বিজয় দিবসের বিশেষ নাটক ‘নিতুর ডায়েরি’
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধের গল্প নিয়ে নিমির্ত হয়েছে নাটক ‘নিতুর ডায়েরি’। দীপ মাহমুদের উপন্যাস ‘নিতুর ডায়েরি’ অবলম্বনে নাটকটি নির্মাণ করা হয়েছে। এটির চিত্রনাট্য লিখেছেন হাসি ইকবাল এবং পরিচালনা করেছেন সুজন বড়ুয়া।
নাটকটির গল্প আবর্তিত হয়েছে একটি ১২-১৩ বছরের কিশোরীকে কেন্দ্র করে। গল্পে দেখা যাবে, ১৯৭১ সালে নিতুর নিজ হাতে লেখা এই ডায়েরি একটি মুক্তিযুদ্ধ দলিল। এই ডায়েরিতে মুক্তিযুদ্ধের সম্পূর্ণ প্রেক্ষাপটই উঠে এসেছে। সে সময় নিতু প্রতিদিন ডায়েরি লিখত দিন ও তারিখ সহকারে। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার পরিবারে ও আশপাশে এমনকি দেশের মধ্যে কী ঘটত, সে সেটা খুব যত্ন সহকারে ডায়েরির পাতায় তুলে রেখেছিল।
ওবায়েদ ছিলেন নিতুর বাবা। তিনি কাপড়ের ব্যবসায়ী ছিলেন। তার দোকানে কাজ করত আমবেল। আমবেল সম্পর্কে তার ফুফাতো ভাই হয়। সে খুব রসিক ও বুদ্ধিমান ছেলে। নিতুর একমাত্র বড় ভাই ছিল আশু যাকে নিতু মিভাই বলে ডাকত। তার বড় বোন ছিল মিতু। যে ছিল অত্যন্ত চালাক ও সাহসী মেয়ে। মিতু যুদ্ধের সময় তার বড় ভাই আশু ও আমবেলের সহযোগিতায় পাশের মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে অস্ত্র চালানোর ট্রেনিং নিয়েছিল। নিতুর মা ছিলেন একজন গৃহিণী।
নিতুর ডায়েরিতে দুজন রাজাকার চরিত্র উঠে এসেছে একজন হলেন তার আপন মামা লতিফ ও এলাকার বড় ভাই বিলাত। লতিফ মামু একদিকে যেমনি ছিলেন নিতুর ডাক্তার অন্যদিকে ছিলেন শান্তি কমিটির নেতা। নিতুর বাবা ওবায়েদ ও বাড়ির কেউ তাকে পছন্দ করতেন না। আর বিলাত পাক মিলিটারিদের সহযোগী হিসাবে কাজ করতেন। বিলাত মেজর ইশতিয়াককে মিতুদের বাড়িতে নিয়ে আসে এবং মেজর ইশতিয়াক মিতুকে পছন্দ করে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। মিতু সে প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায় এবং বিয়ের আয়োজন করে বিয়ের রাতেই বিভিন্ন রঙ্গরস আর ভালোবাসার অভিনয় করে সে মেজর ইশতিয়াককে গুলি করে হত্যা করে।
নিতুর বাবা নাটকের শুরুর দিকেই মুক্তিযুদ্ধে যায়। গোটা নাটকের শেষের দিকে তিনি ফিরে আসেন। আশুও মুক্তিযুদ্ধে চলে যায় কিন্তু মায়ের সাথে দেখা করতে এসে বিলাতের দেওয়া খবরে মিলিটারিরা তাকে ঘিরে ধরে মায়ের সামনেই মেরে ফেলে। নাটকের শেষের দিকে নিতু বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে কিন্তু যুদ্ধের কারণে ডাক্তারের অভাবে তার সঠিক চিকিৎসা সম্ভব হয় না। ১৬ ই ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হয়ে যায়। চারিদিকে যখন উল্লাস আর আনন্দের ঘনঘটায় ঠিক সেদিনই চরম অসুস্থতায় নিতু মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
নাটকটির মূল চরিত্র নিতুর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মহিমান্বিতা সাজ। এছাড়া এতে আরও অভিনয় করেছেন অনুপ্রিয়া, দিলু মজুমদার, সাব্বির আহমেদ, রাজ সাগর, আরজুমান্দ আরা বকুল, শামীম হোসেন, আনোয়ার সাই, ম. ছালাম, সামস্ আরেফিন প্রমুখ।
আগামীকাল ১৬ ডিসেম্বর রাত ৯টা ২৫ মিনিটে বিটিভি চট্টগ্রাম ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে নাটকটি প্রচারিত হবে।
আরটিভি/এএ-টি
মন্তব্য করুন