জম্মু-কাশ্মীরে গোলাগুলিতে ভারতীয় মেজরসহ চার সেনা নিহত
ভারতের জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে গোলাগুলিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক মেজরসহ চার সেনা নিহত হয়েছেন।
সোমবার (১৫ জুলাই) জম্মু-কাশ্মীরের দোদা জেলায় গোলাগুলির এ ঘটনাটি ঘটে। খবর এনডিটিভির।
কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, সন্ত্রাসীদের উপস্থিতির সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়ে দোদা জেলার দেসায় সোমবার যৌথ অভিযান চালায় ভারতের সেনাবাহিনী ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। রাত ৯টার দিকে যৌথ বাহিনী সন্ত্রাসীদের মুখোমুখি হলে তুমুল গোলাগুলি শুরু হয়।
গত সপ্তাহেও জম্মু-কাশ্মীরের কাঠুয়ায় অভিযান চালাতে গিয়ে নিহত হয়েছেন পাঁচজন সেনা। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ অঞ্চলে অভিযানে গিয়ে গত ৩২ মাসে ৪৮ ভারতীয় সেনা প্রাণ হারিয়েছেন।
মন্তব্য করুন
দেশে জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় ড. ইউনূসকে চার মার্কিন আইনপ্রণেতার চিঠি
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের চার সদস্য। এতে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সংস্কার এবং জবাবদিহিতার জরুরি প্রয়োজনের ওপর জোর দিয়েছেন তারা।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের পররাষ্ট্র সম্পর্কবিষয়ক কমিটির ওয়েবসাইটে এ চিঠি প্রকাশ করা হয়েছে।
চিঠিতে তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের এই সংকটময় সময়ে এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সফলভাবে উত্তরণ নিশ্চিতে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে প্রস্তুত তারা। চিঠিতে স্বাক্ষরকারী আইনপ্রণেতা সিনেটর বেন কার্ডিন, সিনেটর ক্রিস মারফি, সিনেটর ক্রিস ভ্যান হলেন ও সিনেটর জেফ মার্কলে।
বাংলাদেশের দায়িত্ব নেওয়ায় চিঠির শুরুতেই অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তারা। এতে ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের প্রতি শোক প্রকাশ করে ছাত্রদের ওপর সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।
সিনেটররা লিখেছেন, যখন নাগরিকেরা একত্র হন, তখন তাদের কণ্ঠস্বর এমনকি সবচেয়ে অনমনীয় ও কর্তৃত্ববাদী নেতাদেরও ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করতে পারে। বাংলাদেশের এই রাজনৈতিক পরিবর্তন সংস্কারের জন্য একটি ঐতিহাসিক সুযোগ তৈরি করেছে। বাস্তবিক অর্থেই দেশে একটি রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তন আনার প্রয়োজন।
এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের জনগণ এমন একটি সরকারের যোগ্য যে তাদের কণ্ঠস্বরকে সম্মান করবে, তাদের অধিকার রক্ষা করবে এবং তাদের মর্যাদা সমুন্নত রাখবে। তবে বাংলাদেশে চলমান পরিস্থিতিতে ড. ইউনূসের প্রতি আরও কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন ওই সিনেটররা। হিন্দু সম্প্রদায়, কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাসহ ঝুঁকিতে থাকা সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ওপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দ্রুত জবাবদিহি করার ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
সিনেটররা চিঠিতে বলেছেন, বর্তমানে বাংলাদেশিদের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ। একত্রিত হওয়ার মাধ্যমে এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার পুনর্গঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিপুল সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগানো সম্ভব।
আরটিভি/এসএপি-টি
নিউইয়র্কে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও জয়শঙ্করের বৈঠক, উঠতে পারে যেসব বিষয়
