অর্থহীনের নতুন সদস্যের নাম ঘোষণা
দেশের জনপ্রিয় রক ব্যান্ড ‘অর্থহীন’-এ স্থায়ী সদস্য হিসেবে যুক্ত হল জাহিন রাশিদের নাম। এর আগে তিনি অস্থায়ী সদস্য হিসেবে ব্যান্ডে কাজ করছিলেন। সম্প্রতি ব্যান্ড ম্যানেজার টিটু বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
এক বার্তায় অর্থহীনের পক্ষ থেকে বলা হয়, জাহিন রাশিদ এখন থেকে অর্থহীনের নতুন সদস্য হিসেবে যুক্ত হয়েছেন। তিনি এখন থেকে স্থায়ীভাবে গিটার, কিবোর্ড, সেতার ও বাঁশি বাজাবেন। আমাদের পক্ষ থেকে তার জন্য শুভকামনা।
ব্যান্ডের বর্তমান লাইনআপ: সাইদুস সালেহীন সুমন, মার্ক ডন, মহান ফাহিম ও জাহিন রাশিদ।
প্রসঙ্গত, ‘অর্থহীন’ ব্যান্ডের দলনেতা সাইদুস সালেহীন সুমন বর্তমানে রয়েছেন থাইল্যান্ডে। সেখানে গেছেন নিয়মিত চেকআপের জন্য। এছাড়া ব্যান্ডটি তাদের ফিনিক্সের ডায়েরির সিক্যুয়েল অ্যালবাম ‘ফিনিক্সের ডায়েরি-২’ নিয়ে এই মুহূর্তে ব্যস্ত সময় পার করছে।
মন্তব্য করুন
আন্দোলন থেকে পাঠ্যবইয়ে র্যাপার হান্নান ও সেজান
গেল বছর স্বৈরাচারী সরকারের পতনের জন্য ছাত্র-জনতা মাঠে নেমেছিল। জুলাইয়ের আন্দোলনে উত্তাল ছিল সারা দেশ। তবে সেই আন্দোলনেও দেখা গিয়ে ছিল বিভক্তি। দেশের বেশির ভাগ সংগীতশিল্পী যখন মুখে প্রায় কুলুপ এঁটেছিলেন, ঠিক তখনই শিক্ষার্থীদের কণ্ঠে আগুন ঢেলে দিয়েছিলেন দুই তরুণ র্যাপার হান্নান হোসাইন শিমুল এবং মোহাম্মদ সেজান। সেই কণ্ঠযোদ্ধারা এবার ঠাঁই করে নিয়েছেন পাঠ্যবইয়েও।
সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইতে বলা হয়েছে, আপনি কি সেজানের ‘কথা ক’ গানটি শুনেছেন? আগের প্রজন্মের শিল্পীরা গানকে প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে ব্যবহার করতে ভয় পেলেও সেজান ও হান্নানের মতো শিল্পীরা সে সাহস দেখিয়েছেন।
‘নতুন প্রজন্ম’ শিরোনামে ইংরেজি পাঠ্যবইয়ের সেই লেখায় বলা হয়েছে, তাদের র্যাপ গানগুলো ২০২৪ সালের জুলাই বিদ্রোহের সংগীতে পরিণত হয়েছিল। নতুন প্রজন্ম আর ভয় পায় না; তারা সাহসী এবং ব্যতিক্রম।
নারায়ণগঞ্জের তরুণ র্যাপার হান্নানের ‘আওয়াজ উঠা’ গানটি প্রকাশের মাত্র এক সপ্তাহ পরেই ২৫ জুলাই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১২ দিন কারাবাস শেষে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তিনি মুক্তি পান।
অন্যদিকে, ১৬ জুলাই প্রকাশের পরপরই সেজানের ‘কথা ক’ গানটিও জুলাই বিদ্রোহের অন্যতম অংশ হয়ে ওঠে।
আরটিভি/এএ/এস
আন্দোলন থেকে পাঠ্যবইয়ে র্যাপার হান্নান ও সেজান, যা বললেন তারা
গেল বছর স্বৈরাচারী সরকারের পতনের জন্য ছাত্র-জনতা মাঠে নেমেছিল। জুলাইয়ের আন্দোলনে উত্তাল ছিল সারা দেশ। তবে সেই আন্দোলনেও দেখা গিয়ে ছিল বিভক্তি। দেশের বেশির ভাগ সংগীতশিল্পী যখন মুখে প্রায় কুলুপ এঁটেছিলেন, ঠিক তখনই শিক্ষার্থীদের কণ্ঠে আগুন ঢেলে দিয়েছিলেন দুই তরুণ র্যাপার হান্নান হোসাইন শিমুল এবং মোহাম্মদ সেজান। সেই কণ্ঠযোদ্ধারা এবার ঠাঁই করে নিয়েছেন পাঠ্যবইয়েও।
সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইতে বলা হয়েছে, আপনি কি সেজানের ‘কথা ক’ গানটি শুনেছেন? আগের প্রজন্মের শিল্পীরা গানকে প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে ব্যবহার করতে ভয় পেলেও সেজান ও হান্নানের মতো শিল্পীরা সে সাহস দেখিয়েছেন।
‘নতুন প্রজন্ম’ শিরোনামে ইংরেজি পাঠ্যবইয়ের সেই লেখায় বলা হয়েছে, তাদের র্যাপ গানগুলো ২০২৪ সালের জুলাই বিদ্রোহের সংগীতে পরিণত হয়েছিল। নতুন প্রজন্ম আর ভয় পায় না; তারা সাহসী এবং ব্যতিক্রম।
নারায়ণগঞ্জের তরুণ র্যাপার হান্নানের ‘আওয়াজ উঠা’ গানটি প্রকাশের মাত্র এক সপ্তাহ পরেই ২৫ জুলাই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১২ দিন কারাবাস শেষে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তিনি মুক্তি পান।
অন্যদিকে, ১৬ জুলাই প্রকাশের পরপরই সেজানের ‘কথা ক’ গানটিও জুলাই বিদ্রোহের অন্যতম অংশ হয়ে ওঠে।
এদিকে, পাঠ্যবইয়ে নিজের নাম দেখে আপ্লুত মুহাম্মদ সেজান ও হান্নান। হান্নান বলেন, এখন গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, বাংলা র্যাপ বহুত বড় ব্যাপার, এডা অহন আর আন্ডারগ্রাউন্ডে নাই। সবার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা। এখন আমাদের গল্প বইয়ের পাতায় পড়তে পারবেন সবাই।
মুহাম্মদ সেজান বলেন, এই র্যাপ সংগীত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার ড্রপ করেছি। এখন স্কুলে আমাদের গল্প পড়ানো হবে। জনগণের কাছে চিরকৃতজ্ঞ আমরা।
আরটিভি /এএ
যে জেলার জামাই হচ্ছেন তাহসান
কোনো রকমের পূর্বাভাস বা গুঞ্জন ছাড়াই দ্বিতীয়বারের মতো বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন জনপ্রিয় গায়ক ও অভিনেতা তাহসান খান। শনিবার (৪ জানুয়ারি) ভোর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাহসানের বিয়ের আয়োজনের ছবি ভাইরাল হয়। এরপর থেকেই নেটিজেনরা নবদম্পতিকে শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানাচ্ছেন।
জানা গেছে, বরিশালের মেয়ে রোজা আহমেদ। এর আগে তিনি ইনস্টাগ্রামে জানিয়েছিলেন, বরিশাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের যাওয়ার গল্পটা সহজ ছিল না। তার শৈশব কেটেছে বরিশালেই।
উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি থেকে কসমেটোলজিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি কসমেটোলজি লাইসেন্স অর্জন করেন এবং নিউ ইয়র্কের কুইন্সে প্রতিষ্ঠা করেন ‘রোজাস ব্রাইডাল মেকওভার’। এটি এখন ব্রাইডাল মেকআপ শিল্পের অন্যতম সফল একটি প্রতিষ্ঠান।
দীর্ঘ ১০ বছরের বেশি সময় ধরে রোজা বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রে ব্রাইডাল মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করছেন। পাশাপাশি তিনি একজন প্রশিক্ষক হিসেবে নারীদের কসমেটোলজিতে দক্ষ করে তুলছেন এবং তাদের উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য প্রেরণা দিচ্ছেন। তার ফেসবুক পেজ ‘রোজাস ব্রাইডাল মেকওভার’–এ নয় লাখেরও বেশি অনুসারী রয়েছে।
এদিকে, কনের সঙ্গে ফেসবুকে প্রথম ছবি পোস্ট করলেন গায়ক এবং অভিনেতা তাহসান খান। শনিবার (৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা ১৪ মিনিটে। অল্প সময়ের মধ্যে মন্তব্যের ঘরে মতামত জানিয়েছেন হাজারো ভক্ত অনুরাগী।
ছবিতে হালকা গহনার সঙ্গে শাড়ি পরেছেন কনে রোজা আহমেদ। ম্যাচিং করা পাঞ্জাবি পরেছে তাহসান। দুজনের মুখের হাসি বলে দিচ্ছে, সময়টা দারুণ কাটছে তাদের।
ছবির ক্যাপশনে তাহসান গানের চারটি লাইন যুক্ত করে দিয়েছেন- কোনো এক ছুটির দিনে যখন আমি পিয়ানোতে, আমার সুরে নাচের মুদ্রায়, সেই তুমি কে? যার ছন্দের মুগ্ধতায় কেটে যাবে বাকিটা জীবন ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপে, সেই তুমি কে?
