কলকাতায় আর যাত্রী নিয়ে ছুটবে না ১৫০ বছর ধরে চলা ট্রাম
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার সড়ক থেকে ১৫০ বছর ধরে চলা ট্রাম তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) পশ্চিমবঙ্গের পরিবহনমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, কলকাতার সড়কে ধর্মতলা থেকে বালিগঞ্জ আর ধর্মতলা থেকে শ্যামবাজার এই দুই লাইনে ট্রাম চলত। তবে এবার সেসব লাইন তুলে দেওয়া হচ্ছে। শুধু ধর্মতলা থেকে ময়দান পর্যন্ত ‘হেরিটেজ’ (ঐতিহ্য) হিসেবে ট্রাম চলবে।
কলকাতায় ১৮৭৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রথমবার ঘোড়ায় টানা ট্রাম চালানো হয়। শিয়ালদহ থেকে আর্মেনিয়া ঘাট পর্যন্ত ওই ট্রাম চলে। পরে ‘কলকাতা ট্রামওয়ে কোম্পানি লিমিটেড’ গঠন করা হয়। এ কোম্পানির নিবন্ধন ছিল লন্ডনে। পরে ১৯০২ সালে কলকাতায় প্রথমবার চালু করা হয় বৈদ্যুতিক ট্রাম। বেশ কয়েকটি পথে ট্রাম চলাচল করত।
মন্তব্য করুন
ভারতে কর্মরত দুই কূটনীতিককে অপসারণ
দিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশন ও কলকাতায় ডেপুটি হাইকমিশন থেকে দুই কূটনীতিককে অপসারণ করা হয়েছে। দিল্লিতে শাবান মাহমুদ ও কলকাতায় রঞ্জন সেনকে দায়িত্বে অব্যাহতি দিয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসতে বলা হয়েছে।
এই দুইজন ফরেন সার্ভিসের ক্যাডার ছিলেন না। তারা ছিলেন চুক্তিভিত্তিক কর্মী। তাদের চুক্তি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর এই প্রথম ভারত থেকে দুই কূটনীতিককে সরিয়ে দেওয়া হলো।
শাবান মাহমুদ দিল্লিতে ফার্স্ট সেক্রেটারি (প্রেস)-এর দায়িত্বে ছিলেন। রঞ্জন সেনও কলকাতায় ডেপুটি হাইকমিশনে ফার্স্ট সেক্রেটারি(প্রেস) ছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, সরকারের নির্দেশের পর তিনি দায়িত্বভার ছেড়ে দিয়েছেন। রঞ্জন সেনের কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৬ সালে।
বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখনও ভারতেই আছেন। সম্প্রতি তার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে। ভারত জানিয়েছে, শেখ হাসিনা তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিজেই ঠিক করবেন।
সূত্র: ডয়েচ ভেলে
এবার ফারাক্কার ১০৯ গেট খুলে দিলো ভারত
ভারতের বিহার ও ঝাড়খণ্ডে বন্যার জেরে ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৬ আগস্ট) গেটগুলো খুলে দেওয়া হয়। এতে একদিনে ১১ লাখ কিউসেক পানি বাংলাদেশে ঢুকবে।
বাঁধ খুলে দেওয়ায় পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদসহ বাংলাদেশেও বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে বন্যা পরিস্থিতি ও পাহাড়ি ঢলের বিষয়ে আগে থেকে বাংলাদেশকে তথ্য দেওয়া হচ্ছে।
সোমবার (২৬ আগস্ট) বাঁধ কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতিবেশী দুই রাজ্যে বন্যার জেরে পানির চাপ পড়েছে। তবে স্বস্তির বিষয়, এখনও নেপাল থেকে পাহাড়ি ঢল নামেনি। ফারাক্কা বাঁধ এলাকায় পানি বিপৎসীমার ৭৭ দশমিক ৩৪ মিটার উপর দিয়ে বইতে থাকায় বাধ্য হয়ে গেট খুলতে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ফিডার ক্যানেলেও পানির পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।
ফারাক্কা বাঁধের জেনারেল ম্যানেজার আর দেশ পাণ্ডে বলেন, ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ সবসময় এলার্ট রয়েছে। প্রতিমুহূর্তে নজর রাখা হচ্ছে। খুব কম সময়ের মধ্যে যেভাবে পানির চাপ তৈরি হয়েছে, তাতে ১০৯ গেটের সবকটি খুলে না দিলে ব্যারাজের ওপর বড় চাপ তৈরি হচ্ছিল। এর ফলে বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারতো। আপাতত ফিডার ক্যানেলে ৪০ হাজার কিউসেক ও ডাউন স্ট্রিমে ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে।
এদিকে, টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আকস্মিক বন্যার কবলে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল। বন্যায় বাস্তচ্যুত হয়েছে লাখো মানুষ। প্লাবনে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৩ জন।
অভিযোগ উঠেছে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ডুম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধ খুলে দেয়ায় এই আকস্মিক বন্যা। কিন্তু দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ভিন্ন কথা।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গোমতী নদীর ক্যাচমেন্ট এলাকায় গত কয়েক দিন ধরে এই বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। বাংলাদেশে বন্যা মূলত বাঁধের নিচের দিকের এই বৃহৎ ক্যাচমেন্টের পানির কারণে।
