ্গণে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পাশাপাশি টিএসসিতেও পড়াশুনা করতে আসেন শিক্ষার্থীরা। ফলে ক্লাসের বাইরে দীর্ঘসময় শিক্ষার্থীদের টিএসসিতে অবস্থান করতে দেখা যায়।  

টিএসসিতে পড়তে আসা পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী রেশমা বলেন, শৌচাগার থেকে দুর্গন্ধ আসার কারণে ওইদিকে কেউ বসতে চায় না। প্রায় খালি থাকে শৌচাগারের পাশের টেবিলগুলো। 

ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আনিকা তাসনিম বলেন, আমাদের টিএসসিতে একটাই মাত্র কমন ওয়াশরুম। কিন্তু একটা মেয়ের পক্ষে সব সময় কমন ওয়াশরুম ইউজ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। এটা অনেক ক্ষেত্রে বিভ্রান্তিকর অবস্থার সৃষ্টি করে। দেখা যায় ইমারজেন্সি সিচুয়েশনে মেসে বা ওয়াজেদ ভবনের ওয়াশরুমে ইনস্ট্যান্ট না যেতে পারার কারণে আমাদেরকে বেছে নিতে হয় টিএসসির ওয়াশরুম এবং এই ওয়াশরুমে মেয়েদের জন্য আলাদাভাবে কোন প্রাইভেসি বা আলাদা ওয়াশরুম না থাকার কারণে আমাদেরকে অনেক সময় অনেক বিব্রতিকর সিচুয়েশনে পড়তে হয়। বিশেষ করে পিরিয়ডের সময়। এইজন্য দেখা যায় অনেক সময় অনিচ্ছাকৃত সত্ত্বেও আমাদের দীর্ঘ সময় ওয়েট করতে হয় শৌচাগার ব্যবহার করার জন্য। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড. মাহাবুব হোসেন বলেন, আমরা শৌচাগার আলাদা করার ব্যাপারে ভেবেছি। এ সমস্যা সমাধানে দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |