বাবাকে নিয়ে লেখা
‘একটি ফোন কলে আমার পুরো পৃথিবীটা ভেঙে চূর্ণ-বিচূর্ণ’
পরের দিন ফ্লাইট। নেপালে যাবো নতুন সিনেমার শুটিং। প্রচন্ড ব্যস্ততায় সময় কাটছে পুরো এক সপ্তাহ থেকে, স্ক্রিপ্ট প্রাক্টিসিং থেকে শুরু করে পোশাক পরিচ্ছদসহ আরও অনেক কিছু নিয়েই। ২০১৯ এর প্রথম ক্যামেরার সামনে যাবো আমার সিনেমা রিলিজ হওয়ার পরের প্রথম শুটিং শুরু হতে যাওয়া সিনেমা অন্যরকম এক্সাইটমেন্ট নিয়ে প্রিপেয়ারড হচ্ছিলাম।
খুব ক্লান্ত শ্রান্ত হয়ে বাসায় ঢুকেছি পরেরদিন যেহেতু দেশের বাইরে যাবো। অনেক দিনের জন্য তাই যতটুকু গুছিয়ে নেয়া যায়, ঠিক সেই সময়ে একটি ফোন কলে আমার পুরো পৃথিবীটা ভেঁঙ্গে চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে গেল। এই অনুভূতি বোঝানোর নয়, এই যে সময়টা এটা বেখ্যাতিত ঠিক সেই সময়টায় যখন একটি মেয়ে জানতে পারে তার পুরো পৃথিবী তার কাছ থেকে অনেক দুরে চলে গেছে।
যাকে আর কখনও সে বাবা বলে ডাকতে পারবে না, ছুঁয়ে দেখতে পারবে না, সামান্য অভিমান আর কষ্টে তাকে জড়িয়ে ধরে বলতে পারবেনা বাবা আমার ভালো লাগছে না, কথায় কথায় রাগ অভিমান জানানোর আর জমানোর বাবাটা আর নেই। এক নিমিষেই সবকিছু কিভাবে নিঃশ্বেষ হয়ে যায় এই প্রথম তার সাথে পরিচিত হলাম আমি। এবং মেয়েটার এই প্রথম এতীম শব্দটার সাথে পরিচিত হওয়া।
আমার বাবা প্রচন্ড অভিমানি ছিলেন, বাবা’র সবচেয়ে আদরের মেয়েটাকেও বাবা বলে যেতে পারেনি তার অজস্র অভিমানে ভরা কথাগুলো। তার ভরাট কন্ঠটাও শুনতে পারিনি আমি অনেক অনেকদিন। তিনিই তো ছিলেন আমার সবকিছু যাকে শেষ দেখাটাও আমি দেখতে পারিনি।
সবকিছুই তখন শান্ত ধীর স্থির। ঠিক আজকের মতোন। বাবা কে কখনো বাবা দিবসের শুভেচ্ছা জানানো হয়নি। তুমিই শিখিয়েছিলে বাবা অন্যের খুশিতেই নিজের আনন্দের পরিমাণটা অনেক বেশি।
অনুলিখন- এ এইচ মুরাদ
এম
মন্তব্য করুন