বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন-২০১৯
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের ফ্যাক্টর
অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ। অবশেষে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ এবং ফলাফল ঘোষণার মধ্যে দিয়ে শেষ হলো বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বিবার্ষিক নির্বাচন। এবারের নির্বাচনে মিশা-জায়েদ পরিষদ পূর্ণ প্যানেল নির্বাচিত হয়েছে। নির্বাচনে প্রথমবার কোনও নারী প্রার্থী সভাপতি পদে নির্বাচন করেছেন। ঢাকাই সিনেমার প্রিয়দর্শিনী নায়িকা মৌসুমী স্বতন্ত্র দাঁড়িয়ে মিশা সওদাগরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। শুরুতে একটি তারকা বহুল প্যানেলের ঘোষণা দিয়েছিলেন মৌসুমী।
অথচ কোনও এক অজানা কারণে নির্বাচনে তার প্যানেলের হয়ে লড়তে কাউকেই পাশে পাননি। তার প্যানেলের সদস্যরা কেউই মৌসুমীর ফোন কল রিসিভ করছিলেন না। এমন পরিস্থিতিতে শুরুতেই হোঁচট খান 'কেয়ামত থেকে কেয়ামত' খ্যাত নায়িকা। সিদ্ধান্ত নেন একাই নির্বাচন করবেন। আর করলেনও ঠিক তাই। মৌসুমীর এই সাহসের সাধুবাদ জানিয়েছেন মিশা সওদাগর।
---------------------------------------------------------------
আরো পড়ুন: আবারও সভাপতি মিশা-সম্পাদক জায়েদ, পুরো প্যানেল বিজয়ী
---------------------------------------------------------------
নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর এই খলঅভিনেতা বলেন, জয়-পরাজয় বড় কথা নয়। দিনের শেষে সবাই আমরা শিল্পী। একটি পরিবারের সদস্য সবাই। নির্বাচনে একা লড়াই করে মৌসুমী যে সাহস দেখিয়েছে তা প্রশংসার দাবি রাখে। মৌসুমীর জন্য শুভ কামনা সব সময়।
এবারের নির্বাচনে অন্যতম বড় ফ্যাক্টর ছিলেন সহ-সভাপতি পদের দুই প্রার্থী মনোয়ার হোসেন ডিপজল এবং রুবেল। দুজনেই চলচ্চিত্রের মানুষের খুব কাছের। ইন্ডাস্ট্রির যেকোনো মানুষের বিপদে তারা পাশে থাকেন। নিরবে-নিভৃতে সহযোগিতা করেন। সুতরাং এই দুই তারকা অভিনেতা মিশা-জায়েদ পরিষদে নির্বাচন করতে রাজি হওয়ার পরেই নির্বাচনের হিসেব-নিকেশ অনেকটা বদলে যায়। ডিপজল-রুবেল দুই বন্ধুর বিপরীতে দুজন প্রার্থী পাওয়া কঠিন বিষয়। তা এই দুজনের বিপরীতে নানা শাহ'র করুণ পরাজয়ই বলে দেয়।
অন্যদিকে গেল দুই বছরে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বকালীন সময়ে জায়েদ খান সিনিয়র-জুনিয়র শিল্পীদের কতটা কাছে পৌঁছাতে পেরেছেন তা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার ছিল। জায়েদ খানের সঙ্গে কে এই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তা নিয়ে অনেক জল্পনা-কল্পনা চলে। মৌসুমীর প্যানেল থেকে এই পদে নায়ক সাইমন সাদিকের নাম এলেও তিনি নির্বাচন করবেন না বলে জানান। তবে এক সময়ের আলোচিত ভিলেন ইলিয়াস কোবরা জায়েদকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে সাধারণ সম্পাদক পদে দাঁড়ান। সেখানে জায়েদের ২৮৪ ভোটের বিপরীতে কোবরা পান ৬৮ ভোট। ফলাফল পরিষ্কার।
নির্বাচনে অন্যান্য পদে শক্ত প্রার্থী না থাকায় মিশা-জায়েদ প্যানেলের একমাত্র দুঃশ্চিন্তার কারণ ছিলেন মৌসুমী। দিন শেষে মূল আলোচনা ছিল একটাই কে হবেন সভাপতি। মিশা-জায়েদ প্যানেলের সব প্রার্থীর একটাই চাওয়া ছিল মিশা যেন পাস করেন। ফলে অনেকেই নিজেদের জন্য ভোটই চাননি। তারা মিশার জন্য ভোট চেয়েছেন। সিনিয়র অনেক খ্যাতিমান শিল্পীরাও সামনে না এসে মিশা-জায়েদ প্যানেলের হয়ে কাজ করেছেন। আর এই জায়গাটা মৌসুমীর পরাজয়ের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
নায়ক রুবেল তো ঘোষণাই দিয়ে বসেন, মিশা যদি পরাজিত হন তিনি পাস করলেও পদত্যাগ করবেন। প্যানেলের অন্য প্রার্থীরাও রুবেলের কথার সমর্থন দেন।
এম/জেবি
মন্তব্য করুন