ভারতের নারকোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরোর (এনসিবি) বিশেষ তদন্তকারী দলের (এসআইটি) ডাকে সাড়া দিতে পারলেন না শাহরুখ খানের ছেলে আরিয়ান খান। কারণ হিসেবে জানা গেছে জ্বরে ভুগছেন এই তরুণ।
এনসিবির এন্ট্রি ড্রাগ এজেন্সি জাহাজে মাদককাণ্ডের ঘটনায় আরিয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছিল। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এনসিবির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার সিং তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গেল শনিবার মুম্বাই পৌঁছান। এদিন আবরাজ মার্চেন্ট ও অচিত কুমারকেও ডাকা হয়েছিল। তারা দুজন হাজির হলেও অসুস্থতার কারণে আরিয়ান উপস্থিত হতে পারেননি। হাজিরার তারিখ পিছিয়ে দেওয়ারও আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
এনসিবি কর্মকর্তার বরাতে জানানো হয়, রোববার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত আরিয়ানের জবানবন্দি রেকর্ড করার কথা ছিল। কিন্তু শাহরুখপুত্র হাজির হননি। আরিয়ান জ্বরে ভুগছেন। এ কারণে তিনি এনসিবি কার্যালয়ে আসতে পারেননি।
মাদক মামলায় গ্রেপ্তারের পর গেল ২৯ অক্টোবর মুম্বাই হাইকোর্ট আরিয়ানকে মুক্তি দেয়। বন্দিদশার ইতি টানলেও জামিন খুব সহজ হবে না ২৩ বছর বয়সী এই তারকা সন্তানের। আদালতের বেশ কিছু নির্দেশ মেনে চলতে হবে তাকে। তিনি আর ১০ জনের মতো স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারবেন না। হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, শাহরুখপুত্রের জন্য পাঁচ পাতাজুড়ে রয়েছে নির্দেশ, যা মেনে চলতে হবে তাকে। শুক্রবার ভারতের মুম্বাই হাইকোর্টের পক্ষ থেকে আরিয়ানের জামিনের জন্য নানান শর্তারোপ করা হয়। এসব শর্ত না মানলে আরিয়ানের জামিন বাতিল হয়ে যাবে। বিস্তারিত ওই শর্তাবলি জেনে নিন-
১. এক লাখ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পাবেন আরিয়ান, সঙ্গে থাকতে হবে একজন সিউরিটি। উল্লেখ্য, আরিয়ানের সিউরিটি হয়েছেন জুহি চাওলা।
২. এই ধরনের কোনো পার্টির অংশ হতে পারবেন না আরিয়ান খান।
৩. এই মামলার সহ-অভিযুক্তর সঙ্গে কোনোরকম যোগাযোগ রাখা যাবে না। সুতরাং, ছেলেবেলার বন্ধু আরবাজের সঙ্গে কথা বন্ধ আরিয়ানের। এই মামলার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যোগাযোগ রয়েছে এমন কারও সঙ্গেই যোগাযোগ রাখা যাবে না।
৪. এনডিপিএস আদালতে পাসপোর্ট জমা দিতে হবে আরিয়ানকে, ছাড়া যাবে না দেশ। প্রয়োজনে নিতে হবে এনডিপিএস আদালতের অনুমতি।
৫. তদন্তের সঙ্গে জড়িত কোনো সাক্ষীকে প্রভাবিত করা বা তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টা থেকে বিরত থাকবে অভিযুক্ত।
৬. সংবাদমাধ্যম বা সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনোরকম মন্তব্য করা যাবে না।
৭. মুম্বাইয়ের বাইরে যেতে হলে এই মামলার তদন্তকারী অফিসারকে আগে থেকে জানাতে হবে এবং তার অনুমতি নিতে হবে।
৮. প্রতি শুক্রবার এনসিবির দপ্তরে হাজিরা দিতে হবে আরিয়ান খানকে। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত উপস্থিত থাকতে হবে।
৯. মামলার শুনানির দিন অবশ্যই আদালতে হাজিরা দিতে হবে।
১০. তদন্তে যোগ দিতে এনসিবি কর্মকর্তাদের ডাকে সাড়া দিতে হবে, তাদের সঙ্গে সবরকম সহায়তা করতে হবে।
১১. ট্রায়াল শুরু হলে কোনোভাবেই সেই প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করবার চেষ্টা করা যাবে না।
১২. উপরোক্ত কোনো শর্ত যদি অমান্য করা হয়, তাহলে এনসিবির পক্ষে এনডিপিএস আদালতে আবেদন জানানো যাবে অভিযুক্তর জামিন খারিজের জন্য।
সূত্র: এনডিটিভি
এনএস/টিআই