গুরু ছটকু আহমেদকে নিয়ে আবেগ-আপ্লুত শিষ্য মিশা
নায়ক হিসেবে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করলেও পরবর্তী সময়ে খলনায়ক হিসেবে জনপ্রিয় হন। সাধারণত খল অভিনেতাদের বাঁকা চোখে দেখা হলেও তার ক্ষেত্রে তেমনটা হয়নি। বর্তমানে তিনি ঢালিউডের প্রথম সারির খল অভিনেতা। বলা হচ্ছে মিশা সওদাগরের কথা। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে বড় পর্দায় দর্শক মাতাচ্ছেন এই অভিনেতা। এখন পর্যন্ত নয়শো পঞ্চাশটিও বেশি সিনেমায় অভিনয় করে রেকর্ড গড়েছেন তিনি।
১৯৯০ সালে ছটকু আহমেদ পরিচালিত চেতনা ও অমরসঙ্গী চলচ্চিত্র দুটিতে নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন মিশা সওদাগর। বলা চলে ছটকু আহমেদই তার চলচ্চিত্রের গুরু। আর তাইতো সেই গুরুর জন্মদিনে বেশ আবেগ-আপ্লুত এই অভিনেতা।
বাংলা চলচ্চিত্রের বর্ষীয়ান চিত্রনাট্যকার, পরিচালক ও প্রযোজক ছটকু আহমেদের জন্মদিন রোববার (৬ অক্টোবর)। ‘সত্যের মৃত্যু নেই’খ্যাত এই নির্মাতা বিশেষ এই দিনটিতে সবার ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন। সেই কাতারে আছেন মিশা সওদাগরও।
রোববার (৬ অক্টোবর) মিশা সওদাগর ছটকু আহমেদের সঙ্গে দুইটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। যেখানে তিনি ক্যাপশনে লিখেন, আমার বাবা আমার চলচ্চিত্রের বাবা। আজকে আমি মিশা সওদাগর হয়ে উঠতে পারতাম না যদি আমার জীবনে আমার বাবা ছটকু আহমেদ না থাকতেন।শুভ জন্মদিন বাবা শুভ জন্মদিন।
১৯৪৬ সালের ৬ অক্টোবর পুরনো ঢাকার নারিন্দায় ছটকু আহমেদের জন্ম। কিন্তু তার পৈতৃক ভিটা বিক্রমপুরে। তার বাবা শরফুদ্দীন আহমেদ ছিলেন সিভিল ডিফেন্সের ট্রেনিং অফিসার ও জোহরা শরফুদ্দীন ছিলেন নারায়ণগঞ্জ গার্লস স্কুলের শিক্ষিকা। বাবা-মার চাকরির সুবাদে ছটকুর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জে।
ছোট পর্দা দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেছেন ছটকু আহমেদ। ১৯৬২ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নিয়ে প্রথম নাটক পরিচালনা করেন তিনি। ১৯৭২ সালের ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমার সহকারী পরিচালক হিসাবে তার বড় পর্দায় যাত্রা শুরু হয়।
১৯৮২ সালে ‘নাত বৌ’ সিনেমার মধ্য দিয়ে একক পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে ছটকু আহমেদের। এতে অভিনয় করেন তখনকার সুপারহিট জুটি রাজ্জাক-ববিতা। এরপর ‘রাজদণ্ড’, ‘গৃহবিবাদ’, ‘চেতনা’, ‘মায়া-মমতা’, ‘সত্যের মৃত্যুর নেই’, ‘বুকের ভেতর আগুন’, ‘বুকভরা ভালোবাসা’, ‘মিথ্যার মৃত্যু’, ‘প্রতিবাদী মাস্টার’ ও ‘আজকের রূপবান’সহ ১৫টি সিনেমা পরিচালনা করেছেন তিনি। ।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ছটকু আহমেদ তিন শতাধিক সিনেমার কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ রচনা করেছেন। যার মধ্যে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছে ‘সত্য মিথ্যা’, ‘বাংলার বধূ’, ‘লালু মাস্তান’, ‘পিতা মাতা সন্তান’, ‘ঘাতক’ ও ‘চেতনা’। তিনি এজে মিন্টু পরিচালিত ‘সত্য মিথ্যা’ সিনেমার সংলাপ করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।
১৯৭৯ সালে ছটকু আহমেদ বিয়ে করেন মসরুরা আহমেদকে। তার স্ত্রী ‘বুক ভরা ভালোবাসা’ ও ‘বুকের ভেতর আগুন’ সিনেমার প্রযোজক। তাদের সংসারে চার মেয়ে। বড় মেয়ে সাদিয়া আহমেদ, মেজো মেয়ে ফারিয়া আহমেদ, সেজো মেয়ে শাহরিয়া আহমেদ ও ছোট মেয়ে নাজিয়া আহমেদ। তারা সবাই উচ্চশিক্ষিত।
আরটিভি /এএ / এএইচ
মন্তব্য করুন