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালের ৭ আগস্ট তাহসান খান অভিনেত্রী মিথিলার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের ঘর আলো করে আসে কন্যা সন্তান আইরা তাহরিম খান। তবে ২০১৭ সালের ৪ অক্টোবর হঠাৎই তারা সেই সম্পর্কের ইতি টানেন। এক যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে তারা তাদের বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন।
আরটিভি/এএ/এআর
বাবাকে নিয়ে তাহসানের স্ত্রীর আবেগঘন স্ট্যাটাস ভাইরাল
কোনো রকমের পূর্বাভাস বা গুঞ্জন ছাড়াই দ্বিতীয়বারের মতো বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন জনপ্রিয় গায়ক ও অভিনেতা তাহসান খান। শনিবার (৪ জানুয়ারি) ভোর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাহসানের বিয়ের আয়োজনের ছবি ভাইরাল হয়। এরপর থেকেই নেটিজেনরা নবদম্পতিকে শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানাচ্ছেন।
এদিকে শনিবার (৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।
জানা গেছে, বরিশালের মেয়ে রোজা আহমেদ। এর আগে তিনি ইনস্টাগ্রামে জানিয়েছিলেন, বরিশাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের যাওয়ার গল্পটা সহজ ছিল না। তার শৈশব কেটেছে বরিশালেই।
উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি থেকে কসমেটোলজিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি কসমেটোলজি লাইসেন্স অর্জন করেন এবং নিউ ইয়র্কের কুইন্সে প্রতিষ্ঠা করেন ‘রোজাস ব্রাইডাল মেকওভার’। এটি এখন ব্রাইডাল মেকআপ শিল্পের অন্যতম সফল একটি প্রতিষ্ঠান।
এদিকে, তাহসান-রোজার বিয়ের পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নতুন করে আলোচনায় ২০১৪ সালে বরিশালে ক্রসফায়ারে নিহত যুবলীগ নেতা ফারুক আহমেদ ওরফে ‘পানামা ফারুক’।
এই ফারুক আহমেদের মেয়ে হচ্ছেন রোজা আহমেদ। যিনি র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছিলেন। যে কারণে তাহসানের শ্বশুর ও রোজা আহমেদকে নিয়ে নেটিজেনদের মাঝেও নানা প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
এরই জের ধরে ২০২৪ সালের ৪ জুন বাবা ফারুককে নিয়ে দেওয়া রোজা আহমেদের একটি আবেগঘন ফেসবুক স্ট্যাটাস নতুন করে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে তিনি বাবার মৃত্যুর পর কঠিন বাস্তবতার চিত্র ও নিজ সফলতার গল্প তুলে ধরেছেন।
সেই স্ট্যাটাস রোজা আহমেদ লিখেন, আলহামদুলিল্লাহ! এই মাত্র নিউইউর্ক সিটিতে আমার রোজাস ব্রাইডাল মেকোভার এন্ড বিউটি কেয়ার সেলুনের ডেকারশন এবং সেটআপের কাজ শেষ হলো। সেলফিটা একটু আগেই তুলেছি। সাধারণত আমার অনেক ছবি তোলা হয় কিন্তু আজ এই সেলফিটা তোলার সময় চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছিল। অনেক সময় ধরে কাঁদলাম। কিন্তু কি মনে করে কাঁদছি বা কেন কাঁদছি তা বুঝে উঠতে পারছিলাম না। আমি বাবা-মায়ের প্রথম সন্তান, তাই সবচেয়ে আদরের ছিলাম।
বাবা আমাকে সব সময় বলতেন, আমার ছোট্ট পরীটা কইরে। সেই সময় বরিশাল শহরে আমাদের পরিবারের বেশ প্রভাব ছিল। ছোট বেলায় কখনো কমতি পাইনি। এর বাসায় দাওয়াত, তার বাসায় দাওয়াত! আর যেতেই হবে কারণ আমাদের ছাড়া দাওয়াত অসম্পূর্ন হবে। এমন দিন গিয়েছে, দিনে ৪ টা দাওয়াতেও অংশ নিয়েছি। শুধু দেখা করে আসার জন্য। হঠাৎ বাবা আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন ওপাড়ে। যতদিনের হায়াত তিনি নিয়ে এসেছেন ততোদিন ছিলেন আমাদের সাথে। অভিযোগ তো অনেক জমা আছে, বাবার সেই ছোট্ট পরীটার কিন্তু অভিযোগ কার কাছে করব? আর বাবা শুধু আমাদের ছেড়ে চলে যায়নি, সাথে সাথে যে মানুষগুলো আমাদের এতো সম্মান করতেন তাদের ভালোবাসাও চলে গেল আমাদের উপর থেকে। আর সেই দিনই প্রথম বুঝতে পেরেছিলাম, যে ভালোবাসা আমরা পেয়েছি তা সবই বাবাকে ঘিরে আর সাথে অনেক অনেক স্বার্থ। বাবা চলে যাবার ঠিক ২ মাসের মাথায় আমার এক রিলেটিভের বিয়ে। আমরা অনেক ঘনিষ্ট ছিলাম একে ওপরের, কিন্তু বিয়েতে দাওয়াত পেলাম না। যে রিলেটিভরা সেই বিয়েতে অংশ নিয়েছে সবাই ফোন করতে শুরু করল মাকে। কেন আমরা গেলাম না, কোথায় আমরা? বরিশালে আছি কিনা এই সেই। সেদিন সারারাত বসে দেখেছি মায়ের সেই সরল মনের কান্না।
আপনারা লেখাটা পড়ে ভাবতে পারেন, দাওয়াত পাইনি বলে কাঁদছি? কিন্তু দাওয়াতের জন্য নয়, একি দালানে সবাই আনন্দ করছে, আমি, মা আর ছোট ভাই উৎস তখন বাসার এক কোণে। খুব চিৎকার দিয়ে বলতে ইচ্ছে হচ্ছিল, বাবা তুমি একটু দেখে যাও, যাদের জন্য এতো করেছ তারা আমাদের সব ফিরিয়ে দিচ্ছে।
বাবা আমাদের জন্য অনেক কিছুই রেখে গেছেন উল্লেখ করে তিনি লিখেন, দাদা ভাইয়ের অনেক আছে কিন্তু কিছুই গুছানো না। কে বুঝেছেন যে এতো অকালে উনি চলে যাবেন আমাদের ছেড়ে! আর দাদার সব সম্পত্তিতেই চাচা-ফুফুদের ভাগ আছে। মায়ের খুব অল্প বয়সেই বিয়ে হয়েছে। পড়াশোনার সুযোগ পায়নি। আর আমি চলে আসি তাদের কোলে। আমার মা খুব সরল মনের, দিন দুনিয়ার কিছুই বুঝে না। সে যে নিজের ভয়েস রেইস করবে বা তার সেটা রেইস করার অধিকার আছে সেটা তার ধারনার বাহিরে। কখনো তার সেই সাহসটাই ছিল না যে শ্বশুরকে বলবে, বাবা আমাদের সম্পত্তিটুকু আমাদের বুঝিয়ে দেন। আর উৎস তো তখন অনেক ছোট। আমরা দুই ভাই-বোন তখন পিচ্চি পিচ্চি। আমাদের পড়াশোনার খরচ তখন একদম হিসাব করে টায় টায় দেয়া হতো মায়ের হাতে। তাই কিছু খেতে ইচ্ছে করলে বলতাম না যাতে উৎস যেটা চায় সেটা সে পায়। আমার দিক থেকে একটু কম হলেও সমস্যা নেই।
তিনি লিখেন, বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই প্রস্তাব আসা শুরু হয়। এই রিলেটিভ একে আনে ঐ রিলেটিভ ওকে আনে। সেই সময় আমি প্রথম ভয়েস রেইস করেছি, যে আমার বয়স কম আর বাবা মারা গেছে কি হয়েছে? বাবার আর আমার স্বপ্ন তো মারা যায় নি! ঐ দিন কথাটায় খুব মাইন্ড করেছিল আমার কাছে্র লোকজন। বড়দের মুখে মুখে কথা, আমি আর মানুষ হবো না। আর সেই থেকেই রটানো হয় কতো কথা। সারাদিন নাকি ছেলেদের সাথে ঘুরি, আমার বন্ধু-বান্ধব সার্কেল ভালো না, পর্দা করি না আরও কতো কি। মেয়েতো নিশ্চয়ই প্রেম করে আর না হলে এতো ভাল প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়? আর প্রতিদিন এভাবেই বাসায় অভিযোগ আসা শুরু করে।
রোজা আরও লিখেন, আমার মা এতো অভিযোগ শুনতে শুনতে বলল, তুই আমাকে ছুঁয়ে বল এইসব অভিযোগ কি সত্যি। আমি মাকে ছুঁয়ে বললাম না মা সব মিথ্যা। আমি তো স্কুল আর বাসা বাদে কোথাও যাই না। এই বলে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করলাম মায়ের সাথে। ওইদিনের পর থেকে মা আমার সাথে নিয়মিত কোচিংয়ে যেত আবার এসে বাসার সবার জন্য রান্না করতে হতো। খুব কষ্ট হয়ে যেত তার। তখন নিজের কাছে মনে হতো আমি সবার জন্য একটা বোঝা, সবক্ষেত্রেই আমার দোষ। দিনের পর দিন এভাবেই চলতে থাকে। হঠাৎ দাদাভাই অসুস্থ হয়ে পরেন, আর সেই থেকে আমার সাথে কোচিংয়ে যাওয়া বন্ধ করে মা। কারণ তাদের সেবা যত্ন করতে হতো মাকেই। তখন থেকেই একা একা চলা শুরু করলাম। একটা ফ্রেন্ড বলল ও স্টুডেন্ট পড়ায় আমি বললাম আমাকে একটা খুঁজে দিবি আমিও শুরু করতে চাই। বেশ একজন খুঁজতে গিয়ে দুজনকে পেয়ে গেলাম। কেজিতে পড়ে খুব অল্প টাকা বেতন। আর কোচিং এর পড়া আমার ভালো লাগত না তাই আমি নিজে নিজে বুঝে পড়তাম। কিন্তু বাসার কথা ছিল, কোচিংয়ে পড়তেই হবে। তাই কোচিংয়ের সময়টা আমি স্টুডেন্ট পড়াতাম লুকিয়ে লুকিয়ে। আর সেই টাকা জমিয়ে উৎসকে ঘুরতে নিতাম, কিছু একটা পছন্দ করলে কিনে দিতাম। বাবার যে আদর আমি পেয়েছি ও সেই আদর পায়নি তাই বাবার আদর হয়তো দিতে পারতাম না তবে কখনো যাতে আফসোস না করে সেই চেষ্টা চালিয়ে যেতাম।
আমাকে যে কথা শুনতে হয়েছে আমি আর একটি মেয়েকেও সেই কথা শুনতে দিতে চাই না উল্লেখ করে তিনি লিখেন, শুরু করলাম মেকাপ ক্লাস। এক বছরে ৫০০+ মেয়েকে মেকাপ শিখালাম। শত শত মেয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াল। হঠাৎ একদিন মায়ের কল, যুক্তরাষ্ট অ্যাম্বাসিতে দাঁড়াতে হবে ইমেগ্রেশন ভিসার জন্য। বড় মামা অনেক আগে থেকে আবেদন করেছিল। দেখতে দেখতে ভিসা হয়ে গেল। উৎস আর মায়ের জন্য দেশ ছাড়তে হবে। একটু একটু করে যুক্তরাষ্ট্রে নিজের অবস্থান তৈরি করেছি।