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করবেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তৌহিদ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে টানাপোড়েন চলছে, তা অস্বীকার করা যাবে না। সে টানাপোড়েন কাটিয়ে ওঠার জন্য আলোচনা হবে। এ বিষয়ে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবো।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতের কাছ থেকে ফেরত চাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। যদিও ঢাকার পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ব্যাপারে দিল্লিকে কোনো অনুরোধ জানানো হয়নি।
তবে এ বিষয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দৈনিক জাগরণ জানিয়েছে, বৈঠকে জয়শঙ্কর বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত অত্যাচারের বিষয়টি উত্থাপন করতে পারেন। এছাড়া ঢাকার সঙ্গে দিল্লির কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করবেন তিনি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কোনো বৈঠক হবে না।
আরটিভি/এসএপি-টি
বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের উল্টো করে ঝোলাব: অমিত শাহ
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের উল্টো ঝুলিয়ে সোজা করার হুমকি দিয়েছেন।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) ঝাড়খণ্ডে বিজেপি আয়োজিত এক নির্বাচনী সমাবেশে তিনি এই হুমকি দেন।
অমিত শাহ বলেন, ভোটব্যাংক হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে জেএমএম, আরজেডি এবং কংগ্রেস অনুপ্রবেশ বন্ধ করছে না। যদি আপনারা ঝাড়খণ্ডের সরকার পরিবর্তন করেন তাহলে আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, ঝাড়খণ্ড থেকে একজন একজন করে সব রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে বের করে দেবে বিজেপি।
তিনি আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রীকে পরিবর্তন করা বা জেএমএম-কংগ্রেস-আরজেডির যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত সরকারের পরিবর্তে নির্বাচনে বিজেপিকে আনা উদ্দেশ্য নয়। ভোটারদেরকে দুর্নীতিবাজ সরকারকে সরিয়ে দিতে হবে। এমন একটি সরকার আনতে হবে যারা দুর্নীতি বন্ধ করবে।
ভারতের কেন্দ্রীয় এই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যে সরকার অনুপ্রবেশকারীদের মাধ্যমে উপজাতি মেয়ে এবং তাদের সংস্কৃতিকে ধ্বংস করছে তাদেরকে সরিয়ে দিয়ে পরিবর্তন আনতে হবে। চাকরির জন্য আমার উপজাতি ভাই ও বোনেরা দেশের বিভিন্ন অংশে যান। এর পরিবর্তে এমন একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে যে সরকার সাঁওতাল পরগণার জন্য কর্মসংস্থান নিয়ে আসবে। আমরা শুধু মুখ্যমন্ত্রীর পরিবর্তন চাই না। আমরা চাই ঝাড়খন্ডকে পাল্টে দিতে।
বিজেপির এই নেতা বলেন, সাঁওতাল পরগনার জনসংখ্যার শতকরা ৪৪ ভাগই ছিল উপজাতি। কিন্তু এখন তা নেমে দাঁড়িয়েছে শতকরা ২৮ ভাগে। ৫ বছরের জন্য ঝাড়খন্ডে আপনাদের উচিত বিজেপির সরকার গঠন করা। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, সাঁওতাল পরগনায় যেসব বাংলাদেশির অনুপ্রবেশ হয়েছে তাদেরকে উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখবে আমাদের সরকার।
প্রসঙ্গত, সব ঠিক থাকলে আগামী নভেম্বর মাসে ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। তবে নির্বাচনের তারিখ এখনও ঘোষণা করা হয়নি। এরই মধ্যে আগেভাগে প্রচারণা শুরু করেছে বিজেপি। আর নির্বাচনী প্রচারণায় বরাবরের মতোই কথিত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে কথা বলছেন দলটির নেতারা।
সূত্র: টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া, দ্য হিন্দু ও হিন্দুস্তান টাইমস
আরটিভি/আইএম
মোদি-বাইডেনের একান্ত বৈঠকে উঠল বাংলাদেশ প্রসঙ্গ!
