ভারতে এইচএমপিভি ভাইরাসের হানা, আক্রান্ত দুই শিশু
করোনাকাল পার হয়েছে পাঁচ বছর। এখনও বিশ্ববাসীর মনে দাগ কেটে আছে মহাদুর্যোগের সেই সময়কাল। এবার তেমনই আরেকটি মহাপ্রাদুর্ভাবের আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে এইচএমপিভি নামে এক ভাইরাস। চীন, মালয়েশিয়ার পর এবার দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারতেও হানা দিয়েছে ইনফ্লুয়েঞ্জা ধাঁচের এই ভাইরাসটি। দেশটির বেঙ্গালুরুতে তিন ও আট মাস বয়সি দুই শিশু এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
এতে বলা হয়, সোমবার সকালে বেঙ্গালুরুতে প্রথমে আট মাস বয়সি এক শিশুর শরীরে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) ভাইরাসের হদিস মেলে। পরে তিন মাসের এক শিশুর শরীরেও একই ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আক্রান্ত শিশু ও তাদের পরিবারের সাম্প্রতিককালে কোনো ভ্রমণের রেকর্ড নেই। দুই শিশুর শরীরে এইচএমপি ভাইরাসের যে স্ট্রেনের সংক্রমণ হয়েছে, সেটির সঙ্গে চীনের ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসের স্ট্রেনের কোনো যোগ রয়েছে কিনা, তা এখনও জানা যায়নি।
এদিকে, তিন মাস বয়সি শিশুকে ইতোমধ্যে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এবং আট মাস বয়সি শিশুকে বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
অন্যদিকে, পর পর দু’টি সংক্রমণের খবর প্রকাশ্যে আসতেই কর্নাটকের স্বাস্থ্যমন্ত্রী দীনেশ গুন্ডু রাও আজ দুপুরে একটি জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। তবে রাজ্যবাসীকে অযথা উদ্বিগ্ন না হওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন কর্নাটকের স্বাস্থ্যসচিব হর্ষ গুপ্তা।
এইচএমপিভি ভাইরাস চীন থেকে যাতে করোনার মতো ভারতে ছড়িয়ে না পড়ে, তাই আগে থেকেই সতর্ক অবস্থান নিয়েছে ভারত জানিয়ে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক অতুল গয়াল বলেন, শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত কোনো সমস্যা এখন থেকে ছোট করে দেখার উপায় নেই। এ ধরনের জটিলতা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
প্রসঙ্গত, এইচএমপিভি একটি সংক্রামক রোগ এবং যেভাবে এটি ছড়ায়, তার সঙ্গে সাদৃশ্য রয়েছে কোভিডের। বিজ্ঞানীরা বলছেন, কোভিডের মতোই হাঁচি, কাশি, আক্রান্ত রোগীর কাছাকাছি অবস্থান, করমর্দন এবং স্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায় এ রোগটি।
এইচএমপিভি ভাইরাসের কোনো ওষুধ বা টিকা নেই। চীনের যেসব হাসপাতালে এইচএমপিভি রোগীরা ভর্তি হয়েছেন, তাদের চিকিৎসায় নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ ব্যবহার না করে প্রচলিত ওষুধই দেওয়া হচ্ছে।
তবে, রোগটিকে প্রতিরোধ করা সম্ভব এবং এর প্রতিরোধের সঙ্গে করোনা বা কোভিডের প্রতিরোধ ব্যবস্থার সাদৃশ্যও রয়েছে। রোগটি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা যেসব পরামর্শ দিয়েছেন, সেগুলো হলো— নিয়মিত দিনে কয়েকবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, আক্রান্ত রোগীর কাছ থেকে নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং কোনো কিছু স্পর্শ করার পর হাত ভালোভাবে ধোয়া এবং শারীরিক অসুস্থতা বোধ করলে বাড়িতে অবস্থান করা।
আরটিভি/আইএম
মন্তব্য করুন