• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩১
logo

আনন্দ ও বেদনার মধ্যে ফিলিস্তিনিদের উত্তর গাজায় ফেরা

ডয়চে ভেলে

  ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:১০
আনন্দ ও বেদনার মধ্যে ফিলিস্তিনিদের উত্তর গাজায় ফেরা
ছবি: সংগৃহীত

যুদ্ধবিরতির পর উত্তর গাজায় তাদের বাড়িতে ফিরছেন ফিলিস্তিনিরা। ফেরার পর দেখছেন, বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে।

মাহমুদ আয়ুব মধ্য গাজায় নুসেইরত ত্রাণশিবিরে তার কম্বল ও পোশাক গুছিয়ে নিতে ব্যস্ত ছিলেন। অন্য অনেক ফিলিস্তিনির মতো এই ৩৩ বছর বয়সি শ্রমিক তার পরিবারকে নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে এখানে থেকেছেন। তিনি বললেন, আমার এটা ভেবেই আনন্দ লাগছে যে, ১৬ মাস পর আবার আমি উত্তর গাজায় যেতে পারব।

আয়ুব তার তিন সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে সোমবার গাজা শহরের শেখ রাদোয়ানে ফেরার তোরজোড় করছিলেন। আশপাশের তাঁবুতেও একই প্রস্তুতি চলছিল। মানুষ তাঁবু গুটিয়ে সেগুলি ভাঁজ করে রাখছিলেন। কয়েকজন অবশ্য এখনও কয়েকদিন অপেক্ষা করে দেখতে চান, পরিস্থিতি কী দাঁড়ায়। যুদ্ধবিরতির ফলে তারা নিঃসন্দেহে আনন্দিত, কিন্তু তাদের উদ্বেগ এখনও যায়নি।

আয়ুব জানালেন, উত্তর গাজায় আমার অনেক বন্ধুকে ফোন করে জানতে চেয়েছি, সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে। আমরা এখনও বুঝতে পারছি না, সেখানে গিয়ে থাকতে পারব কিনা। তবে আমরা তারপরেও সেখানে যাব বলে ঠিক করেছি। যদি বাড়িতে থাকতে না পারি, তাহলে তার পাশে তাঁবুতে থাকব।

তিনি আরও বলেন, সমুদ্রের পাশ দিয়ে সাত কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে ফিরতে হবে। জানি না, বাচ্চাদের কাছে তা কতটা কঠিন হবে।

ফিরতে দেরি হলো

রোববার হাজার হাজার ফিলিস্তিনি উত্তর গাজায় ফেরার জন্য রশিদ স্ট্রিটে অপেক্ষা করছিলেন। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির ফলে তারা পায়ে হেঁটে ফেরার অনুমতি পেয়েছেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে ঢুকে আক্রমণ করার পর যুদ্ধ শুরু হয়। কিন্তু রোববার ইসরায়েল অভিযোগ করে, হামাস চুক্তির শর্ত মেনে অ্যারবেল ইয়েহুদকে মুক্তি দেয়নি। ইয়েহুদ ও তার বন্ধুকে বন্দি করে নিয়ে গিয়েছিল ইসলামিক জেহাদ। তার ভাই মারা যায়।

পরে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার জানায়, সমঝোতা হয়ে গেছে, ইয়েহুদ ও আরও দুইজনকে মুক্তি দেওয়া হবে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর অফিসও এই বক্তব্য সমর্থন করে। শনিবার তাদের মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। বিনিময়ে ইসরায়েলও তাদের জেলে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দেবে বলে ঠিক ছিল।

তারপরই ইসরায়েল উত্তর গাজায় ফিলিস্তিনিদের ফিরতে দেবে বলে জানিয়েছিল। সোমবার সকালে কয়েক হাজার মানুষ পায়ে হেঁটে উত্তর গাজায় ফিরলেন। তাদের নিরাপত্তারক্ষীরা পরীক্ষা করে দেখলেন। অনেকে শনিবার থেকে অপেক্ষা করছিলেন, তারা প্রথমে ফিরলেন।

এরকমই একজন ফিলিস্তিনি রাইজেক আয়ুব তার ৫৭ জন আত্মীয়কে নিয়ে গাজা শহরে প্রবেশ করার আগে জানালেন, গত দুই দিন ধরে খোলা আকাশের তলায় অপেক্ষা করছি। ফিরে গিয়ে দেখতে চাই, ঘরবাড়ির কী অবস্থা হয়েছে, কিছু বাকি আছে কিনা!

আনন্দ ও বেদনার কাহিনি

তারপরেও অনেকের মনে আনন্দ ছিল, ঘরে ফেরার আনন্দ। আমানি জাহদ জানিয়েছেন, ভয়ংকর দৃশ্য। এত মানুষ রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন। এত কষ্টের পরেও তারা আনন্দিত। আমার মনে হয়, ভবিষ্যৎ ভালো হবে।

অন্যরা মনে করছেন, তাদের এই ঘরে ফেরাটা বেদনার হবে, তারা সবকিছু হারিয়েছেন। স্থানীয় এনডিও-র কর্মী তামের আল-ফারানি জানিয়েছেন, তার আশা, শেষপর্যন্ত তিনি মৃত আত্মীয়দের কবরস্থ করতে পারবেন। তাদের দেহ এখনও বোমার আঘাতে ভেঙে পড়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপেই রয়েছে।

আরটিভি/আরএ

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
আরও ১১০ ফিলিস্তিনি মুক্তি পাচ্ছেন আজ
গাজায় ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে আরও অর্ধশতাধিক লাশ উদ্ধার
ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্দোলনকারীদের ফেরত পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র
লেবাননে যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ইসরায়েলি বিমান হামলা, আহত ২৪