রিপোর্টের প্রতিবেদন
রাশিয়ার গভীরে মার্কিন রকেট হামলার অনুমতি ইউক্রেনকে
ইউক্রেন এবার মার্কিন দূরপাল্লার রকেট দিয়ে রাশিয়ার ভিতরে আক্রমণের অনুমতি পেয়েছে। এই দূরপাল্লার রকেট যখন ইউক্রেনের হাতে তুলে দেয় আমেরিকা, তখন শর্ত ছিল যুদ্ধক্ষেত্রে তা ব্যবহার করতে হবে। রাশিয়ার ভিতরে এই রকেট ব্যবহার করা যাবে না।
কিন্তু সূত্রকে উদ্ধৃত করে নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এখন রাশিয়ার ভিতরে এই রকেট হামলার অনুমতি দিয়েছে।
রাশিয়ার সাংসদ মারিয়া বুটিনা বলেছেন, এর ফলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকি বাড়ছে। তবে হোয়াইট হাউস এখনো বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
সূত্র জানিয়েছে, এই এটিএসিএমএস রকেট ৩০৬ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পারে। জানুয়ারিতেই ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন। তার আগে এই খবর সামনে এসেছে।
তিনি আগে দাবি করেছিলেন, দায়িত্ব নেয়ার আগেই তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করে দেবেন।
রাশিয়া জানিয়েছে, আমেরিকার রকেট যদি তাদের দেশের ভিতরে গিয়ে আঘাত করে, তাহলে যুদ্ধের তীব্রতা অনেকটাই বেড়ে যাবে। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকি বাড়ছে রাশিয়ার পার্লামেন্ট সদস্য মারিয়া বুটিনা সোমবার বলেছেন, জো বাইডেন প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকি বাড়ছে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেছেন, বাইডেন প্রশাসন উত্তেজনা সবচেয়ে বেশি বাড়াবার ব্যবস্থা করছে। তারা যতদিন ক্ষমতায় থাকবে, ততদিন এই উত্তেজনা বাড়াবার চেষ্টা করে যাবে।
বুটিনা জানিয়েছেন, আমি আশা করি, ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সিদ্ধান্ত বদল করবেন। কারণ, এই সিদ্ধান্ত নেয়া হলে পরিস্থিতি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে এগোবে, যার ফলে কারুরই লাভ হবে না।
রাশিয়ার সেনা ইউক্রেনের উত্তরপশ্চিমের শহর কুপিয়ানস্ক আবার দখল করতে চাইছে বলে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাশিয়ার সেনা কুপিয়ানস্কে ঢোকার চেষ্টা করছে বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে। ইউক্রেন জানিয়েছে, চারবার রাশিয়ার সেনা এই শহরে ঢোকার চেষ্টা করেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের রিপোর্ট অনুসারে, রাশিয়ার সেনা কুপিয়ানস্কের দক্ষিণে ওসকিল নদী পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়া এই শহরটি দখল করে। পরে ইউক্রেনের সেনা আবার তা দখল করে নেয়।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে গত শুক্রবার ফোনে কথা বলেছেন জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস। চ্যান্সেলর দাবি করেছেন, ইউক্রেন নিয়ে পুতিনের মনোভাবে কোনো পরিবর্তন হয়নি।
ব্রাজিলে জি২০ শীর্ষবৈঠকে যোগ দিতে গিয়ে শলৎস সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে তার বিস্তারিত কথা হয়েছে। কিন্তু তার মতের পরিবর্তন হয়নি। তিনি বলেছেন, এই যুদ্ধ তখনই বন্ধ হতে পারে, যখন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট তার সাম্রাজ্যবাদী উচ্চাশা থেকে সরে আসবেন।
শলৎস জানিয়েছেন, ইউক্রেনের প্রতি পশ্চিমা দেশের সমর্থন এবার কমে যাবে এই ভুল ধারণা ভাঙানো দরকার ছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্প আবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিচ্ছেন। এই সময় ট্রাম্পের পাশাপাশি পুতিনের সঙ্গেও কথা বলা দরকার।
পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টুস্ক বলেছেন, দুই বছরের মধ্যে প্রথমবার পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন শলৎস। তারপরেই ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করলো রাশিয়া। বোঝা যাচ্ছে, ইউক্রেনের সমর্থনের বিকল্প টেলিফোন-কূটনীতি হতে পারে না।
তার মতে আগামী কয়েক সপ্তাহ শুধু যুদ্ধের ক্ষেত্রে নয়, ভবিষ্যতের জন্যও খুব গুরুত্বপূর্ণ।
আরটিভি/এএইচ
মন্তব্য করুন