ঢালিউড, বলিউড কিংবা টালিউড— বলা যায়, সব ইন্ডাস্ট্রির তারকাই প্রাণীপ্রেমী। পশু-পাখিদের প্রতি কোনো অবিচার মেনে নিতে পারেন না তারকারা। তাই প্রাণীদের প্রতি করা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদও করতে দেখা যায় তাদের। এবার উবারের ‘পেট-ফ্রেন্ডলি’ পরিষেবার গলদ প্রকাশ্যে আনলেন কলকাতার অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি।
মূলত উবারের অসংবেদনশীল নীতি নিয়ে সরব হয়েছেনদিল্লির একটি ফাউন্ডেশনের কর্ণধার চিত্রাঙ্গদা সিং। কারণ, উবারের নতুন ‘উবার পেট’ পরিষেবার মাধ্যমে পোষ্যদের সঙ্গে নিয়ে যাতায়াত করা গেলেও সেজন্য প্রায় তিনগুণ বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে! যেখানে সাধারণ ৫ কিলোমিটার যাত্রার জন্য উবার ১৫০ টাকা ভাড়া চেয়েছিল, সেখানে ‘উবার পেট’র জন্য ৪৮৭ টাকা ধার্য করা হয়!
জানা গেছে, ছয়টি কুকুরছানা করে একটি পশু হাসপাতালে যাওয়ার জন্য ‘উবার গো’ বুক করেছিলেন চিত্রাঙ্গদা। কুকুরছানাগুলোর মধ্যে একটির অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল্য। তাই দ্রুত চিকিৎসার জন্য যাওয়া জরুরি ছিল।
ক্যাব আসার পর কুকুরছানাগুলোকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা শুনে চালক রাইড বাতিল করতে বলেন এবং দাবি করেন, তাকে আগে থেকে জানানো হয়নি যে গাড়িতে কুকুরছানা থাকবে। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আমি এই রাইড নেব না। কুকুর থাকলে আপনার উবার পেট বুক করা উচিত ছিল!
এখানে সমস্যা হলো, ‘উবার পেট’ পরিষেবা সম্পর্কে তখনও জানা ছিল না চিত্রাঙ্গদার। বাচ্চাগুলোকে জরুরি চিকিৎসা সেবা দেওয়ার বিষয়টি চালককে বোঝানোর চেষ্টা করলেও চালক একেবারে অনড় থাকেন। পাশাপাশি জোর করে কুকুরছানাগুলো গাড়ি থেকে নামিয়ে দিতে বলেন।
এই অপমানজনক পরিস্থিতির পর চিত্রাঙ্গদা দ্রুত ‘উবার পেট’ বুক করার চেষ্টা করেন। কিন্তু এই পরিষেবার অস্বাভাবিক বেশি দাম দেখে ভীষণ হতবাক হন তিনি। ছোট্ট দূরত্বের জন্য যেখানে সাধারণ ক্যাবের ভাড়া ১৫০ টাকা সেখানে ‘উবার পেট’র জন্য চাওয়া হয় ৪৮৭ টাকা।
এ ছাড়া উবারের অ্যাপে পেট-ফ্রেন্ডলি ক্যাবের সঠিক আকার বা গাড়ির অভ্যন্তরীণ বিন্যাস সম্পর্কেও কোনো তথ্য ছিল না। ফলে চিত্রাঙ্গদার মনে প্রশ্ন জাগে— এই পরিষেবা কি আদৌ কার্যকর? নাকি শুধুই ব্যবসার নতুন কৌশল?
চিত্রাঙ্গদার পোস্টটি নেটদুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে তা শেয়ার করে তীব্র প্রতিবাদ জানান স্বস্তিকা। সেখানে অভিনেত্রী লেখেন, পোষ্যপ্রেমীদের জন্য পরিষেবা চালু করলে সেটা সবার জন্য সহজলভ্য হতে হবে। শুধু টাকা কামানোর জন্য ‘পেট-ফ্রেন্ডলি’ নাম দিয়ে পরিষেবার দাম তিনগুণ বাড়িয়ে দিলেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না! উবার, তোমাদের নীতি পরিষ্কার করো!
স্বস্তিকার এই পোস্টের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেটিজেনদের চর্চা শুরু হয়। এরপর থেকে উবারের এমন আচরণের বিরুদ্ধে সরব হন অনেক পশুপ্রেমী ও সাধারণ মানুষ। প্রশ্ন ওঠে, উবার কি সত্যিই পোষ্যদের স্বাচ্ছন্দ্যের কথা ভাবে, নাকি এটি শুধুই আরও বেশি ভাড়া নেওয়ার একটি কৌশল?
আরটিভি/এইচএসকে