• ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
logo

ইরান-চীন সম্পর্কে আতঙ্কিত ভারত, তেহরানে দুই মন্ত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি নিউজ

  ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৯:৩২
India, China panic over Iran-China, two ministers in Tehran
ছবি: সংগৃহীত

গেল সপ্তাহে অনেকটা নীরবেই তেহরানে গিয়ে দিন কাটিয়েছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। মস্কোতে সাংহাই সহযোগিতা জোটের বৈঠকে যোগ দিতে যাওযার পথে রাজনাথ সিং তেহরানে নামেন। আর জয়শঙ্কর মস্কো থেকে ফেরার পথে মঙ্গলবার সারাদিন কাটান তেহরানে।

এই সফর নিয়ে সরকারি ভাবে রিফুয়েলিং অর্থাৎ বিমানে তেল ভরার যুক্তি দেয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে ভারতের দুই মন্ত্রী সেই তেল দুবাই বা আবুধাবিতে না ভরে তেহরানে কেন নামলেন?

পর্যবেক্ষকদের মধ্যে কোনও দ্বিমত নেই যে চিরশত্রু চীন এবং হালে পাকিস্তানের সঙ্গে ইরান যেভাবে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে ভারত তাতে গভীর উদ্বিগ্ন।

দিল্লির জওহারলাল নেহেরু ইউনিভারসিটির (জেএনইউ) আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক সঞ্জয় ভরদোয়াজ বলেন, চীনের সঙ্গে ইরানের অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত যে সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে, তা নিয়ে ভারতের মাথাব্যথা বাড়ছে।

তিনি বলেন, ‘ভারতের কাছে ইরানের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত গুরুত্ব অপরিসীম। ভারত কোনোভাবেই তা খোয়াতে চায় না।’

অধ্যাপক ভরদোয়াজ বলেন, আফগানিস্তান এবং মধ্য এশিয়ার বাজারে ঢোকার জন্য ভারতের কাছে ইরানের গুরুত্ব বিশাল। সে কারণেই ইরানের চাবাহার বন্দরের উন্নয়নে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত হয়েছিল ভারত। সেই সঙ্গে, তিনি বলেন, জ্বালানির জন্য এবং কাশ্মীর ইস্যুতে ইরানের মত প্রভাবশালী একটি মুসলিম দেশের কাছ থেকে রাজনৈতিক সমর্থনের জন্য ভারত উদগ্রীব।

কিন্তু এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে দ্রুত পরিবর্তনশীল ভূ-রাজনীতিতে ভারত ও ইরান যে ভিন্ন দুই মেরুতে অবস্থান নিয়েছে তা স্পষ্ট।

বিশেষ করে যে দেশটি এখন ভারতের সবচেয়ে শত্রু দেশে পরিণত হয়েছে সেই চীনের সঙ্গে ইরানের যে ব্যাপক অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত ঘনিষ্ঠতা তৈরি হচ্ছে, তা ভারতের কাছে দুঃস্বপ্ন।
তবে ইরান ও ভারতের মধ্যে দূরত্ব একদিনে তৈরি হয়নি।

গত ১৫ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠতা যত বেড়েছে, ইরানের সঙ্গে ততই দূরত্ব বেড়েছে। সেই শূন্যতা পূরণে ঝড়ের মত ঢুকে পড়েছে চীন।

চীন এবং ইরান তাদের মধ্যে ২৫ বছরের একটি ‘কৌশলগত সহযোগিতার‘ চুক্তি নিয়ে বোঝাপড়া চূড়ান্ত করে ফেলেছে বলে জানা গেছে। নির্ভরযোগ্য বিভিন্ন সূত্রে প্রকাশিত নানা তথ্যের ভিত্তিতে যা জানা গেছে এই চুক্তিতে ইরানের তেল-গ্যাস, ব্যাংকিং, টেলিকম, বন্দর উন্নয়ন, রেলওয়ে উন্নয়ন এবং আরও কয়েক ডজন খানেক গুরুত্বপূর্ণ খাতে চীন আগামী ২৫ বছরে কমপক্ষে ৪০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে।

কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ইরানের যে বন্দরটির উন্নয়নের শুরু ভারতের হাতে হয়েছে সেই চাবাহার বন্দরের সম্প্রসারণ এবং ওেই বন্দরের সঙ্গে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন শহরের রেল যোগাযোগের কাজ এখন চীনের হাতে তুলে দেয়ার কথা সরকারিভাবে ঘোষণা করেছে ইরান।

শুধু তাই নয়, জানা গেছে চীন এখন চাবাহার বন্দরটিকে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের (সিপেক) অংশ করতে উদগ্রীব।

ভারতের সাবেক কূটনীতিক রাকেশ সুদ বলেন, মূলত যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কায় চাবাহার বন্দর উন্নয়নে প্রতিশ্রুতি পূরণে ভারতের গড়িমসিতে ইরান ক্ষুব্ধ। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে এশিয়ায় জোট রাজনীতির আমূল পরিবর্তনের প্রভাব। মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে রাশিয়া এবং চীনের দৃষ্টিভঙ্গি এখন একইরকম। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পাকিস্তান, ইরান এবং তুরস্ক। অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যে যে সব দেশের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠতা তৈরি হচ্ছে - ইউএই এবং সৌদি আরব- তারা ইরানের বড় শত্রু।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, চীনের আগ্রহে পাকিস্তানের সঙ্গে ইরানের সম্পর্কে যেভাবে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হচ্ছে তা ভারতের জন্য বাড়তি মাথাব্যথা। কারণ, ভবিষ্যতে আফগানিস্তানে ভারত তাদের প্রভাব কতটা ধরে রাখতে পারবে তা অনেকটাই নির্ভর করছে ইরান-পাকিস্তান সম্পর্কের ওপর। সূত্র: বিবিসি বাংলা।

আরও পড়ুন

এসএস

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
কায়রো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে মেহজাবীনের ‘প্রিয় মালতী’
মেলবোর্নের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে বাংলাদেশি ১০ প্রতিষ্ঠান
বৈষম্য দূর করতে পুরুষের ১৩ দাবি 
এ সমাজে পুরুষ কোথায়?