যেসব কারণে বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে গেলো সোমবার বাস ও লরির সংঘর্ষে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চট্টগ্রামগামী সিডিএম পরিবহনের বাসটির বেপরোয়া গতি আর চালকের স্বেচ্ছাচারিতার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এভাবে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন জায়গায় সড়ক দুর্ঘটনায় ঝড়ে যাচ্ছে অনেক তাজা প্রাণ।
একটি বেসরকারি সংস্থার গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৬ সালে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৬ হাজার মানুষ। ২০১৭ সালে মৃতের সংখ্যা কিছুটা কমে ৫ হাজারের ঘরে নামে। আর ২০১৮ সালের প্রথম দু’মাসেই দুর্ঘটনার পরিমাণ ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে।
এসব দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাব, অদক্ষ চালক, মাদক আর সড়কের অব্যবস্থাপনাকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে বুয়েটের অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষক কাজী সাইফুন নেওয়াজ বলেন, আমাদের দেশের চালকরা বেশিরভাগই অদক্ষ ও অপ্রশিক্ষিত। তারা একটু সুযোগ পেলেই বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালান। একারণে দিন দিন সড়কে মৃত্যুর হার বাড়ছে।
এই সমস্যার সমাধান হিসেবে তিনি বলেন, চালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মনোভাব কমাতে হবে। এছাড়া তারা কোন পরিস্থিতিতে কীভাবে গাড়ি চালাবেন তাদের সেই প্রশিক্ষণ দেওয়া খুবই জরুরি।
অন্যদিকে দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে মালিকদের অতিরিক্ত মুনাফার লোভ, চালকদের স্বেচ্ছাচারিতা, সড়কের অব্যবস্থাপনা আর দক্ষ চালকের অভাবকে দায়ী করেছেন নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন।
এছাড়াও চালকদের মাদকগ্রহণের প্রবণতা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে বলে মনে করেন তিনি।
ইলিয়ার কাঞ্চন বলেন, চালকদের বেশিরভাগই মাদকাসক্ত। আর বর্তমানে এই হার আরও বেড়েছে। একারণে সড়ক দুর্ঘটনার পরিমাণও বাড়ছে। এবিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সচেতন হতে হবে।
এছাড়া রাজনৈতিক কারণে পরিবহনখাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
একইসঙ্গে মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল থামাতে অনতিবিলম্বে আইনের কঠোর প্রয়োগের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু প্রশাসনিক উদ্যোগেই সড়ক দুর্ঘটনা পুরোপুরি রোধ করা সম্ভব না। এর বিরুদ্ধে যাত্রী ও পথচারিদের সচেতনতা বৃদ্ধিও জরুরি।
আরও পড়ুন:
- কাগজে-কলমে ‘অত্যন্ত সংরক্ষিত’ বাস্তবে অরক্ষিত ডিএনডি খাল
- ছিনতাই ও টানাপার্টিতে অভিজাত শ্রেণির তরুণেরা!
এসএইচ/পি
মন্তব্য করুন