কৃত্রিম পা পাওয়ার খুশিতে আফগান শিশুর নাচ ভাইরাল
আফগানিস্তানের পাঁচ বছর বয়সী সাঈদ রেহমান জানে না প্রাণের উচ্ছ্বাস শব্দের অর্থ, কিন্তু এই উচ্ছ্বাস শব্দটিই গত কয়েকদিন ধরে তাকে বর্ণনা করতে ব্যবহৃত হচ্ছে। কারণ কৃত্রিম পায়ে হাঁটতে পারার খুশি তাকে নেচে নেচে প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
মঙ্গলবার কাবুল কৃত্রিম ক্লিনিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সংবাদপত্র দ্য ন্যাশনালের সঙ্গে কথা বলার সময় শিশুটি জানায়, আমি নাচতে ভালোবাসি এবং আমার নতুন পা পেয়ে খুব খুশি। আপনি কি আমার নাচ দেখতে চান?
ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেডক্রস অর্থোপেডিক সেন্টারে ধারণ করা সাঈদ রেহমানের উচ্ছ্বসিত নাচের একটি ভিডিও সোমবার প্রকাশিত হওয়ার পর ভাইরাল হয়ে যায়। তবে এর আগে তাকে একটি সহিংস অতীত পার করতে হয়েছে।
যখন সাঈদ রেহমানের বয়স আট মাস ছিল, তখন আফগান রাজধানী থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে নিজের প্রদেশ লোগারে সরকারি বাহিনী এবং বিদ্রোহীদের বন্দুকযুদ্ধে তার ডান পা মারাত্মকভাবে জখম হয়।
সাঈদ রেহমানের মা রায়েসা গণমাধ্যমটিকে বলেন, আমরা আফগান বাহিনী এবং তালেবান যোদ্ধাদের বন্দুকযুদ্ধের শিকার হই। রেহমান এবং তার বোন গুলিবিদ্ধ হয়। আমার মেয়ের কিডনি এবং দুই পা এবং রেহমানের ডান পা মারাত্মকভাবে জখম হয়।
বেশিরভাগ আফগানের মতো একটি নামের অধিকারী রায়েসা এই হামলায় তার ভাই এবং ভাইপোকেও হারিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা দ্রুত আহতদেরকে প্রাদেশিক কেন্দ্রের ইমার্জেন্সি ক্লিনিকে নিয়ে যাই। রেহমানের জখম এতোটাই মারাত্মক ছিল যে তাকে দেড় মাস হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয়।
এরপর খুব দ্রুতই তার পা কেটে ফেলা হয়।
এই বছরগুলো পার করা রায়েসার জন্য খুব কঠিন ছিল। তার অসুস্থ স্বামী অক্ষম হয়ে যাওয়ার পর থেকে তিনি পরিবারকে সাহায্য করতে একটি খামারে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন।
রায়েসা বলেন, আমি তাকে প্রতিদিন আমার কোলে করে ক্লিনিকে নিয়ে যেতাম। আমি খামারে কাজের পাশাপাশি তাকে তার দেখাশোনা করতাম। আমাদের খোঁজ নেয়ার কেউ ছিল না। আমি মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছিলাম।
অনেক আফগানের মতো সাঈদ রেহমানের খুশির নাচ যেন আফগানিস্তানের সাহসের প্রতিমূর্তি: ট্র্যাজেডির মুখে প্রাণের উচ্ছ্বাস।
কে/এমকে
মন্তব্য করুন