• ঢাকা মঙ্গলবার, ০১ অক্টোবর ২০২৪, ১৭ আশ্বিন ১৪৩১
logo

সেন্সরবোর্ড নিয়ে আপত্তি, পুর্নগঠন করার আহ্বান সংশ্লিষ্টদের

আরটিভি নিউজ

  ১৯ আগস্ট ২০২৪, ১৮:৩৬
সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে গত ১২ জুন তুমুল সমালোচনাকে পাশ কাটিয়ে গঠিত হয় অভিনয়শিল্পীবৃত্তে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সরবোর্ড। এর কদিন পরই সংস্থাটির ভাইস চেয়ারম্যান করে আনা হয় মো. আবদুল জলিলকে। এর আগে নিযুক্ত হওয়া সংস্থাটির অপর উপপরিচালক (সচিব) মো. মাইনউদ্দিন রয়েছেন বহাল তবিয়তে। এরফলে বিতর্কিত সরকারের আজ্ঞাবহদের হাতে রয়ে গেছে সেন্সরবোর্ড।

এরমধ্যে অরুণা বিশ্বাস দেশ ছেড়ে চলে গেলেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের বিরোধিতা করে প্রপাগান্ডায় অংশ নেওয়া সুজাতা আজিম, খোরশেদ আলম খসরু, পূর্ণিমা ও আজিজুল হাকিম আপাতত রয়েছেন লোকচক্ষুর আড়ালে। অপরদিকে রোকেয়া প্রাচী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থানে জনরোষে পতন হওয়া শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের প্রতি সমর্থনে রাজপথে রয়েছেন। এ অবস্থায় সেন্সরবোর্ড অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে।

জানা গেছে, গত ৮ আগস্ট নতুন সরকারের শপথ হলেও সেন্সরবোর্ড থেকে সরানো হয়নি স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা সরকারের অনুগত সংস্থাটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল জলিলসহ অপরাপরদের। এতে করে চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি থমকে গেছে। আর এ কারণে চলচ্চিত্র বোদ্ধা, প্রদর্শক সমিতি, পরিচালক ও প্রযোজকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

এ ব্যাপারে সেন্সরবোর্ড নিয়ে সরব সিনিয়র সাংবাদিক আহমেদ তেপান্তর বলেন, এটা দুঃখজনক কোনো এক্সপার্ট ছাড়াই এবার সেন্সরবোর্ড গঠন করা হয়েছে, যা কেবল চাটুকারিতাকেই ইঙ্গিত দেয়। বিগত সরকার চাটুকারিতা পছন্দ করতো বলেই একাধিক ব্যক্তিকে দিনের পর দিন সেন্সরবোর্ডে সদস্য করে রেখেছিলো। এ ছাড়া এখানে সিনেমাসংক্রান্ত কোনো আইডিয়া না থাকার পরও আমলাতান্ত্রিকতায় ছড়িয়ে আছে এ বোর্ড। ফলে এরা কেবল সরকারের আজ্ঞাবাহকের কাজ করেন, ফলে স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতারা বেকায়দায় পড়েন। বহু সিনেমা যাচ্ছেতাই নিয়মের দোহাই দিয়ে আটকে দেওয়া এ বোর্ডের চরিত্র। যেহেতু তার দিকে সবকিছুর পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে সে জায়গায় বোর্ডেও পরিবর্তন দরকার। এখানে এক্সপার্ট দিলে প্রযোজকরা মনখুলে লগ্নি করতে পারবেন, নির্মাতাও তার স্বাধীনতা পাবেন। সে অর্থে দর্শক সময়োপযোগী কনটেন্ট উপভোগের সুযোগ পাবেন।

প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন বলেন, বিগত ৭-৮ বছর ধরে দুঃখজনকভাবে প্রদর্শক সমিতির কাউকে কমিটিতে নেওয়া হয় না। অথচ কোন জাতীয় কনটেন্ট হলে চলতে পারে না পারে সেটা আমাদের থেকে কে বেশি বুঝবে। তাছাড়া বর্তমানে তারা যেভাবে ছবি আটকে দিচ্ছে তা হতাশার। যারা আটকে দিচ্ছে তারা নিজেরাও জানে না কেন আটকাচ্ছে। বোর্ডে এক্সপার্ট থাকা জরুরি। একই সঙ্গে আমলা নির্ভরতাও কমাতে হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রযোজক অভিযোগ করেছেন, বর্তমান কমিটি একদিকে অভিনয় শিল্পী অপরদিকে আমলা এই দুইয়ে মিলে একাকার। আমরা লগ্নি করি তাই সেখানে এতো আমলা থাকার কারণ দেখি না। বাস্তবে আমাদের এখানে স্বাধীনভাবে সিনেমা বানিয়ে দর্শকের কাছে পৌঁছে দিতে সেন্সরবোর্ড সবচেয়ে বড় বাধা। এই বাধা দূর করতে না পারলে ভালো কনটেন্ট দর্শক পাবে না। বিগত সরকারের সেন্সরবোর্ডকে আমলা নির্ভরতার করার কারণে অনেক প্রযোজক লগ্নি করা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এখানে সরকারের সমালোচনা করা যাবে না, পুলিশের সমালোচনা করা যাবে না। অথচ ওটিটিগুলোতে সেন্সর সিস্টেম না থাকায় সেগুলো দর্শক দেখতে পাচ্ছে, যত নিয়মের বালাই সব বড় পর্দার জন্য। বর্তমান সরকারের কাছে আহ্বান থাকবে সেন্সরবোর্ড পুর্নগঠন করে এ অবস্থার উত্তরণ ঘটনাবে।

এদিকে সেন্সরবোর্ডের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও সচিবের (উপপরিচালক) বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা স্বৈরশাসক আমলের বিরুদ্ধে এক ফ্রেমও নেগেটিভ ছাড় না দেওয়ার। এছাড়া সিনেমার টেকনিক্যাল দিক না বোঝার অভিযোগও তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে। তাদের মজ্জায় সরকার তোষামুদিতার কারণে বিভিন্ন সময় মোস্তফা সারোয়ার ফারুকী, খিজির হায়াতসহ একাধিক পরিচালক সমালোচনা করতে দেখা গেছে। আবার বহুল বিতর্কিত ‘এনিমেল’ বিনা কর্তনে ছাড় দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। তেমনি ‘তুফান’ এর মতো সিনেমার কর্তনের সুযোগ থাকলেও বিনাবাধায় সেন্সর দেওয়ার নজিরও রয়েছে সেন্সরবোর্ডের বিরুদ্ধে।

মো. সাইফুল্লাহর সময়ে ইতিহাস বিকৃতি অভিযোগ বিদ্ধ হওয়া ‘দামাল’ সিনেমাও বিনাকর্তনে ছাড় পেলেও অজানা কারণে এক বছর হয় আটকে আছে সমাজ সচেতনমূলক সিনেমা ‘কাঠগোলাপ’-এর সেন্সর।

মন্তব্য করুন

Radhuni
  • বিনোদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
সংবিধান পরিবর্তন করলে আপত্তি নেই: নুর
কারিনার যে বিষয়ে ঘোর আপত্তি সাইফের
ট্রাম্পের প্রচারের গান ব্যবহার আপত্তি অ্যাবার
জিয়াউর রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, মানিকের বিরুদ্ধে মামলা