জি-টোয়েন্টির বিবৃতিকে স্বাগত জানালো কপ২৯
বৈশ্বিক উষ্ণতার জন্য দায়ী মোট কার্বন নির্গমনের তিন-চতুর্থাংশ করে জি-টোয়েন্টি দেশগুলো। তাই জলবায়ু অর্থায়ন বিষয়ে তাদের মতের দিকে তাকিয়ে ছিল আজারবাইজানের বাকুতে চলমান জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নেওয়া কর্তৃপক্ষগুলো।
এই অবস্থায় সোমবার (১৮ নভেম্বর) রাতে একটি বিবৃতি ইস্যু করেন জি-টোয়েন্টি দেশগুলোর নেতারা। একটি শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে তারা এখন ব্রাজিলে রয়েছেন। ওই সম্মেলনের প্রথম দিন ছিল সোমবার। সেখানে জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানান বিষয় নিয়ে তারা কথা বলেন।
এরপর রাতে প্রকাশ করা বিবৃতিতে জি-টোয়েন্টি নেতারা বলেন, তারা বাকুর সম্মেলনে জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছার বিষয়টি সমর্থন করছেন। এবারের জলবায়ু সম্মেলনের অন্যতম মূল লক্ষ্য, জলবায়ু অর্থায়ন বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছা।
বর্তমান চুক্তি অনুযায়ী, ধনী দেশগুলো বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। তবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো চায়, এই অর্থের পরিমাণ অনেক বেশি বাড়ানো হোক। তবে সপ্তাহ খানেক ধরে চলা জলবায়ু সম্মেলনে এই বিষয়ে আলোচনা স্থবির হয়ে রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন।
শুক্রবার সম্মেলনটি শেষ হবার কথা। জি-টোয়েন্টি নেতাদের বিবৃতিতে অর্থায়ন বিষয়ে ইতিবাচক সংকেত পাওয়া গেছে বলে মনে করছেন গ্রিনপিস-এর কর্মী জেস্পার ইনভেনটর। তবে সম্মেলনের বাকি দিনগুলোতে এই ইতিবাচক সংকেতকে একটি সুনির্দিষ্ট চুক্তিতে পরিণত করতে কাজ করতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
এদিকে, জি-টোয়েন্টির বিবৃতিতে জলবায়ু অর্থায়ন সব সূত্র থেকে আসতে হবে বলে যে মন্তব্য করা হয়েছে তাতে খুশি নন জি৭৭ চীন গ্রুপের চেয়ারম্যান আডোনিয়া আয়েবারে। তিনি বলেন, গরিব দেশগুলো অনুদান চায়, ঋণ নয়। উন্নয়নশীল দেশগুলোর গোষ্ঠী হচ্ছে জি৭৭ চীন। জি-টোয়েন্টি সম্মেলনে আর যা নিয়ে আলোচনা হলো জলবায়ু পরিবর্তন ছাড়াও ইউক্রেন, গাজা ও লেবাননের যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে সহায়তা করতে জি-টোয়েন্টির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে চীন ও ব্রাজিল। এই দেশ দুটি রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসতে ইউক্রেনকে চাপ দিচ্ছে।
এদিকে গাজা ও লেবাননে সর্বাঙ্গীণ যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন জি-টোয়েন্টি নেতারা। গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে জাতিসংঘে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব অনুসরণ করা উচিত বলে মনে করেন তারা। ওই প্রস্তাবে গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে হামাসকে সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী ক্ষুধার সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য একটি বৈশ্বিক জোট গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন জি-টোয়েন্টি সম্মেলনের আয়োজক দেশ ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা ডা সিলভা। তার এই উদ্যোগে ৮২টি দেশ যুক্ত হয়েছে। জি-টোয়েন্টির দেশগুলো হলো আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, ফ্রান্স, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি, মেক্সিকো, ইন্দোনেশিয়া, ইটালি, জাপান, ভারত, রাশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র।
আরটিভি/এএইচ/এস
মন্তব্য করুন