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একান্তে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠককে কেন্দ্র করে জো বাইডেন তার নিজের বাসভবনে নরেন্দ্র মোদিকে স্বাগত জানান। এই বৈঠকেই অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে আলোচনা হয় বাংলাদেশ নিয়েও।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের দিলাওয়ারে বাইডেন এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বিশ্বের এই দুই নেতা। এ নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রির ‘এক্স’ পোস্টে এসব বিষয় উঠে আসে।
বৈঠকের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে মোদি বাংলাদেশ প্রসঙ্গ সুকৌশলে এড়িয়ে গিয়ে লিখেন, আমাদের আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ ছিল। বৈঠকে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার সুযোগ হয়েছে।
এদিকে, নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে বাইডেনের সঙ্গে বংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র বলছে, গত তিন দশকে বাংলাদেশের কোনো রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানের সঙ্গে এমন বৈঠক কখনও হয়নি। সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে আলাদাভাবে কোনো দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে বসেছেন এমন ঘটনা খুব কমই রয়েছে।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক যাচ্ছেন ড. ইউনূস। তিনি ২৭ সেপ্টেম্বর সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। ওইদিন রাতে দেশের উদ্দেশে রওনা করবেন ড. ইউনূস।
আরটিভি/এএইচ/ডিসিএনই
খাবারে জীবন্ত ইঁদুর, বিমানের জরুরি অবতরণ
যাত্রীর খাবারে জীবন্ত ইঁদুর, যে কারণে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান এয়ারলাইনসের (এসএএস) একটি ফ্লাইটকে জরুরি অবতরণ করতে হয়েছে।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এ চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নরওয়ের অসলো থেকে স্পেনের মালাগা যাওয়ার পথে ইঁদুরবিপত্তিতে পড়ে এসএএসের একটি ফ্লাইট ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে জরুরি অবতরণ করতে বাধ্য হয়।
এসএএস এয়ারলাইনসের মুখপাত্র অয়েস্টেইন শ্মিট জানিয়েছেন, ইঁদুরটি বিমানে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলে জরুরি অবতরণের এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরে যাত্রীদের ভিন্ন একটি ফ্লাইটে মালাগায় পৌঁছে দেওয়া হয়।
বিবিসি বলছে, ঘটনাটি খুব সাবধানে সামলানো হয়েছিল এবং তেমন কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তবে ফ্লাইটটি ডাইভার্ট করায় গন্তব্যে পৌঁছাতে কয়েক ঘণ্টা বেশি সময় লেগেছে। সাধারণত বিমানের ফ্লাইটে ইঁদুরের উপস্থিতির বিষয়ে কঠোর বিধি-নিষেধ থাকে। কারণ, বৈদ্যুতিক তার চিবিয়ে কেটে ফেলতে পারে ইঁদুর।
আরটিভি/টি
মোদি-ইউনূসের বৈঠক না হওয়ার কারণ জানালেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনকে ঘিরে নিউইয়র্কে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সম্ভাব্য বৈঠকটি না হওয়ার কারণ জানিয়েছে নয়াদিল্লি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দুই নেতার বৈঠক না হওয়ার প্রধান কারণ হলো ব্যস্ত এবং অপেক্ষাকৃত সংক্ষিপ্ত সফরসূচি।যেখানে তারা একই সময় নিউইয়র্কে অবস্থান করেননি।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষ করে মঙ্গলবার ভোরের দিকে নয়াদিল্লির বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে মোদিকে বহনকারী উড়োজাহাজটি।
আগের দিন সোমবার এক ব্রিফিংয়ে বিক্রম মিশ্রি বলেন, আপনারা জানেন এবার আমাদের প্রধানমন্ত্রী খুবই সংক্ষিপ্ত সফরে নিউইয়র্কে যান। তার সফরের মেয়াদ ছিল মাত্র ৫৫ ঘণ্টা। কয়েক মিনিট আগে তিনি নিউইয়র্ক থেকে নয়াদিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এখনও নিউইয়র্কে গিয়ে পৌঁছাননি। যেহেতু উভয়ের সফরসূচি ভিন্ন ছিল, তাই এবার তাদের মধ্যে বৈঠকের কোনো সুযোগ ছিল না।
পররাষ্ট্র সচিব জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং আগামী নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও বৈঠকের কথা ছিল নরেন্দ্র মোদির। কিন্তু সংক্ষিপ্ত শিডিউল এবং ব্যস্ততার কারণে সেই বৈঠকও বাতিল হয়েছে।
এদিকে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টা ১৬ মিনিটে জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি।
নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় অনুযায়ী মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে, সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ভোরে কাতার এয়ারওয়েজের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নিউইয়র্কের উদ্দেশ্যে রওনা হন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন নিরাপত্তা ও গণমাধ্যমকর্মীসহ মোট ৫৭ জন। সূত্র: এনডিটিভি
আরটিভি/এফএ
ক্লিনটনের অনুষ্ঠানে ড. ইউনূসের সঙ্গে মঞ্চে ওঠা তৃতীয় ব্যক্তি নিয়ে বিতর্ক
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে মঙ্গলবার দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
‘ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ লিডারস স্টেজ’ শীর্ষক ওই অনুষ্ঠানে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে কীভাবে ছাত্র-জনতা সাহস নিয়ে বুক পেতে দাঁড়িয়েছে, সেই ঘটনা পুরো বিশ্বের কাছে তুলে ধরেন তিনি। বক্তব্যের শেষ দিকে ড. ইউনূস তার সফরসঙ্গীদের মধ্যে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারীদের মঞ্চে ডাকেন।
প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানে মঞ্চে ওঠেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বর্তমানে তার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকা তিথি। এ সময় তাদের সঙ্গে মঞ্চে ওঠেন তৃতীয় আরেক তরুণ, যার নামই ছিল না ড. ইউনূসের সফরসঙ্গীর তালিকায়।
বিল ক্লিনটনের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে ড. ইউনূসের পাশে গিয়ে দাঁড়ান তিনজনই। এ বিষয়টি জন্ম দিয়েছে বিতর্কের। বাংলাদেশের গণমাধ্যমে অনুষ্ঠানটি প্রচারের পর তৃতীয় ওই তরুণের পরিচয় নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই তরুণকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হিসেবে দাবি করেছেন। ফেসবুকে ছড়িয়ে যাওয়া একটি ছবিতে ওই তরুণকে দেখা গেছে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের সঙ্গে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, তৃতীয় ওই তরুণ জাহিন রোহান রাজিন; হাইড্রোকো প্লাস-এর প্রতিষ্ঠাতা।
কিন্তু বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে ড. ইউনূসের সফরসঙ্গী মাহফুজ আলমের মন্তব্য। বুধবার রাতে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ক্লিনটন ইনিশিয়েটিভের (সিজিআই) অনুষ্ঠানের মঞ্চে ওঠা ওই তৃতীয় তরুণকে অনুপ্রবেশকারী বা ইনট্রুডার বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি লিখেছেন, ‘ওই ব্যক্তি অনুপ্রবেশকারী এবং অসৎ। তিনি নিজ ব্যবস্থাপনায় ক্লিনটন ইনিশিয়েটিভের আয়োজনে যোগ দিয়েছেন।’
মাহফুজ তার স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘আমরা তার উপস্থিতি ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতাম না। ডেলিগেশন দলের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেননি তিনি। স্যার যখন আমাদের মঞ্চে ডাকলেন, তিনি তড়িঘড়ি করে দাঁড়িয়ে আমাদের আগে মঞ্চের দিকে ছুটে গেলেন। আমার সন্দেহ হলেও তার মঞ্চে যাওয়া আমি আটকাতে পারিনি। উপস্থিত বিশ্বনেতা ও গণ্যমান্যদের জন্য অসহায় বোধ করছিলাম।’
তিনি আরও লিখেন, ‘মনে হচ্ছে, এটা ছিল ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠীর একটি পূর্বপরিকল্পিত কাজ। আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানের নেতৃবৃন্দ, সমন্বয়কারী ও যোদ্ধাদের কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’
এদিকে নিজেকে একজন জেন-জি হিসেবে পরিচয় দিয়ে একটি গণমাধ্যমকে জাহিন জানিয়েছেন, ওই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পেয়েই গিয়েছিলেন তিনি। যখন ড. ইউনূস ছাত্র আন্দোলনের নেতাদেরকে ডাকেন তখন তিনি দর্শকসারি থেকে করতালি দিচ্ছিলেন। পরে একজন বাংলাদেশি তরুণ হিসেবে কিছু না ভেবেই স্টেজে উঠে গেছেন মাহফুজদের পেছন পেছন।
তিনি আরও জানান, ২০২১ সালের ইউনূস অ্যান্ড ইয়ুথ ফেলো তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠান হাইড্রোকো প্লাসের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি প্রফেসর ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে চাচ্ছিলেন।
এ সময় সাবেক মন্ত্রী তাজুলের সঙ্গে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাহিন বলেন, ২০২২ সালে ঢাকা ওয়াসার সঙ্গে একটা কাজ করে তার প্রতিষ্ঠান হাইড্রোকো প্লাস। ওই কাজের জন্যই স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করতে হয়েছিল তার। সেসময় ছবিটি তোলা হয়। ছবিটা কীভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এলো, তাও জানেন না বলে দাবি জাহিনের।
আরটিভি/এসএইচএম-টি