আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের চলে যাওয়ার ছয় বছর আজ
দেশের কিংবদন্তি সংগীত পরিচালক, গীতিকার, সুরকার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। যার অসংখ্য কালজয়ী গান দাগ কেটে আছে শ্রোতাদের মনে। যা চাইলেও ভুলে যাওয়া কিংবা মুছে ফেলা সম্ভব নয়।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) সেই কিংবদন্তির চলে যাওয়ার ছয় বছর পূর্ণ হলো। ২০১৯ সালের আজকের এই দিনে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বুলবুল। রাজধানীর আফতাবনগরে নিজ বাসায় ৬৩ বছর বয়সে মারা যান তিনি।
১৯৭০ সাল থেকে আমৃত্যু সংগীতের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে ছিলেন বুলবুল। ১৯৭১ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তিনি। যুদ্ধ থেকে ফেরার পর টানা দেড় দশক শুধু দেশের গানই তৈরি করেছেন এই কিংবদন্তি। ক্যারিয়ারে সাড়ে তিনশ গানের সংগীত পরিচালক, গীতিকার ও সুরকার বুলবুল। কর্মময় জীবনে তার প্রতিটি সৃষ্টিকর্মে উঠে এসেছে দেশ, মাটি ও মানুষের কথা।
১৯৫৭ সালের ১ জানুয়ারি ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন বুলবুল। তার বাবা ওয়াফিজ আহমেদ এবং মা ইফাদ আরা নাজিমুন নেসা। ঢাকার আজিমপুরের ওয়েস্ট এন্ড হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন এবং শিক্ষাজীবনে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ১৯৭০ সালের শেষ লগ্ন থেকে আমৃত্যু বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পসহ সংগীত শিল্পে সক্রিয় ছিলেন তিনি।
১৯৭৮ সালে ‘মেঘ বিজলি বাদল’ সিনেমায় সংগীত পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন বুলবুল। স্বাধীনভাবে গানের অ্যালবাম তৈরি করেছেন। তিন দশকেরও বেশি দীর্ঘ ক্যারিয়ারে বহুসংখ্যক চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করেছেন তিনি।
এর মধ্যে ‘নয়নের আলো’, ‘দেশপ্রেমিক’, ‘প্রেমের তাজমহল’, ‘আম্মাজান’, ‘ইতিহাস’অন্যতম। সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা, সৈয়দ আব্দুল হাদী, এন্ড্রু কিশোর, সামিনা চৌধুরী, খালিদ হাসান মিলু, আগুন, কনকচাঁপাসহ বাংলাদেশি জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীদের নিয়ে কাজ করেছেন বুলবুল।
‘সব কটা জানালা খুলে দাও না’, ‘সেই রেললাইনের ধারে’, ‘ও মাঝি নাও ছাইড়া দে ও মাঝি পাল উড়াইয়া দে’, ‘সুন্দর সুবর্ণ তারুণ্য লাবণ্য’র মতো জনপ্রিয় দেশাত্মবোধক গানগুলোতে তার দেওয়া সুর বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে স্পন্দন তুলবে চিরদিন।
শুধু গান নয়, অভিনয়েও নাম লেখিয়েছিলেন তিনি। এ কিউ খোকন পরিচালিত ‘গুরু ভাই’সিনেমায় দেখা গেছে তাকে। এতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি। সংগীতে অবদানের জন্য বুলবুল রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং রাষ্ট্রপতি পুরস্কারসহ অন্যান্য অসংখ্য পুরস্কার পান এই কিংবদন্তি।
আরটিভি/এইচএসকে/এস
মন্তব্য করুন