সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের এবারের আসরে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। নেপালের দশরথের রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ৩-১ ব্যবধানে হারিয়েছে বাঘিনীরা।
খেলার শুরু থেকেই বাঘিনীদের দিকে নজর ছিল ফুটবল প্রেমীদের। তাদের দুর্দান্ত খেলায় দর্শকের উত্তেজনার পারদ বাড়তে থাকে। অবশেষে বিজয়ের হাসিতে মেতে ওঠে পুরো বাংলা।
এদিকে একমাত্র মেয়ে ইলহাম নুসরাত ফারুকীকে নিয়ে খেলা দেখেছেন তারকা নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। বাঘিনীদের জয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়েছিলেন তিনি। এবার নারী ফুটবল দলকে নিয়ে নতুন পোস্ট দিয়েছেন তিনি। যেখানে উঠে এসেছে তারে বেতন বৈষম্যের কথা।
তিনি লেখেন, মাঝেমধ্যে আমার মনে হয় আমরা সব কিছু এমন ভাবে ঠেলতে শুরু করি, যে তখন আর জিনিসপত্র অবজেক্টিভলি দেখার সুযোগ থাকে না। এই যেমন সালাউদ্দিন ভাই। ওনার বিতর্কিত শেষ নির্বাচন, সভাপতি পদে প্রায় চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত, অনেক সময়ই অপ্রয়োজনীয় এবং যুক্তিহীন কথা যেমন মেয়েদের বিয়ে দিতে সাহায্য করা, দৃষ্টিকটু রাগ-এ রকম আরও অনেক বিষয়েই সমালোচনা করা যেতে পারে। কিন্তু অনেক বছর আগ থেকেই এই মেয়েদের একসঙ্গে রেখে ট্রেনিং করানো এবং এদের একটা টিম হিসাবে গড়ে উঠতে সাহায্য করাটাকে অ্যাপ্রিশিয়েট না করা ঠিক হবে না। এমনকি উনাদের সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলন ও ফটোসেশন ডিজাস্টারকে সমালোচনা করলেও তাতে তাদের এই কৃতিত্ব আড়াল করার সুযোগ নেই। গাইস, প্লিজ লেটস গিভ দেম হোয়াট দে ডিজার্ভ।
তিনি আরও লেখেন, এখন যেটা দরকার সেটা হলো, এদের বেতন কাঠামো সম্মানজনক জায়গায় নেওয়া। এ বিষয়ে সবাই কথা বললে শুধু যে এই খেলোয়াড়দের জন্য ভালো হবে তা না, অন্য মেয়েরাও খেলায় আসতে উৎসাহিত হবে। এ ছাড়াও দেশের ভিতর মেয়েদের নিয়মিত টুর্নামেন্ট কেমনে খেলানো যায় এসব নিয়েও ভাবা যেতে পারে। জেলায় জেলায় ফুটবল করা যায় কেমনে দেখা যাইতে পারে। এমনকি গুলশান, বনানী, ধানমন্ডি, উত্তরা, মিরপুরের স্কুলগুলাতে কি হচ্ছে, ওখানকার মেয়েরা কি খেলতে চায়, চাইলে কীভাবে ওদের ইনক্লুড করা যায়, এ রকম নানা আইডিয়া নিয়ে ভাবেন। এই মনোযোগ আর জোয়ারটাকে পজিটিভলি কাজে লাগানো যায় কীভাবে সেটা ভাবি আসেন। ধন্যবাদ।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সাল থেকে প্রতিটি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে খেলছে বাংলাদেশ। প্রথম সাফল্য আসে ২০১৬ সালের আসরে। ওই বার বাঘিনীরা রানার্স আপ হয়েছিলেন। এবার এলো কাঙ্ক্ষিত সাফল্য। চ্যাম্পিয়নের শিরোপা নিজেদের ঘরে তুললেন সাবিনা খাতুন-কৃষ্ণা রানি সরকাররা।
সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে অপরাজিত থাকার পাশাপাশি ৫ ম্যাচ থেকে মোট ২৩ গোল আদায় করে নিয়েছিল বাঘিনীরা। বিপরীতে হজম করেছে মাত্র ১ গোল। সেটিও জমজমাট ফাইনালে।