লাহোরে ভয়ংকর দূষণ, ঘরে থাকার অনুরোধ
ভয়ংকর দূষণের কবলে পাকিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লাহোর। প্রাথমিক স্কুল সাতদিন ছুটি। মানুষকে ঘরে থাকার অনুরোধ করা হয়েছে।
সোমবার সকালে লাহোরের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) ছিল ৪২০। একিউআই ৪০০ ছুঁলেই তা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভয়ংকর খারাপ বলা হয়। ফলে লাহোরের দূষণ শরীরের পক্ষে ভয়ংকর জায়গায় চলে গেছে। লাহোরের উপরে ধোঁয়াশার পুরু স্তর জমে রয়েছে।
এর মূল কারণ, খড় পোড়ানো, যানবাহনের ধোঁয়া এবং শীত এসে যাওয়ায় তাপমাত্রা কিছুটা কমে যাওয়া। ফলে ধোঁয়াশাও বাড়ছে। হাওয়া জোরে বইছে না বলে তা অন্যত্র যেতে পারছে না।
ফলে রোববার ও সোমবার সকালে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় লাহোর একেবারে উপরের দিকে ছিল।
শহরের একিউআই বিশ্লেষণ করে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, লাহোরে হাওয়ায় দূষিত পদার্থের পরিমাণ ভয়ংকরভাবে বেড়ে গেছে। একেক জায়গায় একিউআই প্রায় এক হাজার ছুঁয়েছে। পাঞ্জাবের আঞ্চলিক সরকারের মতে পরিস্থিতি অভূতপূর্ব। একিউআই তিনশ ছাড়ালেই তা অত্যন্ত ক্ষতিকর বলে মনে করা হয়।
সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে? পাঞ্জাবের মন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেছেন, বাচ্চাদের জন্য এই দূষণ ভয়ংকর ক্ষতিকারক। স্কুলে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। উঁচু শ্রেণিতে থাকা পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যের উপরেও নজর রাখা হচ্ছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে ৫০ শতাংশ কর্মীকে ওয়ার্ক ফ্রম হোম বা বাড়ি থেকে কাজ করতে বলা হয়েছে। হাসপাতালগুলিতেও দূষণের জন্য বিশেষ কাউন্টার থাকছে। পাঞ্জাব সরকার কারখানার থেকে বের হওয়া ধোঁয়া পরীক্ষা করার জন্য বিশেষ পুলিশ নিয়োগ করেছে।
ভারতকে দোষারোপ আওরঙ্গজেব বলেছেন, প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে দূষিত বাতাস আসছে। যার ফলে লাহোরের অবস্থা আরো খারাপ হচ্ছে।
তিনি জানিয়েছেন, সীমান্তের দুই পারে ব্যবস্থা না নিলে এই সমস্যার সমাধান হবে না। ফলে যৌথভাবে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।
দিওয়ালির পর দিল্লিতেও দূষণের পরিমাণ খুবই বেড়েছে। দিল্লির একিউআই সোমবার সকালে গড়ে চারশর ওপরে আছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার মতে, বায়ুদূষণের ফলে শরীর খারাপ হতে পারে। দীর্ঘক্ষণ ধরে এই দূষণের মধ্যে থাকলে হৃদরোগ, ফুসফুসের ক্যানসার, ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। এই দূষিত বায়ু বাচ্চাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। তাদের ফুসফুস পুরোপুরি গঠিত নয় বলে তারা বড়দের তুলনায় তাড়াতাড়ি নিঃশ্বাস নেয়। ফলে তারা দূষিত বায়ু আরো বেশি করে ভিতরে নেয়।
ইউনিসেফের রিপোর্ট বলছে, উপমহাদেশের ৬০ কোটি শিশু প্রতিদিন এই ভয়ংকর বায়ুদূষণের মধ্যে পড়ে।
আরটিভি/এএইচ
মন্তব্য করুন