ধ্বংসস্তুপে ১৮ ঘণ্টা আটকে থাকার পর মা ও তিন সন্তান জীবিত উদ্ধার
তুরস্কে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ধসে পড়া ভবনের নিচে ১৮ ঘণ্টা আটকে থাকার পর এক মা ও তার তিন সন্তানকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার দেশটির বন্দর নগরী আজিয়ানের ইজমির শহরে এ ঘটনা ঘটেছে। চতুর্থ সন্তানকে উদ্ধারে তৎপরতা চালাচ্ছে উদ্ধারকারী বাহিনী।
শুক্রবার রাতে ইজমির শহরে ৭ মাত্রায় ভূমিকম্প হয়। এতে অন্তত ২৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ভূমিকম্পে আজিয়ানের অন্তত ২০টি ভবন ধসে পড়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ১০০ জন লোককে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশমন্ত্রী মুরাত কুরুম।
ইজমিরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে আট শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে। আটটি ভবনে উদ্ধার তৎপরতা শেষ হয়েছে। আরও ৯টি ভবনে উদ্ধার কাজ চলছে।
এমএস/পি
মন্তব্য করুন
আমরা বসে ললিপপ খাবো না: বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মমতা
কলকাতা-চট্টগ্রাম দখলের হুমকি-পাল্টা হুমকি ও বাংলা-বিহার-উড়িষ্যা ফেরৎ প্রসঙ্গে বাংলাদেশি নেতাদের কড়া ভাষায় আক্রমণ করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, আমরা বসে ললিপপ খাব না।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিধানসভায় স্বাস্থ্য সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি এসব মন্তব্য করেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।
বাংলা-বিহার-উড়িষ্যা ফেরৎ প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা রুহুল কবীর রিজভীর মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, যারা বলছেন বাংলা-বিহার-ওড়িষ্যা দখল করবেন, তারা ভাল থাকবেন। আপনার সেই ক্ষমতাও নেই, আর ভাববার কোনো কারণ নেই যে আমরা বসে ললিপপ খাব। আমরা যথেষ্ট সক্রিয় এবং যথেষ্ট ধৈর্যের পরীক্ষা দিই। আমরা সবাই সবাইকে রক্ষা করব।
বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গোটা বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকার দেখছে এবং তারাই ব্যবস্থা নেবে। আমরা কোনও পক্ষে নেই। আমরা সব পক্ষে। আজ বিদেশ সচিব (বাংলাদেশে) যাচ্ছেন। দেখা যাক কী হয়। আমাদের নীতি হল আমরা কূটনীতি মেনে চলব।
বাংলাদেশিদের তুলোধোনা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, আমরা অখণ্ড ভারতবর্ষের নাগরিক, বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নেই। তবে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর যে হামলা হচ্ছে, তা দুঃখজনক।
ভারতীয় গণমাধ্যমের একাংশের সমালোচনা ও পরোক্ষভাবে বিজেপিকে নিশানা করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কয়েকটা মিডিয়া যা করছে তা যথাযথ নয়। এটা উত্তরপ্রদেশ নয় যে আপনাদের ব্যান করব। কিন্তু অনুরোধ করছি স্বাভাবিক থাকুন। আর কিছু ফেক ভিডিও ভাইরাল করা হচ্ছে। একটা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল করছে। তাদের বলতে চাই সব কিছু নিয়ে রাজনীতি করবেন না।
এর আগে সম্প্রতি বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ও হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য শান্তি বাহিনী পাঠানোর প্রস্তাব দেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর সাবেক সদস্য মিনাজ প্রধান বলেছিলেন ৪ দিনে কলকাতা দখল করে নেবো।
অন্যদিকে, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন চট্টগ্রাম দখলে নিলে (যদিও ভারত সেই দাবি করেনি) বাংলা-বিহার উড়িষ্যা ফেরত দিতে হবে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে বিকৃত প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর সরব হন মমতা।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারত বিশ্বের চতুর্থ শক্তিশালী দেশ। আর সেখানে ৩৭ তম স্থানে আছে বাংলাদেশ। যে কোনও মাপকাঠিতে বাংলাদেশের থেকে অনেক গুণ এগিয়ে আছে ভারত।
আরটিভি/কেএইচ
আরাকান আর্মির দখলে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের ২৭০ কিমি সীমান্ত
বাংলাদেশ সীমান্তের সঙ্গে লাগোয়া মিয়ানমারের ২৭০ কিলোমিটার এলাকা পুরোপুরি দখলের দাবি করেছে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। রোববার (৮ ডিসেম্বর) মংডু শহর দখলের মধ্যে দিয়ে দীর্ঘ সীমান্ত এলাকার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে গোষ্ঠীটি। খবর ইরাবতী নিউজের
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) মিয়ানমারের এই সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মংডু শহর দখল করে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের ২৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আরাকান আর্মি (এএ)। সশস্ত্র এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, তারা জান্তার শেষ অবশিষ্ট সীমান্ত ঘাঁটি মংডু শহরের বাইরে অবস্থিত বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন নং ৫ বেশ কয়েক মাস লড়াইয়ের পর রোববার সকালে দখল করেছে।
এর আগে, রোববার আরাকান আর্মি জানায়, ঘাঁটি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় তারা আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি (এআরএ), আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) এর সরকার এবং সহযোগী রোহিঙ্গা মিলিশিয়াদের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে।
রাখাইনের মিডিয়া সোমবার জানিয়েছে, মংডুর এই যুদ্ধের পরে প্রায় ৮০ জন রোহিঙ্গা বিদ্রোহীসহ সরকারি সৈন্যদের পাশাপাশি সামরিক অপারেশন কমান্ড ১৫ এর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনকে গ্রেপ্তার করেছে আরাকান আর্মি। মে মাসের শেষের দিকে মংডু আক্রমণ শুরু করে তারা। আর সীমান্তবর্তী এই শহরের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পেতে ছয় মাস সময় লাগল গোষ্ঠীটির।
ইরাবতীর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আরাকান আর্মি এখন বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের তিনটি শহরেরই নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করছে। এগুলো হচ্ছে—রাখাইন প্রদেশের মংডু ও বুথিডাং এবং চিন প্রদেশের পালেতোয়া। পালেতোয়ার সঙ্গে ভারতের সীমান্তও রয়েছে। আরাকান আর্মি এখন দক্ষিণ রাখাইনের গয়া, তাউনগুপ এবং আন শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য লড়াই করছে।
আরটিভি/এমএ/এআর
আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে হামলা, শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার বিষয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ আহ্বান জানান তিনি।
সম্প্রতি ভারত ও বাংলাদেশ উভয়েই ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের একটি কূটনৈতিক মিশনে সহিংস হামলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এ বিষয় ও বাংলাদেশ নিয়ে ক্রমবর্ধমান আক্রমণাত্মক বক্তব্য-বিবৃতি সম্পর্কে ওয়াশিংটানের কী কোনও মন্তব্য আছে?
সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মিলার বলেন, সব পক্ষ তাদের মতবিরোধ শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করবে, সেটাই আমরা দেখতে চাই।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই দুদেশের সম্পর্ক হিমশীতল অবস্থায় পৌঁছেছে। সবশেষ ইসকন নেতা চিন্ময় দাসকে গ্রেপ্তারের পর পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়। গত ২ ডিসেম্বর ত্রিপুরার আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনাও ঘটে।
আরটিভি/এসএপি/এআর
ভারতে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো ২০০ বছরের পুরনো মসজিদের একাংশ
বেআইনি দাবি করে ভারতের উত্তরপ্রদেশের প্রায় ২০০ বছরের পুরনো একটি মসজিদের একাংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশের ফতেহপুর জেলায় অবস্থিত ১৮৫ বছর পুরোনো নূরী জামে মসজিদের একটি অংশ ভেঙে দিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, মসজিদের এই অংশটি বান্দা-বাহরাইচ হাইওয়ের অংশে অবৈধভাবে করা হয়েছিল।
জেলা প্রশাসন দাবি করেছে, মসজিদের ভেঙে ফেলা অংশটি বেআইনি ছিল। পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট (পিডব্লিউডি) দাবি করেছে, তারা গত ১৭ আগস্ট তাদের “অবৈধ নির্মাণের” কারণে মসজিদের কিছু অংশ সরানোর নোটিশ দিয়েছিল।
তারা আরও জানিয়েছে, সড়কের ওপর মসজিদের একাংশ পড়ায় মসজিদ কমটিকে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। তারপরও সেই অংশ ভাঙেনি কমিটি। তাই নির্ধারিত সময়ের পর গণপূর্ত বিভাগ থেকে মসজিদটির ওই অংশ ভেঙে ফেলা হয়।
এমন এক সময় মসজিদটি ভেঙে দেওয়া হলো যখন মসজিদ কমিটি বিষয়টি সুরাহার জন্য এলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। আদালত থেকে এই বিষয়ে কোনো আদেশ আসার আগেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
তবে জেলা প্রশাসনের দাবি, আদালতে আবেদন জমা পড়লেও শুনানির জন্য নথিভুক্ত হয়নি।
আরটিভি/এসএপি/এআর
বাংলাদেশ সফর নিয়ে ভারতের সংসদ সদস্যদের ব্রিফ করলেন বিক্রম মিশ্রি
বাংলাদেশ সফর নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের ব্রিফ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিকালে নয়াদিল্লিতে পার্লামেন্ট অ্যানেক্স ভবনে আড়াই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা বৈঠকে সংসদ সদস্যদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি বলে পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
বিক্রম মিশ্রির সঙ্গে ব্রিফিং শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন দেশটির বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা ও সংসদের পররাষ্ট্রবিষয়ক স্থায়ী কমিটির প্রধান শশী থারুর। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিষয়ে আমাদের চমৎকার ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকালই পররাষ্ট্রসচিব বাংলাদেশ থেকে ফিরে এসেছেন। সফরের বিষয়ে তিনি আমাদের একেবারে পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্রিফ করেছেন। কিন্তু আমি এই বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবো না। তবে ২১-২২ জন সংসদ সদস্য সফরের বিষয়ে পররাষ্ট্রসচিবকে গুরুত্বপূর্ণ সব প্রশ্ন করেছেন। এ সময় তার কাছে অনেক বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। পররাষ্ট্রসচিবও বিস্তারিত ও সোজাসাপ্টা জবাব দিয়েছেন। কিন্তু আমি এই বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারব না।
সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় বার্তা সংস্থা ইন্দো-এশীয় নিউজ সার্ভিসের (আইএএনএস) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি ব্রিফিংয়ে অংশ নেওয়া সংসদ সদস্যদের জানান, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে ঢাকার অন্তর্বর্তী সরকার।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব দেশটির সংসদ সদস্যদের বলেন, ঢাকা সফরে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সময় ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন প্রশাসন দিল্লির সঙ্গে স্বাক্ষরিত কোনও চুক্তি পর্যালোচনা করার কথা উল্লেখ করেনি।
বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে আইএনএস জানায়, ব্রিফ্রিংয়ের সময় পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রির কাছে ভারতের কয়েকজন সংসদ সদস্য শেখ হাসিনা কোন মর্যাদায় দেশটিতে অবস্থান করছেন, সেই সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার ঢাকা সফরে আসেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি। গত আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এটিই ছিল ভারতের কোনো কূটনীতিকের বাংলাদেশ সফর। সেদিন তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ফরেন অফিস কনসালটেশনে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। মিশ্রি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ছাড়াও পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেন।
আরটিভি/কেএইচ
ভারতে বসে হাসিনার রাজনৈতিক কার্যক্রম, যা জানালেন বিক্রম মিশ্রি
বাংলাদেশ ও ভারতের চলমান উত্তেজনার মধ্যেই সম্প্রতি দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন ও ভারতের পক্ষে বিক্রম মিশ্রি নেতৃত্ব দেন। পরে দেশে ফিরে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব সদ্য সমাপ্ত এই সফর নিয়ে দেশটির (ভারতের) সংসদ সদস্যদের ব্রিফ করেন। সেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ভারতে বসে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়টি উঠে আসে।
ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য হিন্দুর বরাতে জানা যায়, বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি জানিয়েছেন, ভারতে বসে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনার বিষয়টি সমর্থন করে না নরেন্দ্র মোদি সরকার। এটি দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে একটি ক্ষুদ্র প্রতিবন্ধক।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা নিজের ব্যক্তিগত যোগাযোগের উপকরণ ব্যবহার করে বক্তব্য দিচ্ছেন। ভারত সরকার তাকে কোনো প্ল্যাটফর্ম বা সুযোগ প্রদান করেনি, যাতে তিনি ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে তার রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারেন।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব আরও বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কোনো একক রাজনৈতিক দল বা সরকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং বাংলাদেশের জনগণের প্রতি মনোযোগ দিয়েই সম্পর্ক বিবেচনা করে ভারত।
এদিকে ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিক্রম মিশ্রির সঙ্গে ব্রিফিং শেষে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা ও সংসদের পররাষ্ট্রবিষয়ক স্থায়ী কমিটির প্রধান শশী থারুর।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিষয়ে আমাদের চমৎকার ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। পররাষ্ট্রসচিব বাংলাদেশ সফরের বিষয়ে আমাদের একেবারে পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্রিফ করেছেন। কিন্তু আমি এই বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারব না। তবে ২১-২২ জন সংসদ সদস্য সফরের বিষয়ে পররাষ্ট্রসচিবকে গুরুত্বপূর্ণ সব প্রশ্ন করেছেন। এ সময় তার কাছে অনেক বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। পররাষ্ট্রসচিবও বিস্তারিত ও সোজাসাপ্টা জবাব দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। এমন পরিস্থিতিতে গত ৯ ডিসেম্বর ঢাকা সফর করেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি।
সফরকালে তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ফরেন অফিস কনসালটেশনে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ছাড়াও পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেন মিশ্রি।
আরটিভি/আইএম/এআর
বাংলাদেশের সঙ্গে চীন-পাকিস্তানের মতো সম্পর্ক চায় না ভারত: জয়শঙ্কর
বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পে ভারতের অংশীদারিত্বের কথা স্মরণ করিয়ে পারস্পরিক লাভে স্থিতিশীলতা ফেরানোর প্রত্যাশা জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এ সময় তিনি চীন-পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের প্রসঙ্গও টেনে ইঙ্গিত দিয়েছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সেরকম সম্পর্ক চায় না ভারত।
জয়শঙ্কর বলেন, বাংলাদেশে উন্নয়ন প্রকল্পে ভারতের একটি ভালো অতীত রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, যখন আমরা ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতির কথা বলি, তখন পাকিস্তান ও চীন বাদে প্রায় প্রতিটি প্রতিবেশী দেশেই আমাদের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্প রয়েছে এবং বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও তাই।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) লোকসভা অধিবেশনের ভাষণে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে এসব কথা বলেন তিনি।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণ ভারতের জন্য উদ্বেগের বিষয় এবং নয়াদিল্লি আশা করে ঢাকা নিজ স্বার্থেই তাদের নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা নেবে।
তিনি বলেন, ভারত আশা করে বাংলাদেশের নতুন সরকার পারস্পরিক লাভের একটা স্থিতিশীল সম্পর্কের দিকে যাবে। আমরা আমাদের উদ্বেগের বিষয়ে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। সম্প্রতি, পররাষ্ট্রসচিব ঢাকা সফর করেছেন। সফরকালে বৈঠকগুলোতে বিষয়টি উঠে এসেছে।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণ উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কারণ তাদের ওপর একাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে, যোগ করেন জয়শঙ্কর।
আরটিভি/এসএপি/এআর