ঢাবি-জাহাঙ্গীরনগরে গণপিটুনিতে হত্যা নিয়ে যা বললেন ফারুকী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে তোফাজ্জল নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে দেশ। এমন হত্যাকাণ্ডের নিন্দায় থেমে নেই দেশের শোবিজ অঙ্গনও। আলোচিত এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে কথা বলেছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সারোয়ার ফারুকী।
শুধু ঢাবির তোফাজ্জলের ঘটনাই নয়, আইনের ফাঁক-ফোঁকরে সারাদেশেই বাড়ছে মবজাস্টিস তথা এমন গণপিটুনির মতো ঘটনা। একই সঙ্গে এই প্রক্রিয়ায় ঘটছে একের পর এক হত্যাকাণ্ড। সাম্প্রতিক এ সকল ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন ফারুকী। জানিয়েছেন ‘মববাজি’ বন্ধ করার আহ্বান।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে ফারুকী এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, তুমি যদি স্বাধীনতার মর্ম না বোঝো, তাহলে তুমি স্বাধীনতার স্বাদ হারাবে। আব্বার কাছে শুনতাম, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অনেকের মধ্যেই জোশ চলে আসছিল যে সে-ই সব। সে নিজেই অভিযোগকারী, নিজেই বিচারক, নিজেই এক্সিকিউশনার। হাতে অস্ত্র আছে, অথবা আছে মবের শক্তি। সুতরাং মার, মেরে ফেল। ফল কি হয়েছিল আমরা জানি।
ফারুকী আরও লিখেছেন, আচ্ছা স্বাধীনতার পর না হয় একটা বিশৃঙ্খল অবস্থা ছিল, এমন কি যখন আওয়ামী লীগের কঠিন আঁটুনির ভেতর আটকা ছিল দেশ, তখনও কি আমরা বাড্ডার এক মাকে ছেলেধরা সন্দেহে মারি নাই? রংপুরে নামাজের পর এক মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষকে মেরে পুড়িয়ে দেই নাই?
তিনি লিখেছেন, আমি আশা করছিলাম, এই নতুন স্বাধীনতা প্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে নতুন দায়িত্বের ব্যাপারটা আমরা উপলব্ধি করব। আমাদের দিলে রহম জিনিসটা আসবে। একশজন মববাজি করতে আসলে দুইজন হলেও রুখে দাঁড়াবে। ঢাবি আর জাহাঙ্গীরনগরে কি এরকম চারজন ছিল না রুখে দাঁড়ানোর? এটা লজ্জার, বেদনার।
সবশেষ ফারুকী লেখেন, সবাই দায়িত্ব নিই চলেন। মববাজি বন্ধ করেন। ফ্যাসিবাদিদের ফাও আলোচনার বিষয় উপহার দেওয়া থেকে বিরত থাকেন, প্লিজ। আলোচনাটা থাকতে দেন রিফর্মে, ফ্যাসিবাদের বিচারে।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের সামনে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তোফাজ্জল ছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তি। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
আবার একইদিন বিকেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে মারধর করে হত্যা করা হয়েছে। শামীম মোল্লা জাবির ৩৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ছিলেন। শামীমকে পেটানোর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির হাতে তুলে দেন শিক্ষার্থীরা। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
আরটিভি /এএ /এসএ
মন্তব্য করুন