নিজের ক্যারিয়ার, নিজের সার্কেল আর নিজের স্বপ্ন সব ফেলে অনিশ্চিত এক ভবিষ্যত নিয়ে চলে আসলাম ইউএসএতে। এখানে ইন্ডিয়ান, পাকিস্তানের প্রবাসীরাও আমার কাছে সাজা শুরু করল, ক্লাস করা শুরু করালাম। নিজেকে আবার এই দেশেও একজন প্রতিষ্ঠিত নারী উদ্যোক্তা হিসেবে দাঁড় করালাম। কসমেটোলজির মাধ্যমে স্কিন ,হেয়ার এবং মেকাপ রিলেটেড স্টাডি করলাম কলেজে। আর সেখান থেকেই আজকের স্টুডিও। কসমেটোলজির ওপর নতুন করে আবার পড়াশোনা, লাইসেন্স নেয়া সব চ্যালেঞ্জ নতুন করে আবার ফেইস করেছি। সেলুনে সব থেকে এক্সপেন্সিভ এবং কোয়ালিটিফুল প্রডাক্ট দিয়ে সাজিয়েছি সিস্টেম ম্যানেজমেন্ট।
সব শেষ তিনি লিখেন , কথাগুলো খুব আবেগ নিয়ে লেখা। শুরুতেই বলেছিলাম আমার মা একজন সরল মানুষ। বাবা মারা যাবার পর জীবনে উচ্চ স্বরে কথা বলতে পারে নাই, কখনো হাসতে দেখিনি। আর আজ সেই মা উচ্চ গলায় সবাইকে ফোনে বলে ‘হ্যাঁ আমার বড় মেয়ে রোজাই তো আমাকে দেখছে, আলহামদুলিল্লাহ।’ আল্লাহ অনেক ভালো রাখছেন আমাদের। সে হয়তো স্বপ্ন দেখতে পারেনি কিন্তু তার মেয়ে হিসেবে একটু হলেও নতুনভাবে বাঁচতে শিখাতে সাহায্য করেছি।
আজ খুব চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে, বাবা তোমার সেই ছোট্ট পরীটা অনেক বড় হয়েছে! আমার সব স্বপ্নের কেন্দ্রবিন্দু তুমি বাবা।
আরটিভি /এএ
তাহসানকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নতুন স্ত্রী রোজা
নতুন বছরের শুরুতেই সুখবর দিলেন জনপ্রিয় গায়ক ও অভিনেতা তাহসান খান। শনিবার (৪ জানুয়ারি) ভোর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাহসানের বিয়ের আয়োজনের ছবি ভাইরাল হয়। এরপর থেকেই নেটিজেনরা নবদম্পতিকে শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানাচ্ছেন।
এদিকে শনিবার (৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। এদিন সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে রোজা আহমেদের সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট দিয়েছেন তাহসান। ছবিতে তাহসান খান একটি পাঞ্জাবি পরে আছেন। তার সঙ্গে মিলিয়ে একই রঙের শাড়ি পরেছেন রোজা। রোজার হাতে মেহেদি লাগানো।
এর পর সেই মুহূর্তের আরও কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করলেন রোজা আহমেদ। সেখানে তিনি ক্যাপশনে লিখেন, আমি এমন একজন লোককে পেয়েছি যিনি করুণাময়। জীবনের জন্য তিনি আমার কাছে চেয়েছিলেন বিশ্বাস, শ্রদ্ধা এবং বন্ধুত্ব। জীবনের জন্য একটি বাড়ি এবং তার চাওয়া সবগুলোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম আমি। সবকিছুর জন্য আলহামদুলিল্লাহ।
গত ৩ জানুয়ারি ছিল তাহসান-রোজার গায়েহলুদ। দুই পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে গায়েহলুদ ও বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে তাদের।
জানা গেছে, বরিশালের মেয়ে রোজা আহমেদ। এর আগে তিনি ইনস্টাগ্রামে জানিয়েছিলেন, বরিশাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের যাওয়ার গল্পটা সহজ ছিল না। তার শৈশব কেটেছে বরিশালেই।
উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি থেকে কসমেটোলজিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি কসমেটোলজি লাইসেন্স অর্জন করেন এবং নিউ ইয়র্কের কুইন্সে প্রতিষ্ঠা করেন ‘রোজাস ব্রাইডাল মেকওভার’। এটি এখন ব্রাইডাল মেকআপ শিল্পের অন্যতম সফল একটি প্রতিষ্ঠান।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালের ৭ আগস্ট বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন তাহসান ও মিথিলা। এরপর ২০১৩ সালের ৩০ জুলাই তাদের ঘর আলোকিত করে আসে আইরা তাহরিম খান নামের কন্যাসন্তান। তবে ২০১৭ সালে বিবাহিত জীবনের ইতি টানেন তারা।
আরটিভি/এএ/এআর
তাহসানের স্ত্রী রোজার সংগ্রামী জীবনের গল্প
