‘বাংলার গায়েন’র পথে হাঁটছে ‘সারেগামাপা’সহ একাধিক রিয়েলিটি শো
করোনাকালে সংকটে পড়েছেন সঙ্গীত অঙ্গনের মানুষেরা। বিশেষ করে যেসব শিল্পী কনসার্ট বা এলাকা ভিত্তিক ছোট ছোট অনুষ্ঠানে গান গেয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন, এখন ভীষণ সংকটে তারা। এমন একটি সময়ে জনপ্রিয় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভি বাংলার আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ফোক গানগুলো নিয়ে আয়োজন করেছে লোকসঙ্গীতের প্রতিযোগিতা ‘বাংলার গায়েন’। করোনার কারণে এই আয়োজনটির প্রাথমিক বাছাই পর্ব চলছে অনলাইনে। তবে মূলপর্ব সরাসরি টেলিভিশনে অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে মহামারির এই সময়ে সঙ্গীতের বেশির ভাগ অনুষ্ঠান বন্ধ ছিল। আরটিভির এই রিয়েলিটি শো শুরু পর অনেকেই হাঁটছেন একই পথে। এরই মধ্যে ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল জি-বাংলাও তাদের সারেগামাপা ২০২০ অনুষ্ঠানটির প্রাথমিক বাছাই অনলাইন প্ল্যাটফর্মে করছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের গানের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ধ্রুব মিউজিক স্টেশন (ডিএমএস) এ চলছে ‘ধ্রুব মিউজিক আমার গান’নামে একটি প্রতিযোগিতা। অন্যদিকে সিলন চা’র সৌজন্যে গানের লিরিক প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। সেখানে গীতিকার বাছাই করা হবে। এছাড়া আরও একাধিক প্রতিষ্ঠান সঙ্গীতের নানা অনুষ্ঠানের পসরা সাজিয়েছে।
এ ধরনের আয়োজন করোনার এই সংকটে নতুন প্রতিভা খুঁজতে পাশাপাশি শিল্পী-মিউজিশিয়ানদের অর্থ-কষ্ট দূর করতে সহায়ক হবে বলে মত দিয়েছেন মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির বোদ্ধারা।
বাংলার গায়েন-এর অন্যতম বিচারক খ্যাতিমান সঙ্গীত পরিচালক শওকত আলী ইমন বলেন, এটা সত্যিই এক অসাধারণ উদ্যোগ। আরটিভির সিইও সৈয়দ আশিক রহমান আমাকে জানালেন এমন একটি কাজ করতে চাইছি। আমি আইডিয়াটা শুনেই অনুষ্ঠানটির সঙ্গে থাকতে রাজী হয়ে যাই। করোনার এই সংকটে অনেকেই ঘরবন্দি জীবনে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন এই শিল্পীদের আয়োজনটি ভালো কিছু বয়ে আনবে। সারাদেশ থেকে প্রতিভাবান শিল্পীদের তুলে আনতে পারবো আশা করি। আর ‘বাংলার গায়েন’ রিয়েলিটি শো আমার কাছে মনে হয় সারাবিশ্বের মধ্যে পাইওনিয়ার। এই প্রতিযোগিতার পর অনেকেই ভিন্ন ভিন্নভাবে গান নিয়ে কাজ শুরু করেছে। ‘বাংলার গায়েন’র জন্য আমার শুভ কামনা।
আয়োজনটি নিয়ে জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী আসিফ আকবর বলেন, বর্তমান সময়ে স্বল্প উপার্জনের বাউলরা আছেন মহা বিপদে। এই সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় সব ডিজিটাল প্লাটফর্মগুলোর জন্য আরটিভির বাংলার গায়েন হতে পারে একটি রোল মডেল। আরটিভি রিয়্যালিটি শো এবং নানা মাত্রিক সঙ্গীত বিষয়ক অনুষ্ঠান তৈরি করে তারা সংস্কৃতিতে গতি ধরে রাখার চেষ্টায় আছেন। আরটিভির মতো সবাই এগিয়ে আসলে আপাতত করোনা সংকট মোকাবিলায় কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলতে পারে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আরটিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আশিক রহমান বলেন, মহামারি করোনার ফলে প্রতিটি সেক্টরের মানুষ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এমন সময় দেশের বাউল শিল্পীদের জন্য কিছু একটা করার ভাবনা আসে। তখনই সিদ্ধান্ত নিলাম তাদের নিয়ে একটি রিয়েলিটি শো শুরু করা যাক। সেখান থেকেই শুরু। আরটিভি দেশের হাজার বছরের সংস্কৃতি বুকে ধারণ করে প্রতিটি আয়োজন করে থাকে। ‘বাংলার গায়েন’ তেমনি একটি আয়োজন। আমাদের পর অনেকেই এ ধরনের আয়োজন শুরু করেছে। আমি মনে করি এটা আমাদের সঙ্গীতের জন্য শুভ বার্তা। সংকটে কাউকে না কাউকে তো এগিয়ে আসতেই হবে। আমরা সেই কাজটি করার চেষ্টা করেছি।
এম
মন্তব্য করুন