চলতি প্রজন্মের অভিনেত্রী ইমু শিকদার। ছোট ও বড় পর্দায় সমানতালে অভিনয় করছেন। ‘গাঙচিল’ সিনেমাসহ বেশ কয়েকটি নাটকে অভিনয় করে আলোচনায় উঠে এসেছেন তিনি। করোনাকালীন সময়ে বেশির ভাগ সময় ঘরবন্দী কাটালেও সম্প্রতি তিনি কাজে ফিরেছেন। নিজের পেশাগত ও ব্যক্তিজীবন নিয়ে আরটিভি নিউজের সঙ্গে একান্তে কথা বললেন ইমু। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নিয়াজ শুভ
কেমন আছেন?
ইমু শিকদার: আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি। লকডাউনে বাসায়ই ছিলাম। করোনার এমন পরিস্থিতিতেও আল্লাহ ভালো রেখেছেন। কাজে ফিরতে পেরেছি।
বর্তমান ব্যস্ততা...
ইমু শিকদার: সিঙ্গেল নাটকে কাজ করছি। এছাড়াও নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুলের ‘গাঙচিল’ সিনেমার কাজ কিছুটা বাকি আছে। সেখানে আমি আনিসুর রহমান মিলন ভাইয়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে কাজ করছি। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবারও কাজ শুরু হতে পারে।
তার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
ইমু শিকদার: মিলন ভাই দূর্দান্ত অভিনেতা। আমি তার কাছে একদম শিশু। সে আমাকে অনেক হেল্প করেছে। আশা করি কাজটি দর্শকের ভালো লাগবে।
ছোট-বড় দুই পর্দাতেই কাজ করেছেন। প্রত্যাশা কেমন?
ইমু শিকদার: বড় পর্দা আর ছোট পর্দা দুটো দুই প্যাটার্নের। আমার শুরুটা হয়েছে সিনেমা দিয়ে। আমার নায়িকা হওয়ার দরকার নেই। আমি এখন বাণিজ্যিক সিনেমার জন্য প্রস্তুত না। ভিন্নধর্মী চরিত্রে নিজেকে উপস্থাপন করতে চাই। আমি যদি সবসময় নিজেকে স্টাডির মধ্যে রাখতে পারি, তাহলে ভালো কিছুই হবে। যার লক্ষ্য থাকে সঠিক, যার উদ্দেশ্য থাকে সৎ একদিন সে সফল হবেই।
নিজের অভিনয়ে আপনি কতটুকু তৃপ্ত?
ইমু শিকদার: আমি একজন শিল্পী। যারা কাজটাকে ভালোবাসে তারা আসলে কখনো সন্তুষ্ট হতে পারে না। আমি আমার জায়গা থেকে শতভাগ চেষ্টা করি। ভালো কিছু করলেও মানুষ আমাদের খারাপ মনে করে। অভিনেত্রী হিসেবে এমন কোনো কাজ করবো না, যা ফ্যামিলি বা সামাজিকভাবে প্রভাব ফেলে।
সম্প্রতি শোবিজের চলমান অবস্থা...
ইমু শিকদার: না জেনে না বুঝে আমি তো কিছু বলতে পারছি না। আমি তো সত্যিটা জানি না। এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করবো না। তবে অবশ্যই বলবো, মিডিয়ার বাইরে অনেক কিছুই হয় যেটা সবাই জানে না। তবে মিডিয়াতে এমন কিছুই হয় না, যেটা মিডিয়ার বাইরে অনেক হয়। আমাদের ওপর সবসময় দর্শকদের ফোকাস থাকে সেটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে।
মিডিয়ায় কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
ইমু শিকদার: আমি অনেক ভুল করেছি। ভুল করে করে শিখছি। আমি এখনো শিশু। আমি এই কাজটাকে খুব ভালোবাসি। যতদিন বেঁচে থাকবো এই জার্নিটা ধরে রাখতে চাই।
কতটুকু শিখতে পেরেছেন?
ইমু শিকদার: অভিনয় করাটা এত সহজ নয়। আমরা না জেনে না বুঝে অভিনয় করতে চলে আসি। যে অভিনয় করবে তার সকল বিষয়ে জানা দরকার। অভিনয়ে প্রচুর শিক্ষণীয় বিষয় আছে। আমি যখন অভিনয়ে আসি তখন মনে করতাম- কোন সমস্যা নেই। আসবো, কাজ করবো, দুই-একটা ডায়লগ বলবো। কিন্তু এখন যখন নিয়মিত কাজ করছি তখন বুঝতে পারছি এখানে কতটা শেখার বিষয় আছে। যেকোনো চরিত্রে কাজ করতে গেলে প্রথমেই নিজের চরিত্র থেকে বের হতে হয়। সেই চরিত্রটিকে নিজের মধ্যে অনুধাবন করতে হয়। যখন যে চরিত্রে অভিনয় করি তখন সেই চরিত্র হয়ে উঠতে হয়।
কোনো প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়েছেন?
ইমু শিকদার: আমি যখন বড় বড় আর্টিস্টদের সাথে কাজ করি তখন প্রথমে কিছুটা ভয় লাগে। কিন্তু আমি চরিত্রের মধ্যে এমনভাবে ঢুকে যাই যে কারণে আর সমস্যা হয় না। এছাড়া পেছনে আমাকে নিয়ে কে কী সমালোচনা করলো, কে গালি দিলো সেসবে আমার কিছু যায় আসে না। এটা আমার রিজিক। এখান থেকে আমি উপার্জন করছি। নিজের দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আমি আমার কাজটা সঠিকভাবে করতে চাই।
করোনা জীবন-যাপন ও ক্যারিয়ারে কেমন প্রভাব ফেলেছে?
ইমু শিকদার: করোনার মধ্যে ক্যারিয়ারে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। অর্থনৈতিকভাবে একটু কষ্ট হয়েছে। আমি আসলে নিজেকে তৈরি করেছি। প্রচুর পড়াশোনা করেছি, সিনেমা দেখেছি, গান শুনেছি। এখন নিজের ভালোলাগা থেকে কবিতা লিখছি। করোনার কারণে কাজের যে গ্যাপ পড়েছিলো সে সময়টা আমি নিজেকে প্রস্তুত করার সুযোগ পেয়েছি।
এনএস/এম