নির্বাচন নিষিদ্ধসহ নায়ক সাইফ খানের ১৬ দাবি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থানের জেরে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে গণভবন থেকে নিরাপদ স্থানে চলে যান শেখ হাসিনা। তার দেশ ছেড়ে পালানোর পরই ভেঙে দেওয়া হয় সংসদ।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের অঙ্গনের মানুষ সংস্কারের কথা বলছেন। সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যখন সোচ্চার, ঠিক তখন চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নে ১৬ দাবি তুলেছেন এ সময়ের নায়ক সাইফ খান।
সিনেমা শিল্প নিয়ে সাইফ খান যেসব ভাবনার কথা তুলে ধরেছেন তা হলো— ১. সেন্সর সার্টিফিকেট সিস্টেম ২০২৪ অনুযায়ী বিশ্বমানের হতে হবে। ২. যেকোনো সিনেমাকে কেটাগরিভিত্তিক সার্টিফিকেট প্রদান করতে হবে। কারা দেখতে পারবেন, কারা পারবেন না সে অনুযায়ী। ৩. সেন্সর হওয়া প্রতিটা সিনেমাকে সর্বনিম্ন ১০ লাখ টাকার টিভি রাইটস দেবে রাষ্ট্রীয় টিভি বিটিভি। কোনো প্রযোজক অন্য কোথাও বিক্রি করতে পারলে এটা তার স্বাধীনতা এবং সরকারি একটি ওটিটি করতে হবে যার আলাদা সর্বনিম্ন ২০ লাখ পাবে প্রযোজক। এটিও বাইরে বিক্রির তার স্বাধীনতা থাকতে হবে। ৪. হলগুলোতে একটা সরকারি সেন্ট্রাল সার্ভার সিস্টেমে চলবে সিনেমা। যাতে ই-টিকিটিং সিস্টেম যুক্ত থাকবে ও একজন প্রযোজক স্বচ্ছভাবে জানতে পারবেন কোন হলে, কয়টা সময়, কয়জন দর্শক দেখছে ওনার ফিল্ম।
৫. যদি মিনিমাম গ্যারান্টি দিয়ে কোনো হল সিনেমা না নেয় তবে ৫০-৫০ করতে হবে প্রযোজকের সঙ্গে। ৬. প্রত্যেক প্রযোজকের ব্যাংক লোনের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। (সিনেমার মোট খরচের ৫০ শতাংশ, ওই সিনেমার বিপরীতে, যা সেন্সর সার্টিফিকেট পেলেই পাবে, যার সুদ হবে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ)।
৭. প্রতিটা জেলায় অন্তত একটা করে শিল্পকলা, নাট্যকেন্দ্র ও মিনিমাম ৫০০ সিটের সিনেমা হল করে দিতে হবে দেশের সংস্কৃতি রক্ষায়। এটা থাকবে সম্পূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে। ৮. পূর্বে যেসব হল মালিক সরকারি জায়গা পেয়েছিল হল করার জন্য, তারা যদি হল না চালাতে চায় তবে তা ক্রোক করে নতুন যারা নিতে ইচ্ছুক তাদের দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ৯. এফডিসি, কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত, সরকারি পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে সিনেমা শুটিংয়ের জন্য ভাড়া অর্ধেক করতে হবে (পর্যটন মৌসুম ছাড়া)। ১০. এফডিসির ক্যামেরা, লাইট ভাড়া, এডিটিং ও অন্যান্য খরচ অর্ধেক করতে হবে।
১১. এফডিসি কেপিআই ভুক্ত এলাকা হওয়ায় এর ভেতর যেকোনো রকম রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে এবং সব সমিতির নির্বাচন এফডিসিতে নিষিদ্ধ করতে হবে। ১২. এক মাসের মধ্যে প্রযোজক সমিতির সব মামলা প্রত্যাহার করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। ১৩. সিনেমাতে অগ্রিম অনুদান প্রথা বাদ দিয়ে, আলোচিত ও দর্শকনন্দিত সিনেমার প্রযোজককে ওই অর্থ অনুদান হিসেবে না বরং পুরস্কার হিসেবে দিতে হবে। বছরের হিট ৫ সিনেমার প্রযোজক ওই ওই পুরস্কার পাবেন। নতুন ও প্রতিভাবান ৫ জন পরিচালক আগের ন্যায় অনুদান পেতে পারে শর্ত সাপেক্ষে।
১৪. এফডিসিতে নিরাপত্তা বাড়াতে হবে এবং বহিরাগত প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে। বিটিভির মতো পাস সিস্টেম থাকতে পারে। ১৫. আমদানি করা সিনেমার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি ও ট্যাক্স দ্বিগুণ করতে হবে এবং কোনো সিনেমা হল দেশি সিনেমা বাদ দিয়ে আমদানি করা সিনেমা চালাতে পারবে না, এটি নিশ্চিত করতে হবে। ১৬. সিনেমা হল মালিকরা যাতে হল সংস্কার বা নির্মাণের জন্য একদম সহজ শর্তে ৪ শতাংশ হারে লোন পায় তা নিশ্চিত করতে হবে এবং ওই লোনের কিস্তি এক বছর পর থেকে নিতে হবে।
মন্তব্য করুন