নির্বাচনের অজুহাতে জরুরি অবস্থা আরও ৬ মাস বাড়াল জান্তা সরকার
মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা আরও ছয়মাস বর্ধিত করেছে ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার। রাজনৈতিক নেতাদের কারাবন্দি করে সেনাবাহিনীর ক্ষমতায় বসার চার বছর পূর্ণ হতে যাওয়ার আগের দিন শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এমআরটিভি তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে এ ব্যাপারে জানিয়েছে, অবাধ ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন আয়োজন করতে দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা দরকার। সাধারণ নির্বাচন সফলভাবে আয়োজন করতে এখনও অনেক কাজ বাকি আছে।
অং সান সুচির বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকেই গৃহযুদ্ধে নিমজ্জিত হয়ে আছে দেশটি। চলতি বছর সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করার ঘোষণা দিয়েছে জান্তা সরকার। অবশ্য সমালোচকদের ধারণা, পুতুল নেতা সামনে বসিয়ে পেছন থেকে কলকাঠি নাড়বেন সামরিক জেনারেলরা।
নির্বাচনের নির্দিষ্ট দিনক্ষণ এখনও ঘোষণা করা হয়নি। তবে, নিজেদের পরিকল্পনামাফিক সামনে আগানোর চেষ্টা করছে সেনাবাহিনী। যদিও দেশের বিভিন্ন ফ্রন্টে সশস্ত্র বিদ্রোহীদের সামাল দিতেই হিমশিম খাচ্ছে সামরিক সরকার।
চার বছরের যুদ্ধে মিয়ানমারে প্রায় ত্রিশ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়েছেন বলে জাতিসংঘের এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে। সংস্থাটি বলছে, মিয়ানমারব্যাপী মারাত্মক খাদ্য সংকট ছড়িয়ে পড়েছে এবং এক তৃতীয়াংশ জনগণের ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজন। এই অবস্থায় যে কোনও মূল্যে যুদ্ধ জেতার মানসিকতা ত্যাগ করে সব পক্ষকে আলোচনার টেবিলে বসায় আহ্বান জানিয়েছেন মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এমআরটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুদ্ধে ছারখার দেশে প্রায় পঙ্গু অর্থনীতি নিয়েই দেশে নির্বাচন আয়োজন করতে বদ্ধপরিকর জান্তা সরকার। অথচ মিয়ানমারের ডজনখানেক রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে আর বাকিরা সেনা নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনে অংশ নিতে আপত্তি জানিয়েছে। জান্তা বিরোধীরা নির্বাচন বানচাল করার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যে, ভোটে যেই জিতুক, তাকে যেন স্বীকৃতি দেওয়া না হয়, কেননা তাদের পেছনে কোনও জনসমর্থন থাকবে না।
আরটিভি/এসএইচএম-টি
মন্তব্য করুন