• ঢাকা মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ পৌষ ১৪৩১
logo

স্ট্রোক করে চারদিন বাসায় পড়ে ছিলেন অঞ্জনা!

আরটিভি নিউজ

  ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭:৩৫
সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মুখ ভরা হাসি নিয়ে আর প্রিয় মানুষদের কাছে ফেরা হলো না জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমানের। এক সপ্তাহের বেশি সময় হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর অবশেষে না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন গুণী এই অভিনেত্রী। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১টা ৩৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। পরের দিন শনিবার এফডিসিতে প্রথম ও চ্যানেল আইয়ে দ্বিতীয় জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এদিকে অঞ্জনার মৃত্যুর পর সামনে আসছে একের পর এক প্রশ্ন। অভিনেত্রীর নিকটাত্মীয় সালমা হক শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রাতে আরটিভিকে বলেন, হঠাৎ করে দেখি যে আপার অনেক জ্বর আসছে। কাঁপুনি দিয়ে প্রচণ্ড জ্বর। আমি ও আমার ভাই মুগদা হাসপাতালের মেডিসিন ডাক্তার আবু রুহানিকে ফোন দিলাম। তাকে বললাম, অঞ্জনা আপা অসুস্থ, অনেক জ্বর আসছে, বাথরুমও করে দিয়েছে বিছানায়। তিনি বললেন তাড়াতাড়ি হাসপাতালে ভর্তি করো। পরে আপার পালিত ছেলে মনিকে বললাম যে বাবা তুমি ভর্তি করো। সে বললো না কিছু হবে না, ঠিক হয়ে যাবে। আম্মুর এরকম হয়েছে অনেকবার উত্তরায় থাকতে, ঠিক হয়ে যাবে। আমি চারদিনই এসে আপাকে এমন অবস্থায় পেয়েছি যে বিছানায় বাথরুম করে দিয়েছে। আমি এসে এসে আবার স্যুপ খাইয়ে দিয়ে গেছি। পরে আমি হাত ধরে দেখলাম যে হাত ধরলে নিচে পরে যায়। তখন ভাবলাম হয়তো স্ট্রোক করেছে।

তিনি বলেন, বাসার তিনজন কাজের লোক বলল আপা উনি তো চার দিন ধরে বিছানায় বাথরুম করতেছে। তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান। ছয়দিন তিনি বিছানায় পরে ছিলেন। হয়তো তার ডেঙ্গুও হয়েছিল। আমার মনে হয় ডেঙ্গু থেকে তার সমস্যা হয়েছে। সেই সঙ্গে স্ট্রোক করেছে।

সালমা আরও বলেন, আসলে আপার সঙ্গে কি হয়েছে তা ঠিক আমি আর বলতে পারছিনা। মনি ছোট মানুষ, তাই হয়তো বোঝেনি। না হলে আগেই হাসপাতালে ভর্তি করা হতো। পরে আমি তার মেয়ে জামাই রিপনকে বললাম। তারপর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

জানা গেছে,জানা গেছে, ১৫ দিন ধরে অঞ্জনা অসুস্থ। শুরুতে তার জ্বর ছিল। সারা শরীর কেঁপে জ্বর আসত। একটা সময় ওষুধ খেয়েও কাজ হচ্ছিল না। শেষে জানা যায় তার রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

প্রসঙ্গত, নায়িকা অঞ্জনা বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বেশ সুপরিচিত মুখ ছিলেন। নৃত্যশিল্পী থেকে নায়িকা হয়ে সর্বাধিক যৌথ প্রযোজনা এবং বিদেশি সিনেমায় অভিনয় করা একমাত্র দেশীয় চিত্রনায়িকাও তিনি।

‘দস্যু বনহুর’ দিয়ে শুরু। ১৯৭৬ সালের এই সিনেমার পর টানা কাজ করেন। এ পর্যন্ত তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। ‘পরিণীতা’ ও ‘গাঙচিল’-এ অভিনয়ের জন্য দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন। পাশাপাশি তিনবার পেয়েছেন বাচসাস পুরস্কার।

ঢাকাই সিনেমার নায়করাজ রাজ্জাকের সঙ্গে ৩০টি সিনেমাতে অভিনয় করেছেন অঞ্জনা। এর মধ্যে ‘অশিক্ষিত’, ‘রজনীগন্ধা’, ‘আশার আলো’, ‘জিঞ্জির’, ‘আনারকলি’, ‘বিধাতা’, ‘বৌরানী’, ‘সোনার হরিণ’, ‘মানা’, ‘রাম রহিম জন’, ‘সানাই’, ‘সোহাগ’, ‘মাটির পুতুল’, ‘সাহেব বিবি গোলাম’ ও ‘অভিযান’ উল্লেখযোগ্য।

তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য কিছু সিনেমা হলো মাটির মায়া (খান আতাউর রহমান), অশিক্ষিত (আজিজুর রহমান), চোখের মণি ও সুখের সংসার (নারায়ণ ঘোষ মিতা), জিঞ্জির, অংশীদার ও আনারকলি (দিলীপ বিশ্বাস), বিচারপতি (গাজী মাজহারুল আনোয়ার), আলাদীন আলীবাবা সিন্দাবাদ (শফি বিক্রমপুরী), অভিযান (নায়করাজ রাজ্জাক), মহান ও রাজার রাজা (আলমগীর কুমকুম), বিস্ফোরণ (এফ আই মানিক), ফুলেশ্বরী (আজিজুর রহমান), রাম রহিম জন (সত্য সাহা), নাগিনা (মতিউর রহমান বাদল), পরীণিতা (আলমগীর কবির) প্রভৃতি।

আরটিভি /এএ


মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • বিনোদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বিয়ের জন্য হিন্দু থেকে হয়েছিলেন মুসলিম
‘বেঁচে থাকা অঞ্জনাদের প্রতিদিন মৃত্যু হয়, মরার পর খবর হয়’
সবাইকে কাঁদিয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন অঞ্জনা
নায়িকা অঞ্জনার মৃত্যু নিয়ে রহস্য, শরীরে ছিল আঘাতের চিহ্ন