বেলি ডান্স করায় স্কুলশিক্ষিকা আয়া ইউসুফকে তালাক দেন স্বামী (ভিডিও)
বেলি ড্যান্স সারা বিশ্বের মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয়। মধ্যপ্রাচ্যের এই শিল্পটি খুব সহজেই মানুষকে আকৃষ্ট করে। বেলি ড্যান্স শুধু দর্শকের নজরই কাড়ে না, শরীরের গঠন সুন্দর করতেও এই নাচ বেশ কার্যকর। তবে ফারাওদের যুগে এই নাচের উৎপত্তি হলেও এখনও জনসমক্ষে বেলি ডান্সের জন্য কখনো কখনো নারীকে তাচ্ছিল্য করার অভিযোগ ওঠে।
বেলি ডান্সের জন্য সমাজের মানদণ্ডে মাপার রীতি নতুন নয়। আর সেই মাপকাঠিতেই মাপা হয়েছিলো মিশরের স্কুলশিক্ষিকা আয়া ইউসুফকে। একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে বেলি-ড্যান্স করায় তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। এমনকি এ ঘটনায় আয়ার স্বামী তাকে তালাক দিয়ে ঘরছাড়া করেন।
আয়ার সেই ঘটনায় সে সময় নেটমাধ্যমে তুমুল চর্চা হয়েছে। একজন সহকর্মী অনুমতি ছাড়াই আয়ার নাচের রেকর্ড করেছিলেন। যেখানে দেখা যায়, স্কার্ফ এবং একটি দীর্ঘ-হাতার পোশাক পরে পুরুষ সহকর্মীদের পাশাপাশি নাচছেন সেই স্কুলশিক্ষিকা। অন্তর্জালে প্রকাশের পর দ্রুত ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে। ফলে মিশরীয় রক্ষণশীলদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম নেয়। নেটমাধ্যমে সমালোচকরা দাবি করেন, আয়ার এই আচরণ অত্যন্ত লজ্জাজনক।
বিগত কয়েক বছর ধরে দাকাহলিয়া গভর্নরেটের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছিলেন আয়া ইউসুফ। বেলি ড্যান্স ইস্যুতে সেখান থেকে তাকে বরখাস্ত করা হয়। একই সময়ে স্বামীর ঘর থেকেও বিতাড়িত হন। এমন পরিস্থিতিতে আত্মহত্যার কথাও ভেবেছিলেন সেই শিক্ষিকা। আয়ার ভাষ্য, তিনি শিক্ষার্থীদের সামনে নাচেননি। একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আনন্দ প্রকাশ করতেই নেচেছিলেন। তবে এ ঘটনার পর সারাজীবন না নাচার প্রতিজ্ঞা করেন তিনি।
সেই পরিস্থিতিতে আয়ার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মিশরের নারী অধিকার কর্মীরা। তারা জোর দিয়ে বলেছেন, আয়া কিছু ভুল করেননি, তিনি সমাজের গোঁড়ামির শিকার। এছাড়া আয়ার সমর্থনে এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতার রক্ষায়, অন্য একটি স্কুলের উপপ্রধান নিজের মেয়ের বিয়েতে নাচের ছবি নেট মাধ্যমে পোস্ট করেন।
ইজিপ্সিয়ান সেন্টার ফর উইমেনস রাইটসের প্রধান ড. নিহাদ আবু কুমসান, আয়াকে তার অফিসে চাকরির প্রস্তাব দেন এবং বেআইনিভাবে তাকে বরখাস্ত করার বিরুদ্ধে আইনি অভিযোগ দায়ের করতেও সাহায্যের হাত বাড়ান। স্থানীয় কর্তৃপক্ষও আয়াকে নতুন একটি স্কুলে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন।
মন্তব্য করুন