• ঢাকা বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
logo

আইসল্যান্ডে ১০ বছর পরও অক্ষত ম্যাকডোনাল্ডসের বার্গার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

  ০৫ নভেম্বর ২০১৯, ১৫:২৫
McDonald's burgers intact after 10 years in Iceland
ছবি সংগৃহীত

২০০৯ সালে যখন আইসল্যান্ডে ম্যাকডোনাল্ডস তাদের সব রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দিচ্ছিল, তখন এক ব্যক্তি সিদ্ধান্ত নেন যে, রেস্টুরেন্টটি থেকে তিনি তার শেষ হ্যামবার্গার এবং ফ্রাইস কিনবেন।

জরটের স্মারাসন নামের ওই ব্যক্তি বার্তা সংস্থা এএফপি বলেন, আমি শুনেছিলাম যে ম্যাকডোনাল্ডসের খাবার কখনও পচে যায় না। সেটি সত্যি কিনা তা দেখতেই আমি এই সিদ্ধান্ত নেই। খবর বিবিসি বাংলার।

চলতি সপ্তাহে, এই খাবারটি কেনার ১০ বছর হচ্ছে। আর এতো দিন পরেও এটিকে দেখে মনে হচ্ছে যে হয়তো গতকাল কেনা হয়েছিল।

আগ্রহীরা এই বার্গার এবং ফ্রাইস যেখানে রাখা হয়েছে সেই স্নোটরা হাউস থেকে এর সরাসরি সম্প্রচার দেখতে পারবেন। সাউদার্ন আইসল্যান্ডের স্নোটরা হাউস মূলত একটি হোস্টেল যেখানে কাঁচের একটি বাক্সে রাখা হয়েছে বার্গার ও ফ্রাইসগুলো।

হোস্টেলটির মালিক সিগি সিগারডার বিবিসিকে বলেন, এই পুরনো জিনিসটি এখনও এখানেই রয়েছে, বেশ বহাল তবিয়তেই। আর এটি বেশ ভালোই দেখাচ্ছে।

তিনি বলেন, এটা অবশ্যই একটি মজার ব্যাপার। তবে সঙ্গে সঙ্গে এটা প্রশ্ন তুলছে যে খাবার হিসেবে আপনি আসলে কি খাচ্ছেন। এখানে কোনও পচে যাওয়ার মতো কিছু নেই। শুধু ওই মলিন কাগজের মোড়কটি ছাড়া বাকি সব কিছুই বেশ তাজা দেখাচ্ছে।

হোস্টেলটি দাবি করেছে যে, বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে লোকজন এটাকে দেখতে আসছে এবং প্রতিদিন এ সম্পর্কিত ওয়েবসাইটটিতে কমপক্ষে চার লাখ হিট পড়ে।

এই সময়ের মধ্যে ওই বার্গার আর ফ্রাইগুলো অনেকবার জায়গা পরিবর্তন করেছে।

স্মারাসন যখন পরীক্ষা করে দেখতে চেয়েছিলেন যে, এগুলো কত তাড়াতাড়ি পচে নষ্ট হয়, তখন তিনি একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে করে এগুলো নিজের গ্যারেজে কয়েক দিন রেখেছিলেন। কিন্তু তিন বছর পরও যখন তিনি এই বার্গারে তেমন কোনও পরিবর্তন দেখতে পাননি, তখন তিনি এই খাবারগুলো আইসল্যান্ডের জাতীয় জাদুঘরে দান করেন।

স্নোটরা হাউস বলছে, জাদুঘর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে- খাবার সংরক্ষণ করার মতো কোনও ব্যবস্থা তাদের নেই এবং এ কারণে তারা খাবারটিকে তার আসল মালিকের কাছে আবার ফেরত দেয়।

স্মারাসন বলেন, আমার মনে হয় যে, তারা ভুল করেছিল কারণ এই হ্যামবার্গারটি নিজেই নিজেকে সংরক্ষণ করে। রিকজাভিকের আরেকটি হোস্টেলে কয়েক দিন থাকার পর বার্গার ও ফ্রাইসগুলোতে বর্তমান জায়গায় স্থানান্তর করা হয়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি প্রকাশের পর আরও অনেক খাবারের নাম আসতে থাকে যেগুলো আসলে সময়কে হার মানিয়ে টিকে থেকেছে।

এক টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, হাইস্কুলে আমাদের স্বাস্থ্য বিষয়ক শিক্ষকও এমনটাই করেছিলেন, কিন্তু তিনি একটি শেলফের ওপর এগুলো রেখে দিয়েছিলেন। তার আসলে বের করা উচিত ছিল যে এতো বছর পরও কেন এগুলো পচে যায়নি, কারণ আপাতদৃষ্টিতে দেখলে মনে হয় যে, এগুলোতে অণুজীবদের জন্যও পুষ্টিকর কিছু ছিল না।

ম্যাকডোনাল্ডসের খাবার নিয়ে এমন পরীক্ষাকারী প্রথম ব্যক্তি নন স্মারাসন। ১৯৯৬ সালে একটি হ্যামবার্গার কিনেছিলেন ক্যারেন হানরাহান। এর ১৪ বছর পর তিনি দাবি করেন যে, যেদিন কিনেছিলেন সেদিনের তুলনায় খুব বেশি পরিবর্তিত হয়নি তার বার্গারটি।

২০১০ সালে নিউ ইয়র্কের ফটোগ্রাফার সেলি ডেভিস একটি হ্যাপি মিল কেনেন এবং টানা ছয় মাস ধরে প্রতিদিন একটি করে ছবি তোলেন। তিনি দাবি করেন যে, তার ওই খাবারটি পচেনি, কোনও ধরনের দুর্গন্ধ হয়নি, পোকা হয়নি বা নষ্ট হওয়ার কোনও ধরনের বৈশিষ্ট্য এতে দেখা যায়নি।

বিভিন্ন রেস্টুরেন্টের খাবার বিশেষ করে বার্গার এবং ফ্রাইস কীভাবে পচে তার একটু তুলনামূলক ভিডিও ইউটিউবে ৮০ লাখ বার দেখা হয়েছে।

২০১৩ সালে ম্যাকডোনাল্ডস মন্তব্য করে যে, ‘উপযুক্ত পরিবেশে, অন্যান্য খাবারের মতো আমাদের বার্গারও পচে যায়’, কিন্তু পরিবেশে যদি ওই পরিমাণ আদ্রতা না থাকে তাহলে ‘এগুলো বর্জ্যে পরিণত হওয়া, ব্যাকটেরিয়া জন্মানো বা পচবে না।’

ইউনিভার্সিটি অব আইসল্যান্ডের খাদ্য বিজ্ঞান বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক হয় বিয়র্ন আড্যাল্বজর্নসন এই মন্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। তিনি এএফপি’কে বলেন যে, আদ্রতা না থাকলে ‘খাদ্য শুকিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কিছুই হবে না।’

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
খালেদা জিয়ার ১০ বছরের সাজা স্থগিত
বিশ্বের সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ ১০ দেশ
১০ বছর পর খালাস পেলেন বিএনপি নেতা
আ.লীগকে অন্তত ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করার দাবি নুরের