কোনো রকমের পূর্বাভাস বা গুঞ্জন ছাড়াই দ্বিতীয়বারের মতো বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন জনপ্রিয় গায়ক ও অভিনেতা তাহসান খান। শনিবার (৪ জানুয়ারি) ভোর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাহসানের বিয়ের আয়োজনের ছবি ভাইরাল হয়। এরপর থেকেই নেটিজেনরা নবদম্পতিকে শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানাচ্ছেন।
এদিকে শনিবার (৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। এদিন সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে রোজা আহমেদের সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট দিয়েছেন তাহসান। ছবিতে তাহসান খান একটি পাঞ্জাবি পরে আছেন। তার সঙ্গে মিলিয়ে একই রঙের শাড়ি পরেছেন রোজা। রোজার হাতে মেহেদি লাগানো।
এদিকে জানা গেছে, রোজা আহমেদ পড়াশোনা করেছেন নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি থেকে কসমেটোলজির ওপর। পড়াশোনা শেষ করে কসমেটোলজি লাইসেন্স গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে নিউ ইয়র্কের কুইন্সে রোজাস ব্রাইডাল মেকওভার প্রতিষ্ঠা করেন।
রোজা এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশেই ব্রাইডাল মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। এ ছাড়াও মেকআপ শিক্ষিকা হিসেবে তিনি নারীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন এবং অনেককে উদ্যোক্তা হতে সাহায্য করেছেন।
রোজার বিজনেস পেজে রয়েছে তার অসংখ্য অনুসারী এবং নেটিজেনদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় তিনি। তার ফেসবুক পেজ “রোজাস ব্রাইডাল মেকওভার” পেজে অনুসারী সংখ্যা নয় লাখের ওপরে।
রোজা আহমেদ ঘোরাফেরা করতেও পছন্দ করেন। দেশে থাকতে বেড়াতে গেছেন সাজেক, নাফাখুম, রাঙামাটিতেও।
অন্যদিকে, তাহসান-রোজার বিয়ের পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নতুন করে আলোচনায় ২০১৪ সালে বরিশালে ক্রসফায়ারে নিহত যুবলীগ নেতা ফারুক আহমেদ ওরফে ‘পানামা ফারুক’।
২০২৪ সালের ৪ জুন বাবা ফারুককে নিয়ে দেওয়া রোজা আহমেদের একটি আবেগঘন ফেসবুক স্ট্যাটাস নতুন করে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে তিনি বাবার মৃত্যুর পর কঠিন বাস্তবতার চিত্র ও নিজ সফলতার গল্প তুলে ধরেছেন।
সেই স্ট্যাটাস রোজা আহমেদ লিখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ! এই মাত্র নিউইউর্ক সিটিতে আমার রোজাস ব্রাইডাল মেকোভার অ্যান্ড বিউটি কেয়ার সেলুনের ডেকোরেশন এবং সেটআপের কাজ শেষ হলো। সেলফিটা একটু আগেই তুলেছি। সাধারণত আমার অনেক ছবি তোলা হয় কিন্তু আজ এই সেলফিটা তোলার সময় চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছিল। অনেক সময় ধরে কাঁদলাম। কিন্তু কী মনে করে কাঁদছি বা কেন কাঁদছি তা বুঝে উঠতে পারছিলাম না। আমি বাবা-মায়ের প্রথম সন্তান, তাই সবচেয়ে আদরের ছিলাম।’
‘বাবা আমাকে সব সময় বলতেন, আমার ছোট্ট পরীটা কইরে। সেই সময় বরিশাল শহরে আমাদের পরিবারের বেশ প্রভাব ছিল। ছোট বেলায় কখনো কমতি পাইনি। এর বাসায় দাওয়াত, তার বাসায় দাওয়াত! আর যেতেই হবে কারণ আমাদের ছাড়া দাওয়াত অসম্পূর্ণ হবে। এমন দিন গিয়েছে, দিনে ৪টা দাওয়াতেও অংশ নিয়েছি। শুধু দেখা করে আসার জন্য। হঠাৎ বাবা আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন ওপাড়ে। যতদিনের হায়াত তিনি নিয়ে এসেছেন ততোদিন ছিলেন আমাদের সাথে। অভিযোগ তো অনেক জমা আছে, বাবার সেই ছোট্ট পরীটার কিন্তু অভিযোগ কার কাছে করব? আর বাবা শুধু আমাদের ছেড়ে চলে যায়নি, সাথে সাথে যে মানুষগুলো আমাদের এতো সম্মান করতেন তাদের ভালোবাসাও চলে গেল আমাদের উপর থেকে। আর সেই দিনই প্রথম বুঝতে পেরেছিলাম, যে ভালোবাসা আমরা পেয়েছি তা সবই বাবাকে ঘিরে আর সাথে অনেক অনেক স্বার্থ। বাবা চলে যাবার ঠিক ২ মাসের মাথায় আমার এক রিলেটিভের বিয়ে। আমরা অনেক ঘনিষ্ট ছিলাম একে ওপরের, কিন্তু বিয়েতে দাওয়াত পেলাম না। যে রিলেটিভরা সেই বিয়েতে অংশ নিয়েছে সবাই ফোন করতে শুরু করল মাকে। কেন আমরা গেলাম না, কোথায় আমরা? বরিশালে আছি কিনা এই সেই। সেদিন সারারাত বসে দেখেছি মায়ের সেই সরল মনের কান্না।’