ফারাক্কার গেট খুলে দেওয়ার বিষয়ে যা জানাল ভারত
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় অবস্থিত ফারাক্কা ব্যারেজের ১০৯টি গেটের সবগুলো খুলে দিয়েছে ভারত। এতে করে দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। গণমাধ্যমে এমন প্রতিবেদন প্রকাশের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত।
সোমবার (২৬ আগস্ট) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি করতে ফারাক্কা ব্যারেজের গেট খুলে দেওয়ার বিষয়ে ভুয়া ভিডিও, গুজব এবং ভীতি ছড়ানো হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ফারাক্কা ব্যারেজের গেট খুলে দেওয়ার বিষয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখেছি। গেট খোলায় স্বাভাবিক গতিপথে নদীর ভাটিতে গঙ্গা/পদ্মায় ১১ লাখ কিউসেক পানি প্রবাহিত হবে। গঙ্গা নদীর অববাহিকার ক্যাচমেন্ট এলাকার উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় এই পানি প্রবাহিত হওয়াটা স্বাভাবিক ঘটনা।’
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘এটা বুঝতে হবে যে, ফারাক্কা কেবল একটি ব্যারেজ, ড্যাম নয়। পানির স্তর যখনই ব্যারেজের স্তরে পৌঁছায়, তখন যে পরিমাণ পানির প্রবাহই হোক না কেন, তা বেরিয়ে যায়। এটা গঙ্গা/পদ্মা নদীর ওপর গেট বসিয়ে বানানো একটি কাঠামোমাত্র; যা এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে মূল নদী থেকে ৪০ হাজার কিউসেক পানি সরিয়ে ফারাক্কা ক্যানেলে নেওয়া যায়। আবার একই সঙ্গে বাংলাদেশের দিকে পানিপ্রবাহের ভারসাম্যও ঠিক থাকে।’
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই মুখপাত্র বলেন, ‘ফারাক্কা ব্যারেজের গেট খুলে দেওয়ার বিষয়ে প্রোটোকল অনুযায়ী বাংলাদেশে সংশ্লিষ্ট যৌথ নদী কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত ও সময়মত তথ্য শেয়ার করা হয়। এবারও গেট খুলে দেওয়ার বিষয়ে সেটি করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি করতে আমরা ভুয়া ভিডিও, গুজব এবং ভয়ভীতি ছড়াতে দেখছি। তবে সঠিক তথ্যের মাধ্যমে দৃঢ়ভাবে এই ধরনের গুজব প্রতিহত করা উচিত।’
এর আগে, সোমবার ভারতের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ১৮ এক প্রতিবেদনে জানায়, প্রবল বৃষ্টির কারণে দেশটির বিহার ও ঝাড়খণ্ড রাজ্যে বন্যা ও পানির চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় ফারাক্কা ব্যারেজের ১০৯টি গেটের সবগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের মুর্শিদাবাদসহ বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বন্যা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বাইডেনের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে যা বললেন মোদি
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
সোমবার (২৭ আগস্ট) রাতে নিজের এক্স হ্যান্ডলে বাইডেনের সঙ্গে আলাপের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মোদি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ‘আজ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে ফোনালাপ হয়েছে। এ সময় ইউক্রেন পরিস্থিতিসহ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নানা বিষয়ে আমরা বিশদে মতবিনিময় করেছি।’
তিনি আরও লেখেন, ‘বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি এবং দেশটিতে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছি। পাশাপাশি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু- বিশেষ করে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
Spoke to @POTUS @JoeBiden on phone today. We had a detailed exchange of views on various regional and global issues, including the situation in Ukraine. I reiterated India’s full support for early return of peace and stability.
We also discussed the situation in Bangladesh and…
— Narendra Modi (@narendramodi) August 26, 2024
আসামে বসেই বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর ভারতবিরোধী পোস্টে ‘লাভ রিয়েক্ট’, অতঃপর...
আসামে বসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘ভারতবিরোধী’ একটি পোস্টে লাভ রিয়েক্ট দেওয়া এক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে দেশে পাঠিয়ে দিয়েছে শিলচরে অবস্থিত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি।
সোমবার (২৬ আগস্ট) পুলিশের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ২০২১ সালে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে বাংলাদেশি ওই শিক্ষার্থী ভর্তি হন। সম্প্রতি ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভারতবিরোধী পোস্টে লাইক দেওয়ার কারণে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এর জের ধরে তাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে ইনস্টিটিউটটি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয় শিলচরের সাবেক শিক্ষার্থী। সে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর বিভিন্ন মন্তব্যের স্ক্রিনশর্টও শেয়ার করেন। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীকে সোমবার সকালে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য আন্তর্জাতিক সীমান্ত বর্ডার করিমগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয় এবং বেলা ১১টার দিকে তাকে কড়া নিরাপত্তায় বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়।
ওই শিক্ষার্থী দেশের ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন এবং রোববার সে ছুটিও নিয়েছিল বলে জানিয়েছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি শিলচরের কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, আসামের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে বাংলাদেশের প্রায় ৭০ জন শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিভাগে অধ্যায়ন করছেন।
বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে যা জানাল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর শত শত মামলায় এখন পর্যন্ত অর্ধ লক্ষাধিক ব্যক্তি আসামি হয়েছেন। সাবেক মন্ত্রী, বিচারপতি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন স্তর, প্রশাসন, ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, শিক্ষক, খেলোয়াড়, শিল্পী ও আওয়ামী লীগের সব স্তরে নেতাকর্মীরা এখন আসামি হচ্ছেন। বিচারিক প্রক্রিয়ায় আইনগতভাবে তাদের অধিকার যেন প্রতিপালন হয়, সে বিষয়েও লক্ষ্য রাখার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (২৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র এ আহ্বান জানান।
এদিকে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ভাষ্য জানতে চাইলে একজন মুখপাত্র লিখিত বিবৃতিতে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওই মুখপাত্র বলেন, ‘সাবেক কর্মকর্তা ও সাংবাদিকসহ সবার জন্য নিরপেক্ষ বিচারের নিশ্চয়তা চেয়ে আমরা ন্যায় ও পক্ষপাতহীন আইনি প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত করছি।’
তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে সাংবাদিকতা করতে গিয়ে প্রতিশোধপরায়ণতার শিকার হওয়া এড়াতে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে সাংবাদিকদের নিরপেক্ষ বিচারপ্রাপ্তি ও তাদের প্রাপ্য সম্ভাব্য সব সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমরা কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি।’
হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ডে আছেন আওয়ামীপন্থি সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত দম্পতি শাকিল আহমেদ ও ফারজানা রূপা। বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর তারা চাকরি হারান এবং গ্রেপ্তার হন।
এদিকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ভারতে পালিয়ে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেই অর্ধ শতাধিক মামলা হয়েছে। তার ‘দোসর’ হিসেবে বর্ণনা করে সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের শরিক দলের নেতাদেরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। গ্রেপ্তারদের অনেককে আদালতে তোলা হচ্ছে, রিমান্ডে দেওয়া হচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে জনরোষের বহিঃপ্রকাশ দেখা যাচ্ছে, আক্রান্ত হচ্ছেন আসামিরা। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলারও খবর রয়েছে।
এসব বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠার যে উদ্যোগ নিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস, আমরা তাকে স্বাগত জানিয়েছি। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠাকে অন্তর্বর্তী সরকার অগ্রাধিকারে রাখায় আমরা অনুপ্রাণিত।’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি অনেক পুলিশ থানায় ফিরেছেন এবং সেনাবাহিনী তাদের সহযোগিতা করছে। আগেই বলেছি, মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে আমরা কাজ করতে প্রস্তুত। এই সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, ঐক্য ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের রূপরেখা নিয়ে কাজ করছে।’
দেশের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলে বিপুল জনগোষ্ঠী বন্যাকবলিত। যারা বন্যায় প্রিয়জন হারিয়েছেন এবং যাদের ঘরবাড়ি হারিয়ে গেছে, তাদের জন্য গভীর সমবেদন জানিয়ে বন্যার্তদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা দেওয়ার কথা তুলে ধরেন মুখপাত্র।
তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক বন্যায় উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা এবং বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি মেরামতের জন্য রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির মাধ্যমে ইউএসএআইডি ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার সহায়তা দিয়েছে। প্রয়োজন হলে আরও সহায়তাসামগ্রী দিতে ইউএসএআইডি প্রস্তুত রয়েছে।’
ড. ইউনূসের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর ফোনালাপ, যেসব কথা হলো
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। ফোনালাপে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হওয়ায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিনন্দন জানান তিনি। একইসঙ্গে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সমৃদ্ধির জন্য ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে বলে উভয় নেতা সম্মত হয়েছেন।
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে রেডিও পাকিস্তান। এ ছাড়া পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইং থেকে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও উভয় নেতার ফোনালাপের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ শুক্রবার বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে টেলিফোনে কথা বলেছেন। কথোপকথনে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ প্রধান উপদেষ্টার পদ গ্রহণের জন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিনন্দন জানান এবং বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তার অবদানের প্রশংসা করেন। এ ছাড়া বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বন্যায় সৃষ্ট ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনায়ও সমবেদনা প্রকাশ করেন শেহবাজ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, (বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে) বিভিন্ন ক্ষেত্রে বর্ধিত সহযোগিতার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার গুরুত্বের ওপর জোর দেন শেহবাজ শরিফ। পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে ঐতিহাসিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বন্ধন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ উভয় দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক, সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান এবং উভয় দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ আরও জোরদার করার বিষয়েও গভীর ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
ফোনালাপে উভয় নেতা একমত হন যে, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের জনগণের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রয়োজন রয়েছে। এ ছাড়া বৃহত্তর আঞ্চলিক সহযোগিতা দক্ষিণ এশিয়ার জনগণের জীবনযাত্রার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলেও একমত হন তারা।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস টেলিফোন আলাপে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফকে ধন্যবাদ জানান।