যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরও ইসরায়েলি হামলা, ৮০ ফিলিস্তিনি নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫ , ০৩:৫৬ এএম


যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরও ইসরায়েলি হামলা, ৮০ ফিলিস্তিনি নিহত
ছবি : সংগৃহীত

যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরও ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৮০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ২৩০ জন। হতাহতদের মধ্যে ২০ শিশু ও ২৫ নারী রয়েছেন বলে সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান ও বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। এর আগে বুধবার রাতে ফিলিস্তিনের গাজায় ১৫ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বন্ধে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চুক্তি হয়। কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিসরের মধ্যস্থতায় হওয়া চুক্তি আগামী রোববার থেকে কার্যকর হবে। তবে এরই মধ্যে হামলা বাড়িয়েছে ইসরায়েল। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, চুক্তির খবরে অনেক ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলের পরিবার উদযাপন করলেও গাজায় হামলা অব্যাহত আছে। বৃহস্পতিবার ড্রোন ও যুদ্ধবিমান দিয়ে ইসরায়েল ব্যাপক হামলা চালায়। হামলা হয়েছে নুসেইরাত ও বুরেইজ শরণার্থী শিবিরে, জাবালিয়া ও উত্তর গাজায়। চুক্তির বিষয় ঘোষণার পরপরই ইসরায়েল উত্তর গাজার শেখ রিদওয়ান আবাসিক এলাকায় হামলায় চালিয়ে ২০ জনকে হত্যা করে। 

বিজ্ঞাপন

এর আগে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা ও ২৫০ জনকে জিম্মি করে হামাস। পরে গাজায় হামলা শুরু হয়। এ পর্যন্ত তারা ৪৬ হাজার ৭৮৮ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। আহত হয়েছেন ১ লাখ ১০ হাজার ৪৫৩ জন। হতাহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার প্রায় সবাই বাস্তুচ্যুত। ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞে উপত্যকাটি কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এরই মধ্যে সেখানে খাবার, জ্বালানি, ওষুধের ভয়াবহ সংকট দেখা দিয়েছে। গাজার বাসিন্দারা তীব্র শীতের মধ্যে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। চলতি শীত মৌসুমে সেখানে ঠান্ডায় মৃত্যু হয়েছে অনেক শিশুর।

প্রসঙ্গত, চুক্তির বিস্তারিত আসতে শুরু করেছে। তিন ধাপে এ চুক্তি বাস্তবায়ন হবে। প্রথম ধাপে ছয় সপ্তাহ ধরে চলবে যুদ্ধবিরতি। এ সময় হামাস তাদের হাতে থাকা ৩৩ জিম্মিকে মুক্ত করবে। ইসরায়েল তাদের কারাগারে আটকে রাখা নারী-শিশুসহ কয়েকশ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে। ইসরায়েলের একজন জিম্মির বিনিময়ে মুক্ত হবেন ৫০ ফিলিস্তিনি। যাদের মুক্ত করা হবে, তাদের মধ্যে ৩০ জন দোষী সাব্যস্ত হয়ে ইসরায়েলের কারাগারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন। প্রথম ধাপে গাজায় ত্রাণ ও জ্বালানিবাহী গাড়ি প্রবেশ করবে। দ্বিতীয় ধাপে ইসরায়েলের সব জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। মুক্তি পাবেন হামাসের হাতে আটক থাকা ইসরায়েলের সেনাসদস্যরাও। এ ধাপে গাজা উপত্যকা থেকে সব সেনা সরিয়ে নেবে ইসরায়েল। পাশাপাশি স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধে দু’পক্ষ আলোচনায় বসবে। 

তৃতীয় ধাপ নিয়ে কিছুটা অস্পষ্টতা রয়েছে। এ ধাপে বন্দি অবস্থায় মৃতদের দেহ হস্তান্তরের বিষয় থাকতে পারে। এ ছাড়া গাজার প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ কারা করবে এবং পুনর্গঠন পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। যুদ্ধবিরতি শুরুর পর গাজা কাদের মাধ্যমে পরিচালিত হবে, তা নিয়ে কোনো সমঝোতা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র চাচ্ছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের হাতে শাসনভার দিতে। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও ইসরায়েল একেবারে হামলা চালাবে না– এমন নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারছেন না। কারণ, লেবাননে যুদ্ধবিরতি ভেঙে তারা হামলা চালিয়েছে। 

বিজ্ঞাপন

আরটিভি/কেএইচ

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission