৭৮-এও চিরসবুজ শবনম
ঢাকাই চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী শবনমের জন্মদিন আজ (১৭ আগস্ট)। ৭৮ বছর বয়সে পা রেখেও চিরসবুজ এই অভিনেত্রী। ক্যারিয়ারে অসংখ্য সিনেমায় অভিনয় করে নিজেকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন তিনি। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও রয়েছে তার জনপ্রিয়তার ছাঁপ।
১৯৪০ সালের ১৭ আগস্ট ঢাকায় জন্ম নেন শবনম। অভিনেত্রীর আসল নাম ঝর্ণা বসাক। শুধু অভিনয় নয়, নাচেও বেশ পারদর্শী এই নায়িকা। শৈশবে বুলবুল ললিতকলা একাডেমি থেকে নাচ শেখেন।
এক অনুষ্ঠানে শবনমের নৃত্য দেখে তাকে সিনেমায় নাচের সুযোগ করে দেন বরেণ্য নির্মাতা এহতেশাম। সেই সঙ্গে আরও কিছু সিনেমায় ছোট চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগও পান তিনি। পরবর্তীতে ১৯৬১ সালে মুস্তাফিজ পরিচালিত ‘হারানো দিন’ সিনেমায় প্রথম নায়িকা হিসেবে অভিনয় শুরু করেন শবনম।
এ সিনেমাতেই ‘শবনম’ নামটি ধারণ করেন তিনি। সিনেমাটি তুমুল জনপ্রিয়তা পাওয়ার সুবাদে হয়ে ওঠেন দর্শকদের প্রিয় নায়িকা। এর পরের বছরই উর্দু সিনেমায় অভিষেক হয় তার।
‘চান্দা’ সিনেমায় অভিনয় করে তৎকালীন সমগ্র পাকিস্তানে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন শবনম। এরপর টানা নব্বই দশক পর্যন্ত কাজ করে গেছেন। মাঝে বাংলাদেশ হয়েছে স্বাধীন। কিন্তু পাকিস্তান কিংবা বাংলাদেশ, কোথাও শবনমের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি। ষাটের দশকে পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়িকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন তিনি। এ কারণে ১৯৬৮ সাল থেকে লাহোরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।
শবনম অভিনীত উল্লেখযোগ্য বাংলা সিনেমাগুলো হচ্ছে—‘আমার সংসার’, ‘এ দেশ তোমার আমার’, ‘আম্মাজান’, ‘কখনো আসেনি’, ‘জোয়ার ভাটা’, ‘নাচের পুতুল’, ‘রাজধানীর বুকে’, ‘সহধর্মিণী’ ইত্যাদি।
শবনম অভিনীত উর্দু সিনেমাগুলো হচ্ছে—‘আখেরি স্টেশন’, ‘আসরা’, ‘আনমল মোহাব্বত’, ‘আনারি’, ‘আনোখি’, ‘আয়না’, ‘আবশার’, ‘আখো আখো মে’, ‘ইন্তিখাব’, ‘কারাবান’, ‘ক্যয়সে কাহু’, ‘কসম আজ ওয়াক্ত কি’, ‘কাভি আলভিদা না ক্যাহনা’, ‘চান্দা’, ‘চালো মান গায়ে’, ‘জাঞ্জির’, ‘জাগির’, ‘তালাশ’, ‘তুম মেরে’, ‘দোস্তি’, ‘দিল্লাগি’, ‘দিল নাশিন’, ‘নয়া আন্দাজ’, ‘নারাজ’, ‘প্রীত না জানে রীত’, ‘পেহচান’, ‘বেগানা’, ‘বিন্দাস’, ‘রিশতা’, ‘হাম দোনো’, ‘শরিক-ই-হায়াত’, ‘শরাফত’, ‘সাগর’ ও ‘সমন্দার’।
পাকিস্তানের চলচ্চিত্র শিল্পে অসামান্য অবদান রাখায় ১২ বার দেশটির সম্মানজনক ‘নিগার’ পুরস্কার পান শবনম। এ ছাড়া ২০১৯ সালে ‘স্টাইল অ্যাওয়ার্ড’-এ আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয় তাকে।
মন্তব্য করুন