‘আপনারা লেখাটা পড়ে ভাবতে পারেন, দাওয়াত পাইনি বলে কাঁদছি? কিন্তু দাওয়াতের জন্য নয়, একি দালানে সবাই আনন্দ করছে, আমি, মা আর ছোট ভাই উৎস তখন বাসার এক কোণে। খুব চিৎকার দিয়ে বলতে ইচ্ছে হচ্ছিল, বাবা তুমি একটু দেখে যাও, যাদের জন্য এতো করেছ তারা আমাদের সব ফিরিয়ে দিচ্ছে।
তিনি আরও লিখেন, ‘বাবা আমাদের জন্য অনেক কিছুই রেখে গেছেন উল্লেখ করে তিনি লিখেন, দাদা ভাইয়ের অনেক আছে কিন্তু কিছুই গুছানো না। কে বুঝেছেন যে এতো অকালে উনি চলে যাবেন আমাদের ছেড়ে! আর দাদার সব সম্পত্তিতেই চাচা-ফুফুদের ভাগ আছে। মায়ের খুব অল্প বয়সেই বিয়ে হয়েছে। পড়াশোনার সুযোগ পায়নি। আর আমি চলে আসি তাদের কোলে। আমার মা খুব সরল মনের, দিন দুনিয়ার কিছুই বুঝে না। সে যে নিজের ভয়েস রেইস করবে বা তার সেটা রেইস করার অধিকার আছে সেটা তার ধারণার বাহিরে। কখনো তার সেই সাহসটাই ছিল না যে শ্বশুরকে বলবে, বাবা আমাদের সম্পত্তিটুকু আমাদের বুঝিয়ে দেন। আর উৎস তো তখন অনেক ছোট। আমরা দুই ভাই-বোন তখন পিচ্চি পিচ্চি। আমাদের পড়াশোনার খরচ তখন একদম হিসাব করে টায় টায় দেয়া হতো মায়ের হাতে। তাই কিছু খেতে ইচ্ছে করলে বলতাম না যাতে উৎস যেটা চায় সেটা সে পায়। আমার দিক থেকে একটু কম হলেও সমস্যা নেই।
তিনি লিখেন, বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই প্রস্তাব আসা শুরু হয়। এই রিলেটিভ একে আনে ঐ রিলেটিভ ওকে আনে। সেই সময় আমি প্রথম ভয়েস রেইস করেছি, যে আমার বয়স কম আর বাবা মারা গেছে কি হয়েছে? বাবার আর আমার স্বপ্ন তো মারা যায় নি! ঐ দিন কথাটায় খুব মাইন্ড করেছিল আমার কাছে্র লোকজন। বড়দের মুখে মুখে কথা, আমি আর মানুষ হবো না। আর সেই থেকেই রটানো হয় কতো কথা। সারাদিন নাকি ছেলেদের সাথে ঘুরি, আমার বন্ধু-বান্ধব সার্কেল ভালো না, পর্দা করি না আরও কতো কি। মেয়েতো নিশ্চয়ই প্রেম করে আর না হলে এতো ভাল প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়? আর প্রতিদিন এভাবেই বাসায় অভিযোগ আসা শুরু করে।
রোজা আরও লিখেন, ‘আমার মা এতো অভিযোগ শুনতে শুনতে বলল, তুই আমাকে ছুঁয়ে বল এইসব অভিযোগ কি সত্যি। আমি মাকে ছুঁয়ে বললাম না মা সব মিথ্যা। আমি তো স্কুল আর বাসা বাদে কোথাও যাই না। এই বলে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করলাম মায়ের সাথে। ওইদিনের পর থেকে মা আমার সাথে নিয়মিত কোচিংয়ে যেত আবার এসে বাসার সবার জন্য রান্না করতে হতো। খুব কষ্ট হয়ে যেত তার। তখন নিজের কাছে মনে হতো আমি সবার জন্য একটা বোঝা, সবক্ষেত্রেই আমার দোষ। দিনের পর দিন এভাবেই চলতে থাকে। হঠাৎ দাদাভাই অসুস্থ হয়ে পরেন, আর সেই থেকে আমার সাথে কোচিংয়ে যাওয়া বন্ধ করে মা। কারণ তাদের সেবা যত্ন করতে হতো মাকেই। তখন থেকেই একা একা চলা শুরু করলাম। একটা ফ্রেন্ড বলল ও স্টুডেন্ট পড়ায় আমি বললাম আমাকে একটা খুঁজে দিবি আমিও শুরু করতে চাই। বেশ একজন খুঁজতে গিয়ে দুজনকে পেয়ে গেলাম। কেজিতে পড়ে খুব অল্প টাকা বেতন। আর কোচিং এর পড়া আমার ভালো লাগত না তাই আমি নিজে নিজে বুঝে পড়তাম। কিন্তু বাসার কথা ছিল, কোচিংয়ে পড়তেই হবে। তাই কোচিংয়ের সময়টা আমি স্টুডেন্ট পড়াতাম লুকিয়ে লুকিয়ে। আর সেই টাকা জমিয়ে উৎসকে ঘুরতে নিতাম, কিছু একটা পছন্দ করলে কিনে দিতাম। বাবার যে আদর আমি পেয়েছি ও সেই আদর পায়নি তাই বাবার আদর হয়তো দিতে পারতাম না তবে কখনো যাতে আফসোস না করে সেই চেষ্টা চালিয়ে যেতাম।’
‘আমাকে যে কথা শুনতে হয়েছে আমি আর একটি মেয়েকেও সেই কথা শুনতে দিতে চাই না উল্লেখ করে তিনি লিখেন, শুরু করলাম মেকাপ ক্লাস। এক বছরে ৫০০+ মেয়েকে মেকাপ শিখালাম। শত শত মেয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াল। হঠাৎ একদিন মায়ের কল, যুক্তরাষ্ট অ্যাম্বাসিতে দাঁড়াতে হবে ইমেগ্রেশন ভিসার জন্য। বড় মামা অনেক আগে থেকে আবেদন করেছিল। দেখতে দেখতে ভিসা হয়ে গেল। উৎস আর মায়ের জন্য দেশ ছাড়তে হবে। একটু একটু করে যুক্তরাষ্ট্রে নিজের অবস্থান তৈরি করেছি।’
রোজা আহমেদ লিখেছেন, নিজের ক্যারিয়ার, নিজের সার্কেল আর নিজের স্বপ্ন সব ফেলে অনিশ্চিত এক ভবিষ্যত নিয়ে চলে আসলাম ইউএসএতে। এখানে ইন্ডিয়ান, পাকিস্তানের প্রবাসীরাও আমার কাছে সাজা শুরু করল, ক্লাস করা শুরু করালাম। নিজেকে আবার এই দেশেও একজন প্রতিষ্ঠিত নারী উদ্যোক্তা হিসেবে দাঁড় করালাম। কসমেটোলজির মাধ্যমে স্কিন, হেয়ার এবং মেকাপ রিলেটেড স্টাডি করলাম কলেজে। আর সেখান থেকেই আজকের স্টুডিও। কসমেটোলজির ওপর নতুন করে আবার পড়াশোনা, লাইসেন্স নেয়া সব চ্যালেঞ্জ নতুন করে আবার ফেইস করেছি। সেলুনে সব থেকে এক্সপেন্সিভ এবং কোয়ালিটিফুল প্রডাক্ট দিয়ে সাজিয়েছি সিস্টেম ম্যানেজমেন্ট।
সব শেষ তিনি লিখেন , কথাগুলো খুব আবেগ নিয়ে লেখা। শুরুতেই বলেছিলাম আমার মা একজন সরল মানুষ। বাবা মারা যাবার পর জীবনে উচ্চ স্বরে কথা বলতে পারে নাই, কখনো হাসতে দেখিনি। আর আজ সেই মা উচ্চ গলায় সবাইকে ফোনে বলে ‘হ্যাঁ আমার বড় মেয়ে রোজাই তো আমাকে দেখছে, আলহামদুলিল্লাহ।’ আল্লাহ অনেক ভালো রাখছেন আমাদের। সে হয়তো স্বপ্ন দেখতে পারেনি কিন্তু তার মেয়ে হিসেবে একটু হলেও নতুনভাবে বাঁচতে শিখাতে সাহায্য করেছি।
আজ খুব চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে, বাবা তোমার সেই ছোট্ট পরীটা অনেক বড় হয়েছে! আমার সব স্বপ্নের কেন্দ্রবিন্দু তুমি বাবা।
আরটিভি/এএ/এআর
বিয়ের আলোচনার মাঝেই নতুন সুখবর দিলেন তাহসান
দ্বিতীয়বারের মতো বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন জনপ্রিয় গায়ক ও অভিনেতা তাহসান খান। শনিবার (৪ জানুয়ারি) ভোর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাহসানের বিয়ের আয়োজনের ছবি ভাইরাল হয়। এরপর থেকেই নেটিজেনরা নবদম্পতিকে শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানাচ্ছেন।
এদিকে শনিবার (৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। এদিন সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে রোজা আহমেদের সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট দিয়েছেন তাহসান। ছবিতে তাহসান খান একটি পাঞ্জাবি পরে আছেন। তার সঙ্গে মিলিয়ে একই রঙের শাড়ি পরেছেন রোজা। রোজার হাতে মেহেদি লাগানো।
তাহসান খানের বিয়ের খবর প্রকাশ্যে আসার পর স্ত্রীর সঙ্গে ছবি পোস্ট করতেই হইচই পড়ে গেছে। চারদিকে বিয়ে নিয়ে যখন এত আলোচনা ঠিক তখনই তাহসান ভক্তদের জন্য এলো নতুন সুখবর।
সবশেষ গেল বছরের নভেম্বরে প্রকাশিত হয়েছে তাহসানের ‘ভুলে যাব’ শিরোনামে একটি গান। যেটির দৃশ্যধারণ করা হয়েছে হলিউডে। সেই ধারাবাহিকতায় আরও একটি নতুন গান নিয়ে আসছেন তিনি। শুধু তাই নয়, গানটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এটি তৈরির গল্প শোনাবেন তাহসান খান।
জানা গেছে, তাহসানের নতুন গানের শিরোনাম ‘একা ঘর আমার’/ (Lonely Home)। স্যাড রোমান্টিক গানটির কথা ও সুরও এই গায়কের নিজের। এতে তার সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন সিঁথি সাহা।
‘একা ঘর আমার’ গানের একটি মিউজিক ভিডিও নির্মাণ করা হয়েছে। এটি নির্মাণ করেছেন চন্দন রায় চৌধুরী। এতে অভিনয় করেছেন শিল্পীদ্বয় নিজেরাই। অনুপম রেকর্ডিং মিডিয়ার প্রযোজনায় নির্মিত গানটি সোমবার (০৬ জানুয়ারি) অনুপম মিউজিক নামের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ হবে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় গেম শো ‘ফ্যামিলি ফিউড’র স্বত্ব কিনেছে দেশের একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম। সেই শো দিয়ে দীর্ঘ ৮ বছর পর কোনো অনুষ্ঠানে ফিরছেন তাহসান। এই আয়োজনের সঞ্চালনার দায়িত্ব হাতে তুলে নিয়েছেন এই সংগীতশিল্পী-অভিনেতা। এর শুটিং শুরু হয়েছে গেল বছরের ডিসেম্বরের শুরুতে। এ নিয়েও ব্যস্ততা রয়েছে রয়েছে তাহসানের।
আরটিভি/এএ/এআর