তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি আরবের কনস্যুলেট ভবনে দেশটির সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার মামলা থেকে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সহকারীরা খালাস পেয়েছেন।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায় ইরানের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম প্রেস টিভি।
রিয়াদের অপরাধ আদালত এদিন খাশোগি হত্যা মামলায় পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড, তিনজনকে মোট ২৪ বছরের কারাদণ্ড এবং তিনজনকে খালাস দিয়েছেন।
খালাস পাওয়া অভিযুক্তদের মধ্যে আছেন সৌদ আল-কাহতানিসহ সৌদি যুবরাজের দুই শীর্ষ সহকারী। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত হয়েছিল।
সৌদি সরকারি আইনজীবী শালান আল-শালান মামলার রায় পড়ার সময় জানান, খাশোগিকে হত্যায় সরাসরি অংশগ্রহণের জন্য পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে এই হত্যার ঘটনা চাপা দেয়ার এবং আইন লঙ্ঘনের জন্য তিনজনকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সৌদি আইনজীবীরা জানান, গোয়েন্দা সংস্থার উপপ্রধান আহমেদ আল-আসিরি এই হত্যাকাণ্ডের তদারক করেন। আর তাকে এক্ষেত্রে পরামর্শ দেন কাহতানি।
এই দুজনকে তাদের পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আসিরিকে বিচারের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু কাহতানিকে বিচারের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
এমনকি কাহতানির বিরুদ্ধে তদন্ত হয় কিন্তু যথেষ্ট প্রয়োজনের অভাবে তাকে অভিযুক্ত করা হয়নি। আসিরির বিরুদ্ধেও তদন্ত হয় এবং তিনি অভিযুক্ত হন।
কিন্তু শেষপর্যন্ত তিনি খালাস পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন এই আইনজীবী। তিনি বলেন, এই হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত নয় বলে মনে হয়েছে আমাদের।
যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট খাশোগি গত বছরের ২ অক্টোবর বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহের জন্য সৌদি কনস্যুলেটে ঢোকার পর নিহত হন।
গত নভেম্বরে গণমাধ্যমটি জানায়, সৌদি যুবরাজের নির্দেশে তাকে হত্যা করা হয় বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (সিআইএ)।
রিয়াদ প্রথমে দাবি করে, সৌদি রয়্যাল কোর্টের সাবেক আইনজীবী খাশোগি ২ অক্টোবর কনস্যুলেটটি থেকে বেরিয়ে যান। এই হত্যায় মোহাম্মদ বিন সালমানের জড়িত থাকার কথাও অস্বীকার করে রিয়াদ।
সৌদি আরবের পক্ষ থেকে বলা হয়, একদল দুর্বৃত্ত এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। দেশটি ১১ জন সন্দেহভাজনকে অভিযুক্ত করে গোপনে বিচার শুরু করে।
জাতিসংঘ চলতি বছরের শুরুতে সৌদি আরবের এই বিচারের কঠোর সমালোচনা করে এবং এর স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
ইউএন হিউম্যান রাইটস অফিসের নারী মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি এই হত্যাকাণ্ডের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত আহ্বান করেন। এছাড়া তিনি এই তদন্তে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জড়িত হওয়ার আহ্বান জানান।
কে/এসএস