জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলা ঘিরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা প্রায় যুদ্ধের রূপ ধারণ করে ফেলেছে ইতোমধ্যে। দুই সপ্তাহ ধরে চলা হুমকি-ধমকির পর গত ৬ মে মধ্যরাতে বাস্তবিকই পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরসহ আশেপাশের কয়েকটি স্থানে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে দিয়েছে ভারত। এ হামলার কঠিন জবাব দিতে উঠেপড়ে লেগেছে পাকিস্তানও।
দুদেশ থেকেই ভেসে আসছে পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার খবর। এতে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে উভয় দেশ; বিশেষ করে আগে থেকেই অর্থনৈতিকভাবে পর্যুদস্ত পাকিস্তানের অর্থনীতি আরও শোচনীয় অবস্থার দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেকেই।
এমন অবস্থায় পাকিস্তানকে এক বিলিয়ন ডলার অর্থছাড়ের অনুমোদন দিয়ে ফেলেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী বোর্ড, যা যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বড় এক সুসংবাদই হয়ে এসেছে দেশটির জন্য।
শুক্রবার (০৯ মে) জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী বোর্ড পাকিস্তানের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ বিতরণের অনুমোদন দিয়েছে। এই অর্থ চলমান এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি (ইএফএফ) প্রোগ্রামের আওতায় পাকিস্তানকে প্রদান করা হবে। ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত বোর্ডের বৈঠকে পাকিস্তানের কর্মক্ষমতা মানদণ্ড সংশোধন এবং রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ)-এর আওতায় নতুন ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
আইএমএফ এবং ইসলামাবাদের মধ্যে গত মার্চে ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ সুবিধার প্রথম পর্যালোচনা নিয়ে একটি স্টাফ-লেভেল চুক্তি (এসএলএ) হয়েছিল। ২৮ মাসের এই চুক্তি পাকিস্তানকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সহায়তা করবে বলে জানিয়েছিল আইএমএফ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে পাকিস্তানে মুদ্রাস্ফীতির হার ৫ দশমিক ১ শতাংশ এবং ২০২৬ সালে ৭ দশমিক ৭ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আইএমএফ। ২০২৪ সালে দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি ছিল ২৩ দশমিক ৪ শতাংশ। অন্যদিকে, পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ পর্যন্ত উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা দেশের জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত।
আইএমএফের পূর্বাভাস অনুযায়ী, পাকিস্তানের চলতি হিসাব ঘাটতি জিডিপির ০.১ শতাংশ (প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার) হবে। এটি যা আগের ১ শতাংশ (৩ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার) পূর্বাভাসের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে কম।
এছাড়া পাকিস্তানে বেকারত্বের হার কমার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। পূর্বাভাস অনুসারে, ২০২৫ সালে বেকারত্বের হার ৮ শতাংশ এবং ২০২৬ সালে আরও কমে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ হতে পারে। ২০২৪ সালে এ হার ছিল আট দশমিক তিন শতাংশ।
আরটিভি/এসএইচএম