ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথমে বেশ দেখেশুনে শুরু করেন। আস্তে আস্তে সেট হন। এর মধ্যে শুধু বাজে বলগুলোকেই কাজে লাগান। সেট হলে যথাসাধ্য চেষ্টা করেন পুষিয়ে দেয়ার। হাঁকাতে পারেন একের পর এক বাউন্ডারি। এরকম ব্যাটিং স্টাইলের কথা স্মরণ করিয়ে দিলে নিশ্চয়-ই এখন বাংলাদেশের হয়ে যারা খেলছেন তাদের সবার আগে নাম চলে আসবে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের। এখন প্রশ্ন জাগতে পারে, কোনো উপলক্ষ নেই, কোনো সিরিজ নেই, হুট করেই তার প্রসঙ্গ এলো কেনো? আসাটা খুবই স্বাভাবিক। দেখতে দেখতে ক্যারিয়ারে ১০ বছর পূর্ণ করলেন তিনি।
স্বভাবে শান্ত, স্থির মাহমুদুল্লার অভিষেক ঘটে ২০০৭ সালের ঠিক এ দিনে। কথায় আছে, সকাল দেখেই বোঝা যায় দিনটি কেমন যাবে। ওই দিন তিনিও জানান দেন, থাকতেই এসেছেন; যেতে নয়। কলম্বোয় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অভিষেক ওয়ানডেতে বল হাতে ২৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নেয়ার পাশাপাশি ব্যাটিংয়ে করেন ৩৬ রান।
এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। দেখতে দেখতে দলের ব্যাটিং স্তম্ভ হয়ে উঠেছেন। এর রেশ ধরে ২০১৪ সালে প্রতিবেশি ভারতের বিপক্ষে খেলে ফেলেন হান্ড্রেড ওয়ানডে।
এখন পর্যন্ত ১৪৫টি ওয়ানডে খেলেছেন তিনি। ৩৪.৬৭ গড়ে করেছেন ৩ হাজার ১৫৫ রান। রয়েছে ৩ সেঞ্চুরি ও ১৭ হাফসেঞ্চুরি। সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ১২৮*।
এরই মধ্যে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে অনেককিছু দিয়েছেন মাহমুদুল্লাহ। দেশের হয়ে অনেক প্রথম কীর্তির মালিক তিনি। ওয়ানডে বিশ্বকাপে টাইগারদের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান তিনিই। ২০১৫ বিশ্বকাপে ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি আসে তার ব্যাটেই।
২০১৭ চ্যাম্পিয়নশিপেও নিজের ঝলক দেখান ব্যাংলাদেশ মিডলঅর্ডারের স্তম্ভ। তার মহাকাব্যিক ১০২ রানের ওপর ভর করে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হারা ম্যাচ জেতে টাইগাররা। এতে সেমির আশাও জিইয়ে থাকে বাংলাদেশের।
ওয়ানডে অভিষেকের ঠিক ২ বছর পর টেস্টে অভিষেক ঘটে মাহমুদুল্লাহর। ওয়ানডের চেয়েও টেস্ট অভিষেক আরো জাঁকালো হয় তার। কিংস্টনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওই টেস্টে বল হাতে শিকার করেন ৫ উইকেট। ওই টেস্ট জয়ে ব্যাট হাতেও রাখেন বড় অবদান।
এ পর্যন্ত ৩৩টি টেস্ট খেলেছেন এ ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ৩০.১৫ গড়ে ১ হাজার ৮০৯ রান করার পাশাপাশি শিকার করেছেন ৩৯ উইকেট। সেঞ্চুরি রয়েছে একটি ও হাফসেঞ্চুরি ১৩টি। সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ১১৫।
ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণেও সফল ৩১ বছরের এ ক্রিকেটার। ৫৮ টি-টোয়েন্টি খেলে ২০.২৫ গড়ে করেছেন ৮১০ রান। সেইসঙ্গে শিকার করেছেন ২২ উইকেট। সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ৬৪*। বর্তমানে টি-টোয়েন্টি অলরাউন্ডারদের র্যাংকিংয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছেন তিনি।
ডিএইচ