বাংলাদেশি যুবকের কাছে 'পতনের গোমর ফাঁস' করলেন রানু মণ্ডল!
ভারতের রানাঘাটের রানু মণ্ডলকে কেই বা না চেনে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অতি পরিচিত মুখ তিনি। কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকরের গান গেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার বদৌলতে রানাঘাটের স্টেশন থেকে বলিউডে পৌঁছে গিয়েছিলেন রানু মণ্ডল। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আবারও সেই স্টেশনেই ফিরতে হয়েছে তাকে। কাটাচ্ছেন মানবেতর জীবন।
গেল রোববার (১২ ডিসেম্বর) রানু মণ্ডলের সঙ্গে দেখা করেছেন বাংলাদেশি যুবক মাহসান। ভাইরাল এই গায়িকার সঙ্গে দেখা করতে কলকাতা থেকে রানাঘাটে গিয়েছিলেন তিনি। জানা গেছে, বুকের সমস্যা নিয়ে স্ত্রীসহ কলকাতায় চিকিৎসা নিতে গেছেন এই যুবক। চিকিৎসার উদ্দেশ্যে গেলেও তিনি বিভিন্ন ভাইরাল ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করছেন, ভিডিও বানাচ্ছেন। কয়েকদিন আগেই 'কাঁচাবাদাম' খ্যাত গায়ক ভুবন বাদ্যকরের সঙ্গেও দেখা করেছেন তিনি।
ভাইরাল হওয়ার পরবর্তী সময় অনেকটা স্বপ্নের মতো রানু মণ্ডলের কাছে। এক গানেই পরিচিতি পেয়েছিলেন সবার কাছে। রানু মণ্ডলের গানের গলা শুনে মুগ্ধ হয়েছিলেন সারা দুনিয়ার বাংলা ও হিন্দি ভাষাভাষী মানুষেরা। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে বিভিন্নজন সহায়তাও করেছেন রানু মণ্ডলকে। তাহলে এত টাকা কোথায় গেল?
রানু মণ্ডল বলেন, ‘হিমেশ আমাকে বলেছিলেন আমার জন্য একটা ফ্ল্যাট কিনে রাখবেন। কারণ মুম্বাইয়ে রেকর্ডিং করতে গেলে দু-তিন দিন থাকতে হয়। আবার রানাঘাটে আসতে হয়। এই ঘন ঘন আসা-যাওয়াটা সম্ভব নয় বলেই হিমেশ আমাকে ফ্ল্যাট দেবেন বলেছিলেন। ওখানে থেকে কাজ করার জন্য শুধু বাড়ি নয়, গাড়িও দেবেন বলে কথা দিয়েছেন হিমেশ!'
তিনি আরও জানান, 'হিমেশ আমাকে টাকা-পয়সা সবই দিয়েছে। আমি টাকা-পয়সার হিসাব জানি না। আমার ব্যাংকের হিসাব দেখে তপন।'
তপন কে? এ বিষয়ে রানুর ভাষ্য, তপন তার বন্ধুর মতো। ব্যাংকের টাকা-পয়সা আছে কি না সে বিষয়ে তপনই জানে। আমার সব কিছু দেখভাল করেছে সে। শুরু থেকেই সব কিছু তপনের কাছেই রয়েছে।'
মাহসান স্থানীয়ভাবে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন, তপন রানু মণ্ডলের কাছে কাউকেই ভিড়তে দিত না। যারাই রানু মণ্ডলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে আসত, তারা তপনের সঙ্গে যোগাযোগ করত। তপন যাদেরকে সুযোগ দিত, তারাই রানু মণ্ডলের সঙ্গে দেখা করতে পারত।
এলাকাবাসী জানায়, রানু মণ্ডলের নিজের মেয়েও তপনের কারণে রানাঘাটের ওই বাসায় এসে থাকতে পারেনি।
মাহসান বলেন, 'আমি যত দূর অনুমান করি, রানু মণ্ডলের এই পরিণতির নেপথ্যে রয়েছেন ঐ তপন, যিনি স্থানীয় শয়তান ক্লাবের মেম্বার। তিনি রানু মণ্ডলের ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অবশ্য রানু মণ্ডল তাকে ম্যানেজার বলেন না, বলেন বন্ধু।'
তিনি আরও বলেন, 'সে প্রথম প্রথম বিভিন্ন গানের জন্য বড় অঙ্কের পারিশ্রমিক দাবি করে বসত, যেটা আসলে সম্ভব ছিল না প্রযোজকের পক্ষে। কিংবা কোনো অনুষ্ঠানে গাইতে নিয়ে যেতে চাইলে তপনের সঙ্গে দামাদামি করতে শুরু করত। যার ফলে একসময় রানু মণ্ডলকে নিয়ে কাজ করতে চাইলেও তারা বিমুখ হতে শুরু করে। এবার রানু মণ্ডলের পড়তি অবস্থা, তাই সেই তপনও এখন কাছে ঘেঁষে না। মাঝেমধ্যে বাজার করে দিয়ে যায়। আর রানু মণ্ডলের অহংকারের যে কাহিনি তৈরি হয়েছিল, এসবের নেপথ্যেও ছিল তপনের শিখিয়ে দেওয়া।'
এনএস/এসকে
মন্তব্য করুন