ভারতে রুদ্ধদ্বার কোর্টরুমে আরজি কর মামলার বিচার শুরু
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণ মামলার বিচার সোমবার শুরু হলো। শিয়ালদহের রুদ্ধদ্বার আদালতে এই বিচার পর্ব শুরু হলো। সিবিআই তাদের চার্জশিটে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কেই প্রধান অভিযুক্ত হিসাবে চিহ্নিত করেছে। তাকে কালো প্রিজন ভ্যানে করে প্রবল নিরাপত্তার মধ্যে আদালতে নিয়ে আসা হয়। আদালত চত্বরের মূল প্রবেশদ্বার দিয়ে ভ্যান ঢুকিয়ে তা আবার বন্ধ করে দেয়া হয়।
সাংবাদিক সত্যজিৎ সাউ জানিয়েছেন, আদালত চত্বরে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করে রাখা হয়েছিল। গত সোমবার চার্জ গঠনের দিন ভ্যানের মধ্যে থেকে সঞ্জয় রায় কিছু কথা বলেছিলেন। টিভি ক্যামেরায় রেকর্ড হওয়া সঞ্জয়ের সেই কথা থেকে প্রবল বিতর্ক শুরু হয়।
সঞ্জয় সেদিন দাবি করেছিল, তাকে ডিপার্টমেন্ট কথা বলতে বারণ করেছিল। এদিন তাই ভ্যানের কাছে কাউকে যেতে দেয়নি পুলিশ। আদালতকক্ষ থেকেও যারা মামলার সঙ্গে জড়িত নন, তাদের বের করে দেয়া হয়। রুদ্ধদ্বার কক্ষে শুনানি ও সক্ষ্যগ্রহণ হয়।
আদালতে আরজি করের নির্যাতিতার বাবা-মা আদালত কক্ষে ছিলেন। তারা সিবিআইয়ের গাড়িতে করে আসেন। প্রথম দিনেই তাদের সাক্ষ্য নেয়া হয়। মোট ১২৮ জনের সাক্ষ্য নেয়া হবে। তার জন্য সপ্তাহে চার থেকে পাঁচদিন ধরে এই মামলার শুনানি হতে পারে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে তারা আদালতকক্ষে ঢোকেন। প্রথমে বাবা ও তারপর মায়ের সাক্ষ্য দেয়ার কথা।
নির্যাতিতার বাবা-মা এতদিন ধরে বলে এসেছেন, শুধু সঞ্জয় রায় নয়, আরো মানুষ এই কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। প্রথম দিন তিন ঘণ্টা ধরে সাক্ষ্যগ্রহণপর্ব চলে। বিচারপর্ব শুরু হলো আন্দোলনকারীরা প্রথম থেকে দাবি করছিলেন, আরজি কর কাণ্ডের দ্রুত বিচার করতে হবে। এতদিনে সেই বিচার শুরু হলো।
আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগ ছিল, এই কাণ্ডের সঙ্গে একাধিক মানুষ জড়িত। কিন্তু সেই প্রশ্নের ফয়সালা এখনো হয়নি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত চার্জশিটে প্রধান অভিযুক্ত হলো সঞ্জয় রায়। এখন শিয়ালদহের আদালতে এই মামলার বিচার শুরু হলো।
এখানে মামলার রায় দেওয়ার পর উচ্চ আদালতে তার বিরুদ্ধে আবেদন হতে পারে। সাধারণত এই ধরনের মামলা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। রুদ্ধদ্বার আদালতকক্ষে বিচারকে বলা হয় ইন-ক্যামেরা বিচার। কোনো মামলার বিচার ইন ক্যামেরা হবে নাকি প্রকাশ্য আদালতে হবে তা ঠিক করার অধিকার আদালতের আছে। কোনো মামলা খুব সংবেদনশীল হলে গোপনীয়তার অধিকার ও সংশ্লিষ্ট পক্ষের মর্যাদা রক্ষার জন্য আদালত ইন ক্যামেরা বিচারের নির্দেশ দেয়। তখন সেখানে মিডিয়া বা বাইরের কেউ আদালতকক্ষে থাকতে পারেন না।
আরটিভি/এএইচ
মন্তব্য করুন