সৌদিতে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে রাতভর পেটানো হতো অভিযুক্ত যুবরাজদের
দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে সুইস ব্যাংকে রক্ষিত অর্থ ফেরত দিতে চাপ সৃষ্টিতে ২০১৭ সালে কয়েকজন সৌদি প্রিন্সকে রাতভর বেধড়ক পেটানো হয়।
সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান দেশটির শীর্ষ অভিজাত ব্যবসায়ী ও কয়েকজন প্রিন্সের বিরুদ্ধে দুর্নীতিবিরোধী শক্ত অভিযান পরিচালনা করেন।ওই অভিযানে রিৎজ কার্লটন হোটলকে ব্যবহার করা হয়।যেখানে অভিযুক্তদের দিনের পর দিন বন্দী করে রাখা হয়। আটককৃতদের মধ্যে ছিলেন ধনাঢ্য প্রিন্স আল ওয়ালিদ বিন তালাল।যাকে ৮০ দিন আটকে রাখা হয়।
আরেকজন ছিলেন সৌদি ন্যশনাল গার্ডের প্রধান প্রিন্স মেতিয়েব বিন আব্দুল্লাহ।পরবর্তীতে ১ বিলিয়ন ডলার ফেরত দেওয়ার শর্তে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানকে দেয়া সাক্ষাতকারে ওই সময়ে আটক হওয়া একজন জানান, কিভাবে সবার চোখ বেঁধে রাখা হয়েছিল। তিনি জানান, আটক সৌদি যুবরাজদের দেয়ালের সাথে বেঁধে পেটানো হতো। কাউকে কাউকে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ফাঁস করে দেওয়ারও হুমকি দেয়া হয়।
সৌদি কর্তৃপক্ষ বলছে, দুর্নীতিবিরোধী ওই অভিযানে ১০৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার উদ্ধার করেছে সরকার। তবে ভিন্ন একটি সূত্র জানায়, উদ্ধারকৃত অর্থের পরিমাণ ২৮ বিলিয়ন ডলারেরও কম।
আটককৃত কয়েকজন জানান, কি কারণে তাদের আটক করা হয়েছিল, তাও তারা জানেন না। এটি ছিলো স্রেফ ব্লাকমেইল।তবে চাপ দেয়া সত্ত্বেও কয়েকজন বন্দী কোনো ধরনের স্বাক্ষর করতে রাজি হননি।
সৌদি আরবের অ্যাটর্নি জেনারেল পরবর্তীতে ঘোষণা করেন, সরকার আটককৃতদের সম্পত্তি, অর্থ ও বাণিজ্যিক সত্ত্ব জব্দ করে।
দুর্নীতিবিরোধী ওই অভিযানে ৩৮১ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আর আটক করা হয় ব্যবসায়ী ও প্রিন্সসহ ১৭ জনকে।
সূত্র জানায়, দুর্নীতি সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদ ও পেটানোর আগে আটককৃতের সাথে নরম ব্যবহার করা হতো। পরে রিৎজ কার্লটন হোটেলের দেয়ালের সাথে বেঁধে ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে পেটানো হতো বন্দীদের।
ঘটনার এক মাস আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরব সফরে এসে হোটেলটিতে অবস্থান করেন।
দুর্নীতিবিরোধী অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি সৌদি ক্রাউন প্রিন্স দেশটিতে ব্যাপক সংস্কার সাধন করেন।যার মধ্যে ছিল প্রথমবারের মতো নারীদের গাড়ি চালানোয় অনুমতি। তবে তুরস্কে সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার অভিযোগে তার ইমেজে অনেকখানি ভাটা পড়ে।
এমএস
মন্তব